রবিবার, ১৭ জুলাই, ২০১৬ ০০:০০ টা

পঞ্চগড়ের চা চাষিদের দুর্ভোগ

চা প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানা গড়ে তুলুন

চা প্রক্রিয়াজাতের পর্যাপ্ত কারখানার অভাবে নিষ্ঠুর শোষণের শিকার হচ্ছে পঞ্চগড়ের চা চাষিরা। বাংলাদেশে চা চাষের সূচনা হয় সিলেটে। পরবর্তীতে পার্বত্য চট্টগ্রামে তা সম্প্রসারিত হয়। এক সময় চা ছিল দেশের অন্যতম রপ্তানিযোগ্য পণ্য। গত সাড়ে চার দশকে চায়ের উৎপাদন বৃদ্ধি পেলেও দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদাও বেড়েছে বহুগুণ। ফলে রপ্তানি দূরের কথা অভ্যন্তরীণ চাহিদা মেটাতেই হিমশিম খেতে হচ্ছে। এখনো কিছু পরিমাণ চা রপ্তানি হলেও আমদানির পরিমাণও কম নয়। চায়ের ক্ষেত্রে সম্ভাবনার আলো ছড়িয়েছে পঞ্চগড়ের চা চাষিরা। এখানকার চায়ের মানও ভালো। কিন্তু চা প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানার সংখ্যা চাহিদার তুলনায় কম হওয়ায় চাষিরা চা নিয়ে প্রায়ই ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। ব্রিটিশ আমলের কুখ্যাত নীলকরদের স্টাইলে কারখানা মালিকরা চা চাষিদের নানা অজুহাতে জিম্মি করে ফেলেছেন। নিজেদের বাগানে উৎপাদিত পাতার ৫০ থেকে ৬০ ভাগই কারখানা মালিকদের বিনা মূল্যে দিতে বাধ্য হচ্ছে ক্ষুদ্র চাষিরা। পুরো পঞ্চগড়ে মাত্র ছয়টি চা প্রক্রিয়াজাত কারখানা রয়েছে। এর মধ্যে সচল চারটি। সেখানে আরও অন্তত ১৫ থেকে ২০টি কারখানা দরকার। প্রক্রিয়াজাতকরণের ছয় কারখানার চাহিদার তুলনায় তিনগুণ পাতা উৎপাদন হওয়ায় বাদ বাকি পাতা নিয়ে চাষিরা হেনস্তার শিকার হচ্ছে এবং তা নামমাত্র মূল্যে কারখানায় বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছে। পঞ্চগড়ে বিডি-২৬, বিডি-২৯সহ উন্নতমানের দার্জিলিং ভেরাইটির চা উত্পন্ন হয়, যা আন্তর্জাতিক মানের বলে বিবেচিত। দেশের একমাত্র অর্গানিক চা-ও পঞ্চগড়ে উৎপাদিত হয়। কিন্তু উৎপাদিত চা বিক্রির বিকল্প কোনো ব্যবস্থা না থাকায় নানা নির্যাতন সয়ে ঘুরে-ফিরে চা পক্রিয়াজাত কারখানা কর্তৃপক্ষের কাছেই ধরনা দিচ্ছেন প্রান্তিক চা চাষিরা। তাদের দাবি, বিদ্যমান সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে পঞ্চগড়ে অবিলম্বে পর্যাপ্ত চা প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানা স্থাপনের উদ্যোগ নিতে হবে। এ ব্যাপারে সরকারিভাবে কারখানা স্থাপন কিংবা বেসরকারি খাতকে উৎসাহিত করা যেতে পারে। পঞ্চগড়ে পর্যাপ্ত চা প্রক্রিয়াজাত কারখানা স্থাপিত হলে চা চাষের পরিমাণও বৃদ্ধি পাবে। অনুর্বর যেসব জমি পড়ে রয়েছে তাতে চা চাষে উৎসাহিত হবে সাধারণ চাষিরা। দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে চা রপ্তানির সুযোগও তাতে মিলবে।

সর্বশেষ খবর