শনিবার, ১৬ জুলাই, ২০১৬ ০০:০০ টা

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী প্লিজ বিকল্প পথ খুঁজুন

গোলাম মাওলা রনি

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী প্লিজ বিকল্প পথ খুঁজুন

আমার বুদ্ধি যেমনি কম তার চেয়েও বেশি কম আমার দিব্য দৃষ্টি এবং কল্পনাশক্তি। তারপরও আমি ঢের বুঝতে পারছি— সরকার সাম্প্রতিককালের ধর্মীয় উগ্রবাদের নামে ভয়ঙ্কর সব সন্ত্রাসী হামলা এবং নির্মম হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে কার্যকর কোনো ব্যবস্থাই গ্রহণ করতে পারছে না। সরকারি দলের নেতৃবৃন্দ এবং রাষ্ট্রের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ক্রমাগত একই ভাষা ব্যবহার এবং অঙ্গভঙ্গি প্রদর্শনের মাধ্যমে পুরো জাতির কাছে নিজেদের জন্য একটি অসম এবং অস্বাস্থ্যকর ভাবমূর্তি গড়ে তুলেছেন।  ফলে তাদের কেউ বিশ্বাস করেন অথবা তাদের ওপর আস্থা রাখেন এমন সুনাগরিকের সন্ধান পাওয়া সত্যিকার অর্থেই দুষ্কর এবং দুরূহ কর্ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। গত কয়েক বছরের বাগাড়ম্বর এবং শক্তি প্রয়োগের নীতিতে বাংলাদেশের ধর্মীয় উগ্রবাদ কী অবস্থায় পৌঁছে গেছে তা বোঝার জন্য গুলশান ট্র্যাজেডি এবং শোলাকিয়া ঈদ জামাতের ঘটনাই যথেষ্ট।

২০১৬ সালের বাংলাদেশের রাষ্ট্রক্ষমতার বাস্তব চিত্র হলো— জনগণ মনে করছেন একমাত্র প্রধানমন্ত্রী ছাড়া অন্য কেউ গুরুত্বপূর্ণ কিছু করা তো দূরের কথা, কোনো কিছু করার কথা কল্পনাও করতে পারেন না অথবা করেন না। সবকিছুর জন্য কিছু লোক আসমানের দিকে উদাস নয়নে তাকিয়ে থাকেন আর বাকিরা প্রধানমন্ত্রীর দিকে তাকিয়ে থাকেন। সুতরাং ধর্মীয় উগ্রবাদ নিয়ে সাম্প্রতিককালের সরকারি কর্মযজ্ঞের সঙ্গে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর যে সায় রয়েছে তা বলাই বাহুল্য। কাজেই এসব ব্যাপারে সমালোচনা না করে আমি বরং বিভ্রান্ত যুবসমাজকে সঠিক পথে আনার বিকল্প পথ সম্পর্কে আমার পরিকল্পনার কথা তুলে ধরি—

এক. আমি জানি যে, আধুনিক রাষ্ট্র ব্যবস্থায় গুলশান ট্র্যাজেডির মতো কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে রাজনৈতিক দলগুলো তার ফায়দা নেওয়ার জন্য প্রতিপক্ষকে দায়ী করে থাকে। এটা মন্দ কোনো কাজ নয়, কারণ উন্নত বিশ্ব বলে পরিচিত পশ্চিমা দুনিয়ার সুসভ্য দেশগুলোতে ট্র্যাজেডি নিয়ে ভয়ঙ্কর নোংরা রাজনীতি হয়ে থাকে। ফ্রান্সের সাম্প্রতিক জঙ্গি আক্রমণ অথবা ইউরোপে সিরীয় উদ্বাস্তু নিয়েও রাজনীতি হচ্ছে। কিন্তু ওদের সঙ্গে আমাদের পার্থক্য হলো— ওরা রাজনীতির অন্তরালে গোপনে রাষ্ট্রীয় এবং রাজনৈতিকভাবে সমস্যাটি সমাধানে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করে থাকে। ফলে সেসব দেশে একই সমস্যা বারবার ঘটে না অথবা কোনো একটি সমস্যা ক্রমাগত বাড়তে বাড়তে প্রকাশ্যে এবং সবার নাকের ডগা দিয়ে ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করতে পারে না।

দুই. সরকার গুলশান ট্র্যাজেডিসহ নিকট অতীতের সব ধর্মীয় উগ্রবাদ নিয়ে যত ইচ্ছে রাজনীতি করুক তাতে আমার কোনো আপত্তি নেই। কিন্তু একই সঙ্গে তারা যদি কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করেন তবে নাগরিক হিসেবে আমরা আশ্বস্ত হতে পারব।

সরকারের উচিত গোপনে হলেও দেশের বড় বড় রাজনৈতিক দল এবং গুরুত্বপূর্ণ নাগরিকদের সঙ্গে একান্ত ঘরোয়া বৈঠকে মিলিত হওয়া। বিষয়টিকে একটি জাতীয় দুর্যোগ হিসেবে সংজ্ঞায়িত করে তা মোকাবিলার জন্য (ক) অর্থনৈতিক (খ) রাজনৈতিক (গ) নিরাপত্তাজনিত ফায়ার ওয়াল (ঘ) সামাজিক (ঙ) ধর্মীয় কৌশলপত্র প্রণয়ন করা।

তিন. পাঁচটি কৌশলপত্র প্রণয়নের জন্য সত্যিকার অর্থে মেধাবী, যোগ্য, গ্রহণযোগ্য এবং সর্বজনস্বীকৃত পণ্ডিত ব্যক্তিবর্গ এবং বিশেষজ্ঞদের নিয়ে পাঁচটি পৃথক কমিটি হতে হবে। প্রধানমন্ত্রীকে মনে রাখতে হবে যে, দলকানা, দালাল ও চাটুকারদের স্বাভাবিক বিবেক, বিবেচনা ও বিচারশক্তি থাকে না। তারা শত চেষ্টা করলেও ভিন্নধর্মী এবং ব্যতিক্রমী কিছু চিন্তা করতে পারে না। তারা বুলি শেখানো ময়না-টিয়া অথবা পশুপাখির ডাক নকলকারী হরবোলার চেয়ে একচুলও বেশি দক্ষতা এবং বিশিষ্টতা প্রদর্শনে সক্ষম নয়। ফলে এদের রাজনৈতিক ধাপ্পাবাজি ও বাগাড়ম্বরে ব্যবহার করা যেতে পারে কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ কোনো বিষয় নিয়ে এদের সঙ্গে আলোচনা করা একেবারেই অনুচিত।

চার. কৌশলপত্র বাস্তবায়নের জন্য বিভিন্ন সেক্টরের সাংগঠনিক যোগ্যতাসম্পন্ন লোকদের নিয়ে একটি বাস্তবায়ন মনিটরিং সেল তৈরি করা যেতে পারে। রাষ্ট্রের সিভিল সার্ভিস যেগুলো বাস্তবায়ন করবে সেগুলো তদারকির জন্য এম কে আনোয়ার, মোকাম্মেল হক, আসাফ উদ্দৌলার মতো ঝানু সিএসপিদের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগানো যেতে পারে। কৌশলপত্রগুলোর আবার তিনটি রূপ থাকবে। একটি হবে রাষ্ট্র কর্তৃক বাস্তবায়নের জন্য যা অভিজ্ঞ সামরিক-বেসামরিক আমলারা সহজ বোধ্য ভাষায় নিজেদের মতো করে লিপিবদ্ধ করবেন। আরেকটি হবে রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গের জন্য যা তৈরি করবেন রাজনৈতিক বক্তব্য লিখনীতে পারদর্শী ব্যক্তিবর্গ, জনসাধারণের জন্য যেটি লিফলেট আকারে বিতরণ করা হবে সেটির লেখক হবেন জাদুকরী লেখার যোগ্যতাসম্পন্ন লেখক-সাহিত্যিক এবং সাংবাদিকবৃন্দ। সৈয়দ শামসুল হক, আবদুল গাফফার চৌধুরী, সৈয়দ আবুল মকসুদ, ইমদাদুল হক মিলন, মঈনুল আহসান সাবের এবং আনিসুল হকের মতো লোকের সাহায্যে কোনো কিছু লিখিত হলে সবাই আগ্রহ সহকারে পড়তে বাধ্য হবে।

পাঁচ. সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করলে দেখা যাবে, রাজধানী ঢাকা হলো উগ্রবাদীদের টার্গেটের প্রধান ক্ষেত্র। এরপর বিভাগীয় শহর, জেলা শহর এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠী অধ্যুষিত গ্রামীণ জনপদ। সরকারের উচিত রাজধানীকেন্দ্রিক একটি শক্তিশালী উগ্রবাদ প্রতিরোধ, নির্মূল এবং উগ্রবাদ বন্ধ করার জন্য একটি বিশেষ কমিটি প্রণয়ন করা। যারা উগ্রবাদে জড়িয়ে পড়ছেন তাদের সেই ধ্বংসাত্মক পথ থেকে ফেরানোর জন্য জরুরি ভিত্তিতে কাউন্সিলিং শুরু করা। দ্বিতীয় : সেসব নগরবাসী উগ্রপন্থার হুমকির মধ্যে রয়েছেন তাদের সচেতন করে তোলা এবং তারা যাতে গণপ্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারেন সে লক্ষ্যে উঠোন বৈঠক, রেডিও, টিভি, সামাজিক মাধ্যম এবং পত্রপত্রিকায় ব্যাপক প্রচার এবং প্রপাগান্ডা চালানো। সরকার এখনো প্রচার প্রপাগান্ডা চালাচ্ছে বটে কিন্তু সেগুলো কার্যত বুমেরাং হয়ে যাচ্ছে। পত্রপত্রিকায় লেখাতে হবে সেসব লেখক, নিবন্ধকার এবং কলামনিস্টদের দ্বারা যারা সর্বজনশ্রদ্ধেয় এবং জাদুকরী লেখার কারণে পৃথিবীর বাংলা ভাষাভাষী পাঠকগণের কাছে অতীব জনপ্রিয় এবং নন্দিত। অন্যদিকে, সরকারি প্রযোজনায় নতুন করে টকশো চালু করতে হবে। গত দুই বছর সরকার শত চেষ্টা করেও আগেকার জনপ্রিয় টকশো ব্যক্তিত্বের আদলে নিজ দলের খয়ের খা-দের মধ্য থেকে একজন বক্তাও পয়দা করতে পারেনি। উল্টো একতরফা দলকানামূলক পক্ষপাতপুষ্ট এবং নিরেট ভেজালযুক্ত কথাবার্তা প্রচারের ফলে টকশোগুলো দর্শক হারিয়ে নিন্দিত পাপেট শোতে রূপান্তরিত হয়েছে। অনেক দর্শক নন্দিত উপস্থাপকগণ ধিকৃত ভাঁড়ে রূপান্তরিত হয়েছেন আর আলোচকরা এমন সব নিন্দিত অভিধানে অভিষিক্ত হয়েছেন যা মুদ্রণযোগ্য নয়।

সরকারের উচিত— নূরুল কবির, আসিফ নজরুল, আন্দালিব রহমান পার্থ, মাহি বি চৌধুরী, জনাব আসাফউদ্দৌলা, আকবর আলী খান প্রমুখ বরেণ্য টকশো ব্যক্তিত্বকে ফিরিয়ে আনা। যতটা শক্তি প্রয়োগ করে সরকার গত দুই বছরে এসব লোককে টকশো থেকে তাড়িয়ে দিয়েছিল— তার চেয়েও বহু শক্তি প্রয়োগ করে এখন তাদের ফিরিয়ে আনা সরকারের জন্য অপরিহার্য হয়ে পড়েছে। টেলিভিশন কেন্দ্রগুলো নানা কারণে সরকারকে প্রচণ্ড ভয় পাচ্ছে এবং নিজেরা অনেকটা স্বপ্রণোদিত হয়ে সেলফ সেন্সরশিপ চালু করেছে। ফলে সরকার নির্দেশ দিলেও টেলিভিশনগুলো তাদের অস্তিত্ব সংকটের কথা ভেবে উচিত কথা বলা লোকদের দিয়ে টকশো করার ঝুঁকিতে যাবে না। এক্ষেত্রে দরকার পড়লে চাঙ্ক ভাড়া করে হলেও নতুন নতুন টকশো চালু করতে হবে। উচিত কথা বলা জনপ্রিয় লোকদের সঙ্গে সরকারি দলের ঝানু ও লেখাপড়া জানা জনপ্রিয় বক্তাদের বসিয়ে দিলে টকশোগুলো পুনরায় জনপ্রিয় হয়ে উঠবে এবং হারানো দর্শক ফিরে পাবে। ফলে সরকার বিশাল জনগোষ্ঠীর সামনে নিজেদের বক্তব্য তুলে ধরার সুযোগ পাবে।

সাত. সরকারি দলের জনপ্রিয় এবং মেধাবী তরুণ নেতাদের একত্র করে দক্ষ এবং অভিজ্ঞ প্রশিক্ষকদের মাধ্যমে সরকারি কৌশলপত্রের ব্যাপারে প্রশিক্ষিত করে তুলতে হবে। ধর্মতত্ত্ব, ধর্মের সঙ্গে রাজনীতির চিরায়ত সম্পর্কের ইতিহাস, রাজনীতিতে সন্ত্রাসবাদের চিরায়ত ব্যর্থতা এবং পরাজয়ের ইতিহাস, মনোবিজ্ঞান, সম্মোহন বিজ্ঞান ইত্যাদি বিষয়ে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত এবং অভিজ্ঞদের দ্বারা প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে, যাতে করে প্রশিক্ষণপ্রাপ্তরা উগ্রবাদীদের মনমানসিকতা বুঝতে পারেন এবং তাদের সব প্রশ্নের যথাযথ উত্তর দিতে পারেন। আওয়ামী লীগ একটি সুবৃহৎ দল। শত বদনামির মধ্যেও দলটিতে অনেক মেধাবী তরুণ এবং জনপ্রিয় নেতা রয়েছেন যাদের উগ্রবাদীরা সম্মান করে, ভালোবাসে এবং তাদের কথা মনোযোগসহকারে শুনতে আগ্রহী হবে। সরকারি দলের ইকবালুর রহিম, নজরুল ইসলাম বাবু  ছাত্ররাজনীতিতে অত্যন্ত জনপ্রিয় নেতা ছিলেন। শাহরিয়ার আলম, জুনায়েদ আহম্মদ পলকও হাল আমলে দেশবাসীর কাছে বেশ জনপ্রিয় এবং গ্রহণযোগ্য। অন্যদিকে নসরুল হামিদ বিপু এবং তারানা হালিম অনেক অনেক ভালো কিছু করার মনমানসিকতা ধারণ করেন এবং সেগুলো করার যোগ্যতাও রাখেন। সরকার যদি আরও উদার হতে চান তবে মাহমুদুর রহমান মান্না, আখতারুজ্জামান, সুলতান মোহাম্মদ মনসুর, বাহালুল মজনুন চুন্নু, সানাউল হক নীরু, আসাদুজ্জামান রিপন, নূরুল ফজল বুলবুল, জহিরউদ্দিন স্বপন, ওবায়দুল কাদের প্রমুখের সমন্বয়ে একটি সর্বদলীয় জাতীয় যুব কমিটি করে তবে সারা দেশে ধর্মীয় উগ্রবাদের বিরুদ্ধে প্রতি বিপ্লব সাধিত হয়ে যাবে।

পরিকল্পনা মোতাবেক তরুণ ও যুবক নেতৃবৃন্দ অভিযুক্ত সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে যদি প্রতি সপ্তাহে মতবিনিময় শুরু করেন তবে আশা করা যায় সরকার চমৎকার একটি সুবিধাজনক এবং ইতিবাচক প্রতিদান পাবে। এ ক্ষেত্রে শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে কঠোর নির্দেশনার মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে বাধ্য করতে হবে নিয়মিত মতবিনিময় সভার আয়োজন করার জন্য এবং সেসব অনুষ্ঠানে সব ছাত্রছাত্রীকে বাধ্যতামূলকভাবে উপস্থিত থাকার জন্য।

আট. সারা দেশের যেসব মসজিদে জুমার নামাজে দুই হাজারের অধিক মুসল্লি উপস্থিত থাকেন সেসব মসজিদের খতিব সাহেবদের ডেকে ডিসি সম্মেলনের আদলে মহাসম্মেলন আয়োজন করতে হবে। কেবল প্রধানমন্ত্রী এবং খতিববৃন্দ ছাড়া ওই অনুষ্ঠানে অন্য কেউ উপস্থিত থাকতে পারবেন না। কোনো সরকারি কর্মকর্তা, দলীয় নেতা এবং সরকার সমর্থক আলেম ওলামাকে এই গুরুত্বপূর্ণ মিটিং থেকে দূরে রাখতে হবে। খতিবদের মধ্যে যারা সরকার সমর্থক তারা বসবেন পেছনের সারিতে এবং পুরো অনুষ্ঠানে তাদের উপস্থিত হবে কেবলমাত্র একজন উত্তম দর্শক এবং শ্রোতার ন্যায়।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী! শুনেছি— আপনি নিয়মিত কোরআন পড়েন। আমার অনুরোধ, প্লিজ সূরা ইউসুফের তাফসিরটি পুনরায় পড়ে নেবেন। কোরআনের প্রথম নাজিলকৃত আয়াতগুলোর মধ্যে আল ইনসান শব্দের আল অর্থাৎ আলিফ লামের তাৎপর্যটিও পড়ে নেবেন। সেখানে আপনি নিজের জন্য এবং জাতির জন্য অনেকগুলো হেকমত এবং বরকতের রাস্তার সন্ধান পেয়ে যাবেন ইনশা আল্লাহ! প্রিয় নেত্রী, আপনি নিশ্চয়ই জানেন, শাসক সব সময়ই আল্লাহ কর্তৃক মনোনীত হন— হয়তো কল্যাণের জন্য নয়তো অন্য কোনো খোদায়ী ইচ্ছে বাস্তবায়নের জন্য। শাসকের মন, তার চিন্তা এবং স্বপ্ন কোনো দিন সাধারণ মানুষের মতো হয় না। শাসকের স্বপ্ন সব সময়ই বিশেষ গুরুত্ব বহন করে থাকে।

সূরা ইউসুফের মধ্যে মিসরের বাদশাহের স্বপ্ন, সেই স্বপ্নের তাবির জানার জন্য জেলখানা থেকে হজরত ইউসুফ (আ.) কে মুক্তিদান এবং স্বপ্নের তাবির জানার পরে সাম্রাজ্যের অর্থ এবং খাদ্যমন্ত্রী হিসেবে হজরত ইউসুফ (আ.)-এর নিয়োগদানের মধ্যে পৃথিবীর তাবৎ শাসককুলের জন্য বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ হেকমত এবং বরকত রয়েছে।

দেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে আপনার ব্যক্তিগত আবেগ অনুভূতি কল্পলোক এবং স্বপ্রয়োগকে আপনি যদি মূল্যায়ন করেন এবং তা যদি উপরোক্ত উপায়ে পুনর্মূল্যায়িত করে সিদ্ধান্ত নেন—  তবে আশা করা যায়, মহান আল্লাহর রহমত ও বরকত থেকে আমরা কেউ মাহরুম হব না ইনশা আল্লাহ।

     লেখক : কলামিস্ট।

সর্বশেষ খবর