সোমবার, ২৫ জুলাই, ২০১৬ ০০:০০ টা

মানহীন কাগজে পাঠ্যবই

লুটপাটের হোতাদের নিরস্ত করুন

মানহীন কাগজে মাধ্যমিক স্তরের পাঠ্যবই ছাপিয়ে সরকারের কোটি কোটি টাকা লুটপাটের প্রস্তুতি চলছে। জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের কর্তা ব্যক্তিদের একটি বিশেষ চক্রের কারসাজিতে কাগজ কেনার জন্য এমন প্রতিষ্ঠানকে নির্বাচিত করা হয়েছে যারা এখন কাগজ উৎপাদনে নেই। কাগজ উৎপাদনকারী শীর্ষ পর্যায়ের প্রতিষ্ঠানগুলোকে বাদ দিয়ে রহস্যজনকভাবে দ্বিতীয় বা তৃতীয় সারির প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে কাগজ কেনার যে প্রস্তুতি চলছে তা উদ্দেশ্যমূলক বলেই মনে করা যেতে পারে। বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউটের (বিএসটিআই) অনুমোদন নেই— এমন প্রতিষ্ঠানও আছে কাগজ কেনার তালিকায়। জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের টেকনিক্যাল কমিটি কাগজ কেনার টেন্ডার মূল্যায়নের পর ৯টি প্রতিষ্ঠানকে নির্বাচিত করে অনুমোদনের জন্য ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে পাঠিয়েছে। কমিটি এ প্রস্তাবে অনুমোদন দিলেই বিএসটিআইয়ের অনুমোদনহীন এবং কাগজ উৎপাদনে সক্ষম নয় এমন প্রতিষ্ঠান থেকে কাগজ ক্রয়ের প্রক্রিয়া শুরু হবে। মানহীন কাগজ দিয়েই ছাপা হবে দেশের মাধ্যমিক স্তরের প্রায় এক কোটি শিক্ষার্থীর পাঠ্যবই। মাধ্যমিকের বই মানহীন কাগজে ছাপা হলে প্রাথমিকের পর মাধ্যমিকের বই নিয়েও সরকারকে সমালোচনার মুখে পড়তে হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। মাধ্যমিক স্তরের প্রায় এক কোটি শিক্ষার্থীর হাতে নিম্নমানের বই তুলে দেওয়া হলে সরকারকেই কার্যত বেকায়দায় ফেলা হবে। এনসিটিবি কাগজ কেনার জন্য যেসব প্রতিষ্ঠানকে বাছাই করেছে সেগুলো সম্পর্কে যথাযথ তদন্ত হলেই কেঁচো খুঁড়তে গিয়ে সাপ বেরিয়ে পড়বে। প্রাথমিক স্তরের বই ছাপার কাজ দেশি প্রতিষ্ঠানের বদলে ভারত ও অন্যান্য দেশের প্রতিষ্ঠানকে নির্বাচিত করার প্রক্রিয়া চলায় তা সরকারের সুনামকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। মাধ্যমিক স্তরের ২৩ কোটি ৪৫ লাখ পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণে ২০ হাজার ৩০০ টন কাগজ কেনার জন্য এমন সব প্রতিষ্ঠানকে নির্বাচিত করা হয়েছে যাদের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে বিএসটিআইয়ের লোগো ব্যবহারের মামলাও রয়েছে। আমরা আশা করব এ সম্পর্কে আনীত অভিযোগগুলো যথাযথভাবে খতিয়ে দেখা হবে। নিম্নমানের কাগজ কিনে সরকারি অর্থ লুটপাটের প্রক্রিয়া বন্ধের উদ্যোগ নেওয়া হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর