মঙ্গলবার, ১২ জুলাই, ২০১৬ ০০:০০ টা

জঙ্গি দমনের অঙ্গীকার

বিপথগামীদের সঠিক পথে আনুন

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জঙ্গি দমনে যতটা প্রয়োজন সরকার ততটাই কঠোর হবে। দেশে জঙ্গিবাদের দানব যখন তার ভয়াল থাবা বিস্তারের জন্য উঠেপড়ে লেগেছে তখন প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য সময়োচিত এবং বিশেষ তাত্পর্যের দাবিদার। সব সম্ভবের এই দেশে অতীতে সরকারিভাবেই জঙ্গিবাদকে মদদ দেওয়া হয়েছে। বিরোধী দল বিশেষত মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তিকে নির্মূল করতে জঙ্গিবাদকে উৎসাহিত করার বিষয়টি একসময় ওপেন সিক্রেট বলে বিবেচিত হতো। প্রধানমন্ত্রী সেই দুর্বিষহ দিনগুলোর কথা স্মরণ করে বলেছেন, তিনি নিজেও গ্রেনেড হামলার শিকার হয়েছেন। বলেছেন, এ ধরনের জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসীদের যারা সৃষ্টি করে গেছে, একবার বীজ বপন করলে তা সহসা উৎপাটন করা যায় না। তার পরও শত বাধা ডিঙিয়ে হলেও তার সরকার জঙ্গিবাদমুক্ত দেশ গড়বে। প্রধানমন্ত্রী এমন এক সময় তার সরকারের অঙ্গীকারের কথা পুনর্ব্যক্ত করলেন যখন গুলশান ও শোলাকিয়ার জঙ্গি হামলা সারা দেশকে কাঁপিয়ে দিয়েছে, বিশ্বজুড়ে সৃষ্টি হয়েছে এর নেতিবাচক প্রভাব। শান্তি ও সহিষ্ণুতার ধর্ম ইসলামের নামে মাহে রমজানে জঙ্গি নামের নরপিশাচরা গুলশানে যে পৈশাচিক হত্যাকাণ্ড চালিয়েছে তা কলঙ্কজনক ঘটনা। ইসলাম তথা দেশের স্বার্থে বিদেশি অপশক্তির এসব প্রতিভূকে ঠেকানো এবং বিচারের মাধ্যমে তাদের শাস্তি নিশ্চিত করা সরকার তথা সব নাগরিকের কর্তব্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। ইসলাম অর্থ শান্তি। যে ধর্ম সব ধরনের সন্ত্রাস এবং অন্যায় রক্তপাতকে কবিরা গুনা বা ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ হিসেবে ঘোষণা করেছে, সে ধর্মের নামে যারা সন্ত্রাস চালায় তারা হয় মস্তিষ্ক বিকৃতিতে ভুগছে, নতুবা নিজেদের বোধশক্তিকে কারও কাছে বন্ধক রেখেছে। গুলশান ও শোলাকিয়ার জঙ্গি হামলায় প্রমাণ হয়েছে জঙ্গিদের সিংহভাগ মগজ ধোলাই কিংবা মাদকাসক্তির শিকার হয়ে এই ঘৃণ্য পথে পা বাড়িয়েছে। ইসলাম সম্পর্কে অজ্ঞ অংশকেই জঙ্গিরা তাদের অশুভ উদ্দেশ্য পূরণের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে। ইসলামের অপব্যাখ্যা করে তাদের হাতে তরবারি, আগ্নেয়াস্ত্র ও গ্রেনেড তুলে দিচ্ছে। এ ষড়যন্ত্র প্রতিহত করতে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ সম্পর্কে ইসলাম কী বলে সে সত্যটি তুলে ধরতে হবে। এ বিষয়ে দেশের আলেম সমাজ, বিশেষ করে মসজিদের ইমামদের এগিয়ে আসতে হবে। বিপথগামীদের সঠিক পথে আনতে সেটিই হতে পারে যথার্থ পথ।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর