বৃহস্পতিবার, ১৪ জুলাই, ২০১৬ ০০:০০ টা

ভূমিকম্প ঝুঁকিতে বাংলাদেশ

দুর্যোগ মোকাবিলার প্রস্তুতি থাকতে হবে

বাংলাদেশে বড় ধরনের ভূমিকম্পের ঝুঁকি রয়েছে। একযুগ ধরে যুক্তরাষ্ট্র, সিঙ্গাপুর ও বাংলাদেশের একদল বিজ্ঞানী গবেষণা করে এ তথ্য পেয়েছেন। নেচার জিওসায়েন্স সাময়িকীতে প্রকাশিত গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে বাংলাদেশসহ ভারত ও মিয়ানমারের কিছু অংশজুড়ে সুবিশাল চ্যুতি বা ফল্টের অবস্থান থাকায় এ এলাকায় ৮ দশমিক ২ থেকে ৯ মাত্রার ভূমিকম্প হতে পারে। এ ধরনের দুর্যোগ ঢাকাসহ বাংলাদেশে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ও বিপুল প্রাণহানির আশঙ্কা রয়েছে। ফল্ট এলাকার আশপাশের ১০০ কিলোমিটার এলাকা বড় ধরনের ধ্বংসযজ্ঞের শিকার হবে। বাংলাদেশে ভূমিকম্পের আশঙ্কা সম্পর্কে গবেষণায় যে তথ্য উঠে এসেছে তা উদ্বেগজনক। বড় ধরনের ভূমিকম্প আঘাত হানলে রাজধানী ঢাকাসহ বড় বড় নগরীগুলোতে মানবিক বিপর্যয় সৃষ্টি হবে— এমনটিই আশঙ্কা করা হয়। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণায় বলা হয়েছে, রাজধানী ঢাকায় সাড়ে ৭ মাত্রার ভূমিকম্প হলে ৩০ শতাংশ ভবন ধসে পড়বে। আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়াবে প্রায় ৪৭ হাজার কোটি টাকা। বাংলাদেশে এই মাত্রার ভূমিকম্পে চার লাখ মানুষের প্রাণহানির আশঙ্কা রয়েছে। ৮ দশমিক ২ কিংবা তার চেয়ে বেশি মাত্রার ভূমিকম্প হলে কী বিপর্যয় নেমে আসবে তা সহজে অনুমেয়। ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকায় অবস্থান হলেও এ প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় বাংলাদেশের প্রস্তুতি প্রায় শূন্য পর্যায়ে। বড় ধরনের ভূমিকম্প হলে রাজধানীর ধ্বংসস্তূপ অপসারণই বড় ধরনের সমস্যা হয়ে দাঁড়াবে বলে বিশেষজ্ঞদের ধারণা। এ জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ক্রয় ও স্বেচ্ছাসেবক দল গড়ে তোলার পরিকল্পনা নেওয়া হলেও কার্যত তা এগোয়নি। ভূমিকম্প এমন এক দুর্যোগ যে সম্পর্কে আগাম আভাস দেওয়ার জ্ঞান মানুষ অর্জন করতে পারেনি। যে কারণে এ দুর্যোগ থেকে রক্ষা পাওয়ার প্রকৃষ্ট উপায় হলো ঘরবাড়ি নির্মাণে সতর্ক হওয়া। বিশেষত বিল্ডিং কোড মেনে ভবন নির্মাণ করা। অথচ এ দিকটি আমাদের দেশে ব্যাপকভাবে উপেক্ষিত। রাজধানীর বেশিরভাগ ভবনই বিল্ডিং কোড উপেক্ষা করে নির্মিত। ভবন নির্মাণের উপকরণেও রয়েছে শুভঙ্করের ফাঁকি। বিপদ এড়াতে হলে এ ব্যাপারে সতর্ক হতে হবে। রাজধানীতে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের সংখ্যা অসংখ্য। এসব ভবন ভেঙে বিল্ডিং কোড মেনে নতুন ভবন তৈরির উদ্যোগ নিতে হবে। ভূমিকম্প মোকাবিলায় স্বেচ্ছাসেবক দল গড়ে তোলারও উদ্যোগ নিতে হবে।

সর্বশেষ খবর