সোমবার, ৪ জুলাই, ২০১৬ ০০:০০ টা
ধর্মতত্ত্ব

পরামর্শ করে কাজ করা ইসলামের শিক্ষা

মহিউস সুন্নাহ মাহমূদুল হাসান

ইসলামের শিক্ষা হলো— তুমি যে কোনো কাজ আল্লাহর ওলিদের সঙ্গে পরামর্শ করে করবে।  প্রথমে যে তোমার বড় তার কাছে যাও। বড় না থাকলে তোমার সমবয়সীদের কাছে যাও। যদি তা-ও পাওয়া না যায় তাহলে যে তোমার চেয়ে ছোট কিন্তু ছালেহ, আল্লাহর ওলি, তার কাছে যাও।  এটাই হলো তোমার ইমান ও আমলের মধ্যে পরিপূর্ণতা আনয়নের উপায়। যারা আল্লাহওয়ালাদের সঙ্গে থাকে কমপক্ষে তাদের তিন ধরনের লাভ হয়। ১. যেটুকু ইমান বর্তমানে বিদ্যমান রয়েছে তা কমবে না। সাদেকিনদের সঙ্গে যদি সম্পর্ক যোগাযোগ না থাকে তাহলে ইমান কমতে কমতে একদম শূন্যের কোঠায় চলে আসার সম্ভাবনা থাকে। তাই যাতে ইমানহারা না হতে হয় সে জন্য অন্তত নেক্কারদের সোহবতে থাকা উচিত। ২. অপরিপূর্ণতা পরিপূর্ণ হবে। ৩. পরিপূর্ণতা স্থায়ী হবে এবং ইমানের স্বাদ অনুভূত হবে।

হজরত হানজালা (রা.) শহীদ হওয়ার পর আল্লাহর ফেরেশতারা তাকে আসমানে নিয়ে গোসল দিয়েছিলেন। কী এমন নেকির কাজ করেছিলেন যে, আল্লাহর কাছে তিনি এত প্রিয় ছিলেন? তার স্ত্রী যখন জানতে পারলেন যে, হানজালা (রা.) শহীদ হয়েছেন, তখন রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে এসে বলল, আমার স্বামীর ব্যাপারে একটা কথা আছে, যা মানুষের সামনে বলা যাবে না। মাত্র বিয়ে হয়েছে আমার। স্বামী-স্ত্রী মিলনরত। এখনো তিনি মিলন সমাপ্ত করতে পারেননি, এমন সময় কানে ডাক এলো, যারা জিহাদে যাবে এবং শহীদ হবে তারা সরাসরি জান্নাতে যাবে; তখন সে এই অবস্থায় উঠে দৌড় দিল। আমি তাকে পেছন থেকে ডাকলাম, তুমি কোথায় যাচ্ছে? মাত্র আজ আমাদের বিয়ে হলো। এভাবে কোথায় চলে যাচ্ছ তুমি? তোমার সঙ্গে কোথায় দেখা হবে? হানজালা (রা.) বললেন, দেখা হবে হাশরের ময়দানে। অতএব, ইয়া রসুলুল্লাহ! আমার স্বামীকে যেন গোসল করিয়ে দাফন দেওয়া হয়। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ব্যাকুল হয়ে যুদ্ধের ময়দানে হানজালা (রা.)-এর মৃতদেহ তালাশ করতে লাগলেন। কিন্তু কোথাও পাওয়া যাচ্ছে না। গেল কোথায়? কে নিল? ওহির মাধ্যমে আল্লাহতায়ালা নবীকে জানালেন যে, হানজালার লাশটি ফেরেশতারা আকাশে তুলে নিয়ে গোসল দিয়েছে।

এমনই হয় মহান আল্লাহর মহাপ্রতিদান। হানজালা (রা.) নিজের জীবন কোরবান করে, স্ত্রীকে ত্যাগ করে নবীর যুদ্ধের ডাকে সাড়া দিয়ে চলে গেলেন।  কত বড় মজবুত ইমানের অধিকারী তিনি ছিলেন! তাই আমাদের এ সাহাবি থেকে শিক্ষা নেওয়া উচিত।

লেখক : খতিব, গুলশান সেন্ট্রাল জামে মসজিদ।

সর্বশেষ খবর