বুধবার, ২০ জুলাই, ২০১৬ ০০:০০ টা

পাঠ্যবই দেশেই ছাপা হোক

দেশীয় শিল্প রক্ষায় উদ্যোগ নিন

প্রাথমিক স্তরের ১১ কোটি ৫৭ লাখ বইয়ের বেশির ভাগই এ বছর ছাপা হবে ভারত, চীন ও দক্ষিণ কোরিয়ায়। আন্তর্জাতিক টেন্ডারের ৯৮টি লটের ৪৮টিতে ভারতীয় প্রতিষ্ঠান সর্বনিম্ন দরদাতা হওয়ায় তারা একাই প্রায় অর্ধেক বই ছাপার কাজ পাচ্ছে। চীন ৯টি লট এবং দক্ষিণ কোরিয়া ৭টি লটে সর্বনিম্ন টেন্ডারদাতা হওয়ায় ৯৮টি লটের ৬৩টির কাজ চলে যাবে দেশের বাইরে। বাংলাদেশের ছাপাখানায় ছাপা হবে এক-তৃতীয়াংশের কিছু বেশি অর্থাৎ ৩৫ লটের বই। প্রাথমিকসহ স্কুল পর্যায়ের বই ছাপার কাজ দেশের ছাপাখানাগুলোর সাংবাৎসরিক আয়ের অন্যতম উৎস। প্রাথমিক শিক্ষার বই ছাপার কাজ প্রতিবছর আন্তর্জাতিক টেন্ডারের মাধ্যমেই বিতরণ করা হয়। গত বছর টেন্ডারের পুরো কাজ পান বাংলাদেশের ছাপাখানার মালিকরা। দেশীয় ছাপাখানাগুলো গত বছর প্রতি ফর্মা বই ছাপার জন্য খরচ ধরেছিল ১ টাকা ৫৫ পয়সা। এ বছর ২ টাকা ২৭ পয়সা ধার্য করায় বেশির ভাগ কাজ ভারতসহ বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো পেয়েছে। স্মর্তব্য, শুরু থেকেই আন্তর্জাতিক দরপত্রের তীব্র বিরোধিতা করে আসছেন দেশীয় মুদ্রণ শিল্প মালিকরা। কিন্তু তাদের ওই যুক্তিসঙ্গত দাবি উপেক্ষা করে আন্তর্জাতিক দরপত্রের মাধ্যমে ভারতের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে দেশের পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণের কাজ। দেশীয় প্রতিষ্ঠানকে কাজ না দিয়ে প্রতিবছর ভারতে পাঠ্যপুস্তক ছাপার কাজ তুলে দেওয়ায় হতাশ দেশের প্রেস মালিকরা। দেশের বিকাশমান মুদ্রণ শিল্প রক্ষায় প্রেস মালিকরা বিদেশে পাঠ্যবই ছাপার অবসান দাবি করে আসছেন। এ জন্য প্রধানমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রী এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রীর কাছে লিখিত চিঠিতে তারা এ বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন। জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, কম মূল্যে দরপত্র দাখিল করলেই বিদেশি প্রতিষ্ঠানকে কাজ দেওয়া হবে এমন ধারণা ঠিক নয়। দরপত্রদাতাদের আনুষঙ্গিক যোগ্যতাও যাচাই করা হবে।  আমরা আশা করব বৃহত্তর জাতীয় স্বার্থে দেশীয় প্রতিষ্ঠানকে কাজ দেওয়ার বিষয়টি প্রাধান্য পাবে। এক্ষেত্রে কোনো প্রতিবন্ধকতা থাকলে তা অপসারণেরও উদ্যোগ নেওয়া হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর