বৃহস্পতিবার, ১৪ জুলাই, ২০১৬ ০০:০০ টা
ধর্মতত্ত্ব

হজরত আবু বকর (রা.)

হজরত আবু বকর (রা.) ৫৭৩ সালের দিকে মক্কার কুরাইশ বংশের বনু তাইম গোত্রে জন্মগ্রহণ করেছেন। তার বাবার নাম আবু কুহাফা ও মায়ের নাম সালমা বিনতে সাখার।

অন্য আরব শিশুদের মতো আবু বকর তার বাল্যকাল অতিবাহিত করেন। ১০ বছর বয়সে তিনি তার বাবার সঙ্গে একটি বাণিজ্য কাফেলায় করে সিরিয়া যান। পরে তিনি বাণিজ্যকে পেশা হিসেবে গ্রহণ করেন। বাণিজ্যের উদ্দেশ্যে তিনি সিরিয়া, ইয়েমেন প্রভৃতি স্থানে সফর করেছেন। এসব সফরের ফলে তিনি ধনী ও অভিজ্ঞতাসম্পন্ন হয়ে উঠেন। তার পিতা বেঁচে থাকলেও আবু বকর গোত্রের প্রধান হিসেবে সম্মান পেতে থাকেন।

আবু বকর শিক্ষিত ছিলেন এবং কাব্যের প্রতি তার আগ্রহ ছিল। তার স্মৃতিশক্তি ভালো ছিল এবং আরব গোত্রসমূহের বংশলতিকা নিয়ে পাণ্ডিত্য ছিল।

আবু বকর প্রথম যুগের ইসলাম গ্রহণকারীদের অন্যতম। প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে তিনি প্রথম ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন। এ সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, অন্য সবাই ইসলাম গ্রহণের আগে কিছু মাত্রায় দ্বিধায় ছিল কিন্তু আবু বকর বিনা দ্বিধায় ইসলাম গ্রহণ করেন।

ইসলাম গ্রহণের পর জীবন

আবু বকরের স্ত্রী কুতাইলা বিনতে আবদুল উজ্জা ইসলাম গ্রহণ করেননি। আবু বকর তাকে তালাক দিয়েছিলেন। তার অন্য স্ত্রী উম্ম রুমান ইসলাম গ্রহণ করেন। তার ছেলে আবদুর রহমান ইবনে আবি বকর ছাড়া অন্য সবাই ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন। ফলে আবু বকরের সঙ্গে তার বিচ্ছেদ ঘটে। আবদুর রহমান ইবনে আবি বকর পরবর্তীকালে মুসলিম হয়েছিলেন।

আবু বকরের ইসলাম গ্রহণ অনেককে ইসলাম গ্রহণে অনুপ্রাণিত করেছে। তিনি তার ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের ইসলাম গ্রহণে উৎসাহ জোগান। তার দ্বারা উৎসাহিত হয়ে অনেকে ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন।

আবু বকরের অনুপ্রেরণায় ইসলাম গ্রহণকারীদের মধ্যে রয়েছেন— উসমান ইবনে আফফান (পরবর্তীতে তৃতীয় খলিফা), যুবাইর ইবনুল আওয়াম, তালহা ইবনে উবাইদিল্লাহ, আবদুর রহমান ইবনে আউফ (রাশিদুন খিলাফতের একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ছিলেন), সাদ ইবনে আবি ওয়াক্কাস (মুসলিমদের পারস্য বিজয়ে নেতৃত্ব দিয়েছেন), আবু উবাইদা ইবনুল জাররাহ (সিরিয়ায় রাশিদুন সেনাবাহিনীর অধিনায়ক ছিলেন), আবু সালামা আবদুল্লাহ ইবনে আবদুল আসাদ, খালিদ ইবনে সাইদ, আবু হুজাইফা ইবনে আল মুগিরা প্রমুখ।

আবু বকরের ইসলাম গ্রহণ সুদূরপ্রসারী ফলাফল এনেছিল। মক্কায় এ সময় দাসপ্রথা প্রচলিত ছিল। দাসদের মধ্যে অনেকে ইসলাম গ্রহণ করে। সাধারণ মুক্ত ব্যক্তিরা ইসলাম গ্রহণের পর বিরোধিতার সম্মুখীন হতে থাকে। তবে তারা তাদের নিজ গোত্রের নিরাপত্তা ভোগ করত। কিন্তু দাসদের কোনো নিরাপত্তা ছিল না এবং তারা নির্যাতনের সম্মুখীন হয়। আবু বকর দাসদের প্রতি সদয় হয়ে অনেককে কিনে নিয়ে মুক্ত করে দেন। আবু বকরের মুক্ত করা দাসরা অধিকাংশ নারী, বৃদ্ধ বা দুর্বল ব্যক্তি ছিল।

তার মুক্ত করা দাসদের মধ্যে রয়েছেন— বিলাল ইবনে রাবাহ, আবু ফাকিহ, আম্মার ইবনে ইয়াসির, আবু ফুহাইরা, লুবাইনা, আন নাহদিয়া, উম্মে উবাইস, হারিসা বিনতে আল মুয়াম্মিল প্রমুখ।

শাকিল জাহান।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর