সোমবার, ১১ জুলাই, ২০১৬ ০০:০০ টা

নিখোঁজদের খোঁজে সক্রিয়তা

কুম্ভকর্ণের ঘুম ভাঙা সুখবরই বটে

নিখোঁজ যুবকদের খোঁজে দেরিতে হলেও সক্রিয় হয়ে উঠেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এ ব্যাপারে তাদের কুম্ভকর্ণের ঘুম ভাঙার বিষয়টি অবশ্যই একটি সুখবর। গত তিন বছরে হঠাৎ করে বাড়ি থেকে উধাও হয়ে যাওয়া যুবকদের এক অংশ জঙ্গি সংগঠনের হয়ে কাজ করছে বলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ধারণা। তরুণদের বেশিরভাগই ধনাঢ্য পরিবারের সন্তান। মাদকাসক্তি ও রোমান্টিকতার যুগল ইন্ধনে এদের অনেকেই পা দিয়েছে জঙ্গিদের পাতা ফাঁদে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ইতিমধ্যে ১০ জনের ব্যাপারে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করেছে। তাদের পাসপোর্ট নম্বরও এখন পুলিশের হাতে। সরকার ও পুলিশের পক্ষ থেকে দেশবাসীকে অনুরোধ করা হয়েছে কারোর সন্তান হঠাৎ করে নিখোঁজ হয়ে গেলে তা যেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে জানানো হয়। স্মর্তব্য, ‘নিখোঁজ’ হওয়া কোনো কোনো তরুণের পরিবার এ বিষয়ে পুলিশকে যথাসময়ে জানালেও বেশিরভাগ পরিবারই বিষয়টি গোপন রাখে। গুলশানের রেস্তোরাঁয় জিম্মি উদ্ধার অভিযানে নিহত সন্দেহভাজন হামলাকারীদের মধ্যে রোহান ইবনে ইমতিয়াজসহ দুজন দীর্ঘ সময় নিখোঁজ ছিলেন। তাদের পরিবার থানায় জিডিও করেছিল। অন্যদিকে কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ার ঘটনায় নিহত সন্দেহভাজন হামলাকারী আবির রহমান কয়েক মাস আগে নিখোঁজ হলেও জিডি করা হয়েছে হামলার আগের দিন। পুলিশ সদর দফতর সূত্রের বরাত দিয়ে সহযোগী দৈনিকে বলা হয়েছে— গত তিন বছরে অন্তত ৭৭ জন তরুণ-যুবক নিখোঁজ হয়েছে। গোয়েন্দাদের আশঙ্কা, এরা পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে জঙ্গি তত্পরতায় লিপ্ত হতে পারে। তাদের পরিবারও এ ব্যাপারে উৎকণ্ঠায় ভুগছে। ওই তরুণদের সন্ধান পেতে এরই মধ্যে নানা তত্পরতা শুরু করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। জঙ্গিবাদ দমনে জনসচেতনতার বিকল্প নেই। বাবা-মা সন্তানদের ওপর নজর রাখলে এ বিপদ খুব সহজেই এড়ানো সম্ভব। সন্তানরা কাদের সঙ্গে মেলামেশা করছে, সেদিকে নজর দিলেই তাদের অকাম্য রূপান্তরের বিষয়টি অনুধাবন করা সহজসাধ্য হবে। কারও সন্তান নিখোঁজ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানানো হলে তাদের কুপথ থেকে ফিরিয়ে আনার সুযোগ সৃষ্টি হবে। জঙ্গিবাদ যেহেতু দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব এবং জাতীয় অগ্রগতির জন্য হুমকি সৃষ্টি করেছে সেহেতু এই নোংরা ভূতকে ঠেকাতে সারা জাতিকে পরস্পরের সহযোগী হিসেবে কাজ করতে হবে।

সর্বশেষ খবর