বৃহস্পতিবার, ১৪ জুলাই, ২০১৬ ০০:০০ টা

সিঙ্গাপুরে চার জঙ্গির দণ্ড

দেশের জন্য লজ্জাজনক ঘটনা

বাংলাদেশে জঙ্গিবাদী কর্মকাণ্ড চালাতে অস্ত্র কেনার টাকা জোগানোর দায়ে চার বাংলাদেশিকে দুই থেকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত করেছে সিঙ্গাপুরের আদালত। অভিযুক্তরা আদালতে তাদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ স্বীকারও করেন। আদালত জঙ্গি দলের নেতা মিজানুর রহমানকে পাঁচ বছর, সোহেল নামের তার এক সহযোগীকে দুই বছর এবং রুবেল ও মো. জাবেদ নামের দুজনকে ৩০ মাসের কারাদণ্ডে দণ্ডিত করেছেন। আদালত সূত্রে বলা হয়, মিজানুর আইএসে যোগ দিয়ে মুজাহিদ হওয়ার এবং সশস্ত্র যুদ্ধের মধ্য দিয়ে ‘অবিশ্বাসীদের’ ধ্বংস করার স্বপ্ন দেখছিলেন। মিজানুর ও তার জঙ্গি দল নিয়মিত বুন লে পার্ক এবং ওয়াটারফ্রন্ট পার্কে জড়ো হয়ে সেই ‘স্বপ্ন বাস্তবায়নের’ জন্য পরিকল্পনা করতেন। দেশে ফিরে সন্ত্রাসী হামলা চালানোরও পরিকল্পনা নিয়েছিল তারা। ওই দলের প্রত্যেকের সুনির্দিষ্ট দায়িত্ব ভাগ করা ছিল। মিজানুর ছিলেন দলনেতা, মামুন তার ডেপুটি। রুবেলের দায়িত্ব ছিল কোষাধ্যক্ষের আর জাবেদের কাজ ছিল জনসংযোগের। এ ছাড়া দৌলতুজ্জামান ও সোহেলকে দলের নিরাপত্তা ও সামরিক শাখার প্রধান বানিয়েছিলেন মিজানুর। পুলিশের তথ্যানুযায়ী, জাবেদের কাছে জঙ্গি কর্মকাণ্ডের জন্য সংগ্রহ করা ১ হাজার ৩৬০ মার্কিন ডলার ছিল, যার মধ্যে ১ হাজার ৬০ ডলার সংগ্রহ করে দিয়েছিলেন রুবেল। ওই দলের সবাই নিজেরাও ৬০ থেকে ৫০০ ডলার পর্যন্ত চাঁদা দিয়েছেন ‘জিহাদের’ জন্য। স্মর্তব্য, গত এপ্রিলে মোট আট বাংলাদেশিকে সিঙ্গাপুরের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা আইনে আটক করার পর ছয়জনকে জঙ্গিবাদে মদদ দেওয়ার অভিযোগে অভিযুক্ত করে দেশটির আদালত। তাদের মধ্যে ওই চারজন জঙ্গিকে সিঙ্গাপুরের সন্ত্রাসবিরোধী আইনে সাজা দেওয়া হলো। সিঙ্গাপুর বাংলাদেশের অন্যতম শ্রমবাজার। উন্নয়নের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের কাছে মডেল হিসেবে ভাবা হয় দ্বীপ রাষ্ট্র সিঙ্গাপুরকে। সে দেশে কর্মরত বাংলাদেশি কর্মীদের কারও কারোর জঙ্গিবাদী কর্মকাণ্ডে জড়িত হওয়া দেশের জন্য একটি লজ্জাজনক ঘটনা। তবে আদালতে দেওয়া সিঙ্গাপুর পুলিশের দেওয়া তথ্যে প্রমাণিত হয়েছে তারা দেশ থেকে নয় সিঙ্গাপুর যাওয়ার পর জঙ্গি তত্পরতায় জড়িত হয়েছেন। আমরা আশা করব অভিযুক্ত চার জঙ্গির ব্যাপারে সরকার আরও অনুসন্ধান চালাবে। তাদের জঙ্গি বানানোর পিছনে কারা জড়িত, তাদের আইনের আওতায় আনার সব ধরনের চেষ্টা চালানো হবে এমনটিও কাঙ্ক্ষিত।

সর্বশেষ খবর