বৃহস্পতিবার, ২১ জুলাই, ২০১৬ ০০:০০ টা

রূপপুর পরমাণু বিদ্যুৎকন্দ্র

দেশকে এগিয়ে নেওয়ার সাহসী পদক্ষেপ

রাশিয়ার সঙ্গে পারমাণবিক বিদ্যুৎকন্দ্র স্থাপনের চুক্তিতে আবদ্ধ হয়েছে বাংলাদেশ। শুক্রবার সম্পাদিত এ চুক্তির মাধ্যমে পারমাণবিক বিদ্যুৎকন্দ্র যুগে পা দিয়েছে বাংলাদেশ। পাবনার রূপপুরে ২ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের এ কেন্দ্রটি হবে দেশের এযাবৎকালের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় প্রকল্প। এ প্রকল্প বাস্তবায়নে ১ হাজার ২৬৫ কোটি ডলার বা বাংলাদেশের মুদ্রায় ১ লাখ কোটি টাকার বেশি খরচ হবে। রাশিয়া এ চুক্তিতে ব্যয়িত অর্থের সিংহভাগ অর্থাৎ ১১৩৮ দশমিক ৫ কোটি ডলার ঋণ হিসেবে দেবে। প্রথম ১০ বছর ঋণের কোনো অর্থ শোধ করা লাগবে না পরবর্তী ১৮ বছরে তা সুদাসলে শোধ করতে হবে। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকন্দ্রে প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ উৎপাদনের খরচ ধরা হয়েছে তিন টাকা। কেন্দ্রটির আয়ুষ্কাল ধরা হয়েছে ৫০ বছর। দেশের ইতিহাসের সবচেয়ে ব্যয়বহুল প্রকল্পের মাধ্যমে উচ্চতর বৈজ্ঞানিক প্রযুক্তির সঙ্গে পরিচিত হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। এ বিদ্যুৎকন্দ্র নির্মিত হলে সাশ্রয়ী মূল্যে বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে। দেশের উন্নয়নে তা তাত্পর্যপূর্ণ ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে। রূপপুরে পারমাণবিক বিদ্যুৎকন্দ্র স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয় সেই পাকিস্তান আমলে। কিন্তু এ জন্য ভূমি অধিকরণ ছাড়া কাজের কাজ এগোয়নি। স্বাধীনতার পর প্রতিটি সরকার প্রকল্পটির কথা মাথায় রাখলেও বিশাল ব্যয়ের প্রকল্প হাতে নেওয়ার সাহসই কেউ দেখায়নি। প্রকল্প বাস্তবায়নে ৮-৯ বছর সময়ের প্রয়োজন হওয়ায় কোনো সরকারই দেশের চাহিদা পূরণের দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্য নিয়ে এগোবার তাগিদ অনুভব করেনি। এদিক থেকে রাশিয়ার সঙ্গে চুক্তি সম্পাদন একটি সাহসী পদক্ষেপ। দুই ইউনিটের প্রকল্পটির প্রথম ইউনিট ২০২৩ সালের অক্টোবর এবং দ্বিতীয় ইউনিট ২০২৪ সালের অক্টোবর চালু হবে। এ বিশাল বিনিয়োগ বংলাদেশ সম্পর্কে বহির্বিশ্বে ইতিবাচক ধারণার সৃষ্টি করবে বলে আশা করা যায়। বিদ্যুৎ সহজলভ্য হওয়ায় দেশি-বিদেশি বিনিয়োগে ইতিবাচক প্রভাব বিস্তার করবে এমনটিও কাঙ্ক্ষিত। রূপপুর প্রকল্প সফলভাবে বাস্তবায়িত হলেও বিদ্যুৎ চাহিদা পূরণে আরও একাধিক পরমাণু কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার বিষয়টিও প্রাসঙ্গিক হয়ে দাঁড়াবে। তবে রাশিয়ার সঙ্গে বিশালাকারের প্রকল্প চুক্তিকে পশ্চিমা দুনিয়া কী চোখে দেখে তাও একটি ভাবার বিষয়।

সর্বশেষ খবর