শিরোনাম
মঙ্গলবার, ১৯ জুলাই, ২০১৬ ০০:০০ টা

শাওয়াল মাসের ছয় রোজার ফজিলত

মাওলানা মুহম্মাদ সাহেব আলী

মাহে রমজানের পর আমাদের মাঝে হাজির হয় শাওয়াল মাস। শাওয়াল গুনাহ থেকে মুক্তির মাস। মাহে রমজানে যার রোজা কবুল হয়েছে, শাওয়াল মাস থেকে সে গুনাহর ভারমুক্ত হয়েছে। রমজান মাসের বরকত যারা হাসিল করেছেন তারা মানসিকভাবে স্বস্তিতে থাকেন এ মাসে। যারা রমজানে যথাযথ ইবাদত বন্দেগি করতে পারেননি তাদের উচিত এখনই তওবা ইস্তেগফার করে আল্লাহতায়ালার রহমতের ছায়াতলে আশ্রয় নেওয়া এবং নেক আমলের দিকে ফিরে আসা।

রমজানে মাসব্যাপী যারা সিয়াম সাধনা করেছেন তাদের জন্য শাওয়াল মাসে শুভ সংবাদ রয়েছে। তা হলো শাওয়াল মাসের ছয় রোজা। হজরত আবু আইউব আনসারী (রা.) থেকে বর্ণিত, প্রিয় নবী (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘যে ব্যক্তি রমজান মাসে রোজা রাখল এবং এ রোজার পর শাওয়াল মাসে ছয়টি রোজা রাখল সে যেন গোটা বছর রোজা রাখল’ [মুসলিম]। হজরত উবাইদুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন রসুল (সা.)-কে জিজ্ঞাসা করলাম, ‘ইয়া রসুলুল্লাহ আমি কি সারা বছর রোজা রাখতে পারব?’ তখন রসুল (সা.) বললেন, ‘তোমার ওপর তোমার পরিবারের হক রয়েছে, কাজেই তুমি সারা বছর রোজা না রেখে রমজানের রোজা রাখ এবং রমজান-পরবর্তী মাস শাওয়ালের ছয় রোজা রাখ, তাহলেই তুমি সারা বছর রোজা রাখার সওয়াব পাবে’ (তিরমিজি)। অল্প নেক আমলের বিনিময়ে আল্লাহর অসীম দয়া ও অনুগ্রহের পাত্র হওয়ার জন্য নবী করিম (সা.) কর্তৃক বর্ণিত সহজ পন্থার একটি হলো শাওয়াল মাসের ছয়টি নফল রোজা। বান্দা যখন আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য এই রোজা রাখবে তখন আল্লাহ তাকে পূর্ণ একটি বছর রোজা রাখার সওয়াব দিয়ে দেবেন। মহান আল্লাহপাক হাদিসে কুদসিতে ইরশাদ করেন, ‘বান্দা-বান্দীরা নফল বা সুন্নত পালনের মাধ্যমে আমার নৈকট্য লাভ করে থাকে।’ পবিত্র শাওয়াল মাসে ছয়টি রোজা খাস সুন্নত বা মুস্তাহাবের অন্তর্ভুক্ত এবং বহু ফজিলতের কারণ। হজরত সাওবান (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, রমজানের রোজা ১০ মাসের রোজার সমতুল্য আর (শাওয়ালের) ছয় রোজা দুই মাসের রোজার সমান। সুতরাং এ হলো এক বছরের রোজা।

আল্লামা ইবনে রজব (রহ.) বলেন, শাওয়াল মাসে রোজা রাখার তাত্পর্য অনেক। রমজানের পর রাখা রমজানের রোজা কবুল হওয়ার আলামত স্বরূপ। কেননা আল্লাহতায়ালা কোনো বান্দার আমল কবুল করলে, তাকে পরেও অনুরূপ আমল করার তৌফিক দিয়ে থাকেন। আল্লাহ আমাদের সবাইকে শাওয়ালের ছয় রোজা পালনের তাওফিক দান করুন।

লেখক : ইসলামী গবেষক।

সর্বশেষ খবর