রবিবার, ১৭ জুলাই, ২০১৬ ০০:০০ টা

ফ্রান্সে জঙ্গি হামলা

এ দৈত্যকে ঠেকাতে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে

আট মাসের ব্যবধানে ফ্রান্সের ওপর আবারও জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটেছে। এবারকার হামলায় মাত্র একজন জঙ্গি নিস শহরে বাস্তিল উৎসব পালনরত লোকজনকে ট্রাক চাপা দিয়ে ভয়াবহ গণহত্যা চালিয়েছে। মুহূর্তের মধ্যে কেড়ে নেওয়া হয় অন্তত ৮৪ জনের প্রাণ। আহত হয় বিপুল সংখ্যক মানুষ। যাদের মধ্যে ২০ জনের অবস্থা গুরুতর। বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে উৎসব শেষে লোকজন যখন ঘরে ফিরছিল তখনই তাদের ওপর চড়াও হয় তিউনিস বংশোদ্ভূত এক ফরাসি জঙ্গি। আট মাস আগে ফ্রান্সের রাজধানীতে ভয়াবহ জঙ্গি হামলার পর দেশজুড়ে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়। নেওয়া হয় নিশ্ছদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা। সে কারণে ফ্রান্সে নতুন হামলা চালানোর ক্ষেত্রে কৌশলগত পরিবর্তন আনা হয়। অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ার বদলে অস্ত্র হিসেবে বেছে নেওয়া হয় একটি ট্রাককে। উৎসব পালনরত অপ্রস্তুত ভিড়ের ওপর দ্রুত বেগে ট্রাক চালিয়ে হত্যা করা হয় বিপুলসংখ্যক মানুষকে। ফ্রান্সে নির্মম, নিষ্ঠুর, পৈশাচিক জঙ্গি হামলার পর সে দেশে জরুরি অবস্থার মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। তিন দিনব্যাপী শোক পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ফ্রান্স সরকার। সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে একসঙ্গে লড়াইয়ের প্রত্যয় ঘোষণা করেছে বিশ্ব নেতৃবৃন্দ। ফ্রান্সের সর্বশেষ জঙ্গি হামলায় প্রমাণিত হলো সন্ত্রাসবাদের অশুভ দৈত্য ঠেকাতে শুধু নিরাপত্তাজনিত ব্যবস্থা গ্রহণই যথেষ্ট নয়, জঙ্গিদের মানসিকভাবে ভুল পথ থেকে সরিয়ে আনতে না পারলে বিশ্বসমাজকে প্রতিদিনই তার খেসারত দিতে হবে। এ জন্য জঙ্গি দমনে অস্ত্র প্রয়োগের চেয়েও মনস্তাত্ত্বিক লড়াইয়ে যত্নবান হতে হবে। জঙ্গিবাদের মাধ্যমে যে কোনো কল্যাণ অর্জিত হতে পারে না সে বিষয়টি যাতে সংশ্লিষ্টদের মননে উপলব্ধির সৃষ্টি করে সে জন্য সুসমন্বিত প্রচার চালাতে হবে। দুনিয়ার অন্য সব দেশের মতো বাংলাদেশও জঙ্গি হুমকির শিকার। মানবতার এই শত্রুদের বিরুদ্ধে বিশ্বের সব শান্তিপ্রিয় ও সচেতন মানুষের ঐক্য গড়ে তোলার উদ্যোগ নিতে হবে। জঙ্গিবাদ নিয়ে অহেতুক রাজনীতি করার বদলে এর শিকার দেশগুলোর পাশে দাঁড়াতে হবে বাদ বাকি বিশ্বকে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর