রবিবার, ৩ জুলাই, ২০১৬ ০০:০০ টা

মাহে রমজানের মর্যাদাপূর্ণ রাত

মাওলানা মুহম্মাদ সাহেব আলী

পবিত্র লাইলাতুল কদর এক মহিমান্বিত রাত। আরবি লাইলাতুল শব্দের অর্থ রাত বা রজনী। কদর শব্দের আরবি আভিধানিক অর্থ সম্মান, মর্যাদাবান, ভাগ্য গণনা-নির্ধারণ ইত্যাদি।

মহানবী হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মহিমান্বিত রজনী বা লাইলাতুল কদর তালাশ করার জন্য সম্ভাব্য যে পাঁচটি বেজোড় রাতের উল্লেখ করেছেন তার মধ্যে ২১, ২৩, ২৫ এবং ২৭, রমজানের রাত ইতিমধ্যে অতিক্রান্ত হয়েছে। বাকি আছে আগামীকাল ২৯ রমজানের রাত।

লাইলাতুল কদর এমন একটি রজনী যা হাজার মাসের ইবাদতের চেয়েও উত্তম এবং প্রত্যেক কদরপ্রাপ্ত ব্যক্তি সদ্যপ্রসূত শিশুর মতো নিষ্পাপরূপে পরিগণিত হন। এ প্রসঙ্গে পবিত্র কোরআনে আল্লাহতায়ালা ‘কদর’ নামে একটি সূরা অবতীর্ণ করেছেন, যেখানে বলা হয়েছে ‘নিশ্চয় আমি এটি (আল কোরআন) নাজিল করেছি এক মর্যাদাপূর্ণ রাতে। তুমি কি জানো সেই মর্যাদাপূর্ণ রাতটি কি? এই মহিমান্বিত রজনীটি হাজার মাস থেকেও উত্তম। এই রাতে ফেরেশতারা ও রুহ অর্থাৎ জিব্রাইল (আ.) তাদের মালিকের সব ধরনের আদেশ নিয়ে (জমিনে) অবতরণ করেন। আর (তারা) শান্তি, (বর্ষণ করতে থাকে) যা ফজর পর্যন্ত অব্যাহত থাকে। কদরের রাত এতটাই মর্যাদাপূর্ণ যে, এ রাতে আল কোরআন নাজিল হয়েছে। যয়নাব বিনতে উম্মে সালমা (রা.) বলেন, রমজানের যখন ১০ দিন বাকি থাকত তখন নবী করিম (সা.)-এর পরিবারের যারা সালাতে দাঁড়াতে সক্ষম তাদের তাঁকে তিনি সালাতে না দাঁড় করিয়ে ছাড়তেন না (তিরমিজি, ফতহুল বারী)। মহানবী (সা.) রমজানের শেষ দশকে সারা বছরের তুলনায় অনেক বেশি ইবাদত করতেন এবং প্রায় রাতভর নিজে ইবাদতের মধ্যে কাটাতেন ও পরিবারবর্গকেও নামাজে দাঁড় করাতেন। বায়হাকির বর্ণনা দ্বারা জানা যায় যে, দাঁড়িয়ে ও বসে জিকিররত মুমিন বান্দাকে এ রাতে জিব্রাইল (আ.) সালাম দেন এবং ফেরেশতারা মুমিনদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেন। আয়েশা (রা.) বলেন, একদা আমি বললাম, হে আল্লাহর রসুল (সা.) আমি যদি জানতে পারি যে, কোন রাতটা কদরের; তাহলে ওই রাতে আমি কী বলব? তিনি বললেন, এ দোয়া বলবে, আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুওউন তুহিব্বুল ‘আফওয়া ফাআফু আন্নী। ‘হে আল্লাহ! তুমি ক্ষমাময়। তুমি ক্ষমা কর, ভালোবাস।  অতএব, আমাকে ক্ষমা কর’ (আহমাদ, ইবনে মাজাহ, তিরমিজি, মিশকাত, নাসায়ী, বাইহাকি)।

লেখক : ইসলামী গবেষক।

সর্বশেষ খবর