মঙ্গলবার, ১২ জুলাই, ২০১৬ ০০:০০ টা

সোনা চোরাচালান

দেশের নিরাপত্তার জন্যও হুমকি

গত আড়াই বছরে দেশে চোরাচালানের মাধ্যমে আনা প্রায় দেড় হাজার কেজি সোনা ধরা পড়েছে এবং তা বাংলাদেশ ব্যাংকের হেফাজতে রাখা হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে সম্প্রতি এমন তথ্যই পাঠানো হয়েছে জাতীয় সংসদে। যাতে বলা হয়েছে, ২০১৪ সাল থেকে এ পর্যন্ত ১ হাজার ৫২৭ কেজি ৬৭৬ গ্রাম সোনা কাস্টমস ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থা জব্দ করে বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা দিয়েছে। বর্তমানে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে হেফাজতকৃত সোনার পরিমাণ ১ হাজার ৯৪৬ কেজি ৮৭ গ্রাম। আড়াই বছরে ১ হাজার ৫২৭ কেজিরও বেশি সোনা আটক হওয়ার ঘটনা দৃশ্যত কাস্টমসসহ আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর সাফল্য মনে হলেও আলোর নিচে রয়েছে অন্ধকারের বাস্তবতা। প্রতি বছর ছয়-সাতশ’ কেজি সোনা আটক হওয়ার পরও সোনা চোরাচালান চলছে প্রায় অবাধে। মনে করা হয় প্রতি ১০০টি চালানের মাত্র একটি ধরা পড়ে, কখনো কখনো আইওয়াশ হিসেবে সোনা চোরাচালান ধরা পড়ার নাটক সাজানো হয়। চোরাচালানের সঙ্গে বিমানবন্দর-সংশ্লিষ্ট প্রায় সবাই, কাস্টমস এবং বাংলাদেশ বিমানের অনেকেই জড়িত। বিশেষজ্ঞদের মতে, চোরাচালানের মাধ্যমে প্রতি বছর যে টন টন সোনা আসছে তা চলে যাচ্ছে প্রতিবেশী একটি দেশে। বাংলাদেশে যে সোনার চাহিদা তা বৈধ পথেই আনা যায়, এর জন্য চোরাচালানের দরকার নেই। চোরাচালানের সোনা আসে অন্য দেশের চাহিদা মেটাতে, আর এ সুযোগ নেয় চোরাকারবারিরা। দেশে প্রতিদিন প্রায় ২০ কোটি টাকার সোনার গহনা বিক্রি হয়। সে হিসেবে কমবেশি প্রায় ১২ মেট্রিক টন সোনার চাহিদা আছে দেশে। আর ভারতে বছরে সোনার চাহিদা দেড় হাজার মেট্রিক টনের বেশি। এই বিপুল পরিমাণ সোনার চাহিদা পূরণে চোরাকারবারিরা বাংলাদেশকে স্মাগলিং রুট হিসেবে ব্যবহার করছে। মূলত হুন্ডির মাধ্যমে অর্থ লেনদেন সহজ হওয়ায় চোরাকারবারিরা ভারতে সোনা পাচারের রুট হিসেবে বাংলাদেশকে বেছে নিয়েছে। সোনা চোরাচালান শুধু দেশের অর্থনীতির জন্যই বিপদ সৃষ্টি করছে না, জাতীয় নিরাপত্তার জন্যও হুমকি সৃষ্টি করছে। এ ব্যাপারে কঠোর মনোভাবের বিকল্প নেই।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর