মঙ্গলবার, ২৬ জুলাই, ২০১৬ ০০:০০ টা

কোরআন-সুন্নাহর আলোকে বিবাহ

মুফতি খালিদ সাইফুল্লাহ রহমানী

মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন, ‘তোমাদের মধ্যে যাদের স্বামী বা স্ত্রী নেই তাদের বিয়ে সম্পাদন কর আর তোমাদের দাস-দাসীদের মধ্যে যারা সৎ তাদেরও। তারা অভাবগ্রস্ত হলে আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে তাদের অভাবমুক্ত করে দেবেন; আল্লাহ তো প্রাচুর্যময়, সর্বজ্ঞ। (সূরা নূর-৩১)

একইভাবে হাদিসে হজরত রসুল (সা.) ইরশাদ করেন— বিবাহ আমার একটি সুন্নত, যে ব্যক্তি আমার সুন্নতের প্রতি অনীহা প্রকাশ করবে, সে আমার উম্মতের অন্তর্ভুক্ত নয়।

যে কারণে প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পর প্রয়োজনীয় সামর্থ্য থাকলে অবিলম্বে নারী-পুরুষ সবারই বিবাহ করা সুন্নত। আর এটি এমন এক সুন্নত, যা সব নবী-রসুলই করেছেন।

বৈবাহিক জীবনে প্রবেশের আগে এ সম্পর্কিত সুন্নতসমূহ সবারই জানা একান্ত কর্তব্য। তাই নিম্নে এ বিষয়ে আলোকপাত করা হলো— ১. অনাড়ম্বরপূর্ণ, সাদাসিধা যৌতুকবিহীন বিবাহ হলো সুন্নত। ২. সৎ পুণ্যবান পাত্র-পাত্রী তালাশ করে বিবাহের প্রস্তাব প্রেরণ করা সুন্নত। (মেশকাত ২/২৭)। ৩. শাওয়াল মাসে জুমার দিন, মসজিদে বিবাহ সম্পন্ন করা সুন্নত। ৪. বিবাহের কথা সমাজে প্রচার করা। বিবাহের পর সবার মধ্যে খেজুর ছিটিয়ে দেওয়া। (মেশকাত-২/২৭২)। ৫. সামর্থ্য অনুযায়ী মহর নির্ধারণ করা। (মেশকাত-২/২৭২)। ৬. বিবাহের প্রথম রাতে বাসরঘরে স্ত্রীর সঙ্গে নির্জনে মিলিত হওয়ার সময় স্ত্রীর কপালের চুলের মুঠো ধরে এই দোয়া পড়বে, ‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা খাইরাহা ওয়া খাইরামা ফিহা ওয়া আউযুবিকা মিন শারিরহা ওয়া শারিরমা ফিহা।’ (আবু দাউদ শরিফ)। ৭. স্ত্রী সহবাসের সময় এই দোয়া পড়বে ‘বিসমিল্লাহি আল্লাহুমা জান্নিবনাশ শাইত্বানা ওয়া জান্নিবিশ শাইত্বানা মা রাযাক্বতানা।’ (বুখারি-২/৭৭৬)। ৮. বাসর রাত যাপনের পর আত্মীয়স্বজন, বন্ধু-বান্ধব এবং দরিদ্রদের দাওয়াত করে অলিমা খাওয়ানো সুন্নত, এতে ব্যয়বহুল হওয়া জরুরি নয়। (বুখারি-২/৭৭৮)। সুখ্যাতি লাভ যে অলিমার উদ্দেশ্য হবে তাতে কোনো সাওয়াব পাওয়া যাবে না।

উল্লিখিত সুন্নত মোতাবেক যদি কোনো বিবাহ অনুষ্ঠিত হয় তাতে বরকত হবে, রহমত হবে এবং দুনিয়া-আখিরাতের কল্যাণের কারণ হবে। ইনশাআল্লাহ। মহান আল্লাহ আমাদের আমল করার তৌফিক দান করুন। আমিন।

লেখক : খতিব, মিজমিজি বাতানপাড়া কবরস্থান জামে মসজিদ, সিদ্ধিরগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ।

সর্বশেষ খবর