শনিবার, ২৩ জুলাই, ২০১৬ ০০:০০ টা

স্যানিটেশনে বাংলাদেশই সেরা

সভ্যতার পরিমাপে অগ্রগতি

দক্ষিণ এশিয়ায় স্যানিটেশন ব্যবস্থায় বাংলাদেশই এগিয়ে। বাংলাদেশের শতকরা ৯৯ ভাগ মানুষ স্যানিটেশন ব্যবস্থার আওতায়। মাত্র একভাগ মানুষ যাদের বাড়িতে টয়লেট ব্যবহারের সুযোগ নেই, তারাই খোলা স্থানে মলত্যাগ করেন। একটা জাতি কতটা উন্নত কতটা সভ্য তা স্যানিটেশন ব্যবস্থার হালহকিকতে উপলব্ধি করা যায়। সরকারি জরিপ অনুযায়ী ২০০৩ সালে খোলা স্থানে মলত্যাগের হার ছিল ৪২ শতাংশ। এখন তা কমে মাত্র এক শতাংশে নেমে এসেছে। যা কিনা দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলে এক যুগান্তকারী পরিবর্তন। ভারতে এখনো প্রায় ৫৯৫ মিলিয়ন মানুষ যা দেশটির মোট জনসংখ্যার অর্ধেক টয়লেট ব্যবহার করে না। পাকিস্তানে ৪১ মিলিয়ন বা দেশটির মোট জনসংখ্যার ২১ শতাংশ মলত্যাগে টয়লেট ব্যবহার করে না এবং নেপালে ১৫.৫ মিলিয়ন যা দেশটির মোট জনসংখ্যার ৫৪ শতাংশ টয়লেট সুবিধা থেকে বঞ্চিত। একমাত্র শ্রীলঙ্কা এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের মতো ভালো অবস্থানে রয়েছে। স্থানীয় সরকারমন্ত্রীর মতে, স্যানিটেশন ব্যবস্থার উন্নয়নে সরকার শুধু পলিসি তৈরি ও প্রতিশ্রুতি দেয়নি। এর বাস্তবায়নে বাজেট বরাদ্দও বৃদ্ধি করেছে। বাংলাদেশ বিশ্বের ১৯২টি দেশের সঙ্গে এ খাতে স্থায়িত্বশীল উন্নয়নের জন্য কাজ করছে। বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাকের এক জরিপে বলা হয়েছে, ২০০৬ থেকে ২০১০ সালের মধ্যে পানিবাহিত বিভিন্ন রোগ ৭ শতাংশ কমেছে। যা নির্দেশ করে স্যানিটেশন ব্যবস্থা আগের চেয়ে উন্নত হয়েছে। ২০০৩ সালের পর থেকে দেশ এ ক্ষেত্রে জোরকদমে এগিয়েছে। ১৩ বছরের ব্যবধানে দেশের ৪২ শতাংশ মানুষের স্যানিটেশন ব্যবস্থা নিশ্চিত করা নিঃসন্দেহে একটি তাক লাগানো সাফল্য। তবে এ সাফল্যে আত্মপ্রসাদ লাভের কোনো অবকাশ নেই। দেশের এক শতাংশ নাগরিকের টয়লেটের সুযোগ না থাকাও নিঃসন্দেহে এক জাতীয় লজ্জার ঘটনা। দক্ষিণ এশিয়ার সব দেশের চেয়ে বাংলাদেশ অনেক এগিয়ে এমনটি ভেবে উল্লসিত না হয়ে টয়লেটের সুযোগ-সুবিধাহীন ১৬ লাখ মানুষ যাতে ‘সভ্য সমাজের’ অংশীদার হতে পারে সে লক্ষ্যে রাষ্ট্রকে হাত বাড়াতে হবে।  এ ব্যাপারে সামাজিক সংগঠনগুলোকেও অগ্রণী ভূমিকা নিতে হবে।

সর্বশেষ খবর