বুধবার, ২৭ জুলাই, ২০১৬ ০০:০০ টা

জঙ্গিবিরোধী অভিযান

জনসচেতনতাও গড়ে তুলতে হবে

রাজধানীর কল্যাণপুরে জেএমবির আস্তানায় অভিযান চালিয়ে গত মঙ্গলবার নয়জনকে হত্যা ও একজনকে গ্রেফতার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। কল্যাণপুর কাণ্ডে নিহতরা জঙ্গি সংগঠন জেএমবির সদস্য বলে পুলিশ সূত্রে দাবি করা হয়েছে। সোমবার রাত ১২টার পরপরই অর্থাৎ মঙ্গলবারের প্রথম প্রহরে কল্যাণপুর বাসস্ট্যান্ডসংলগ্ন জাহাজ বিল্ডিং নামের একটি বাসায় পুলিশ অভিযান চালায়। ছয়তলা ভবনের তিনতলা পর্যন্ত ওঠার পরপরই জঙ্গি সদস্যরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ও বিস্ফোরকদ্রব্য ছোড়ে। পুলিশ পাল্টা হামলা চালালে হাসান নামে এক ব্যক্তি গুলিবিদ্ধ হন। পুলিশের দাবি আহত ব্যক্তি একজন জঙ্গি। তাকে রাতেই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। রাত ৩টা পর্যন্ত জঙ্গিদের সঙ্গে পুলিশের গুলিবিনিময় চলে। খবর পেয়ে র‌্যাব, সোয়াট ও ডিবি পুলিশ অভিযানকারীদের সঙ্গে যুক্ত হয়। ভোর ৫টা ৫০ মিনিটে পুলিশ জঙ্গিদের বিরুদ্ধে আবারও অভিযান শুরু করে। এক পর্যায়ে গুলিবর্ষণ করতে করতে জঙ্গিরা দরজা খুলে পালানোর চেষ্টা করলে পুলিশের গুলিতে নয় জঙ্গি নিহত হয়। রাজধানীতে জঙ্গি আস্তানায় পুলিশের হানা এবং নয় জঙ্গিকে হত্যা নিঃসন্দেহে এক বড় সাফল্য। তবে একই সঙ্গে এ ঘটনা উদ্বেগেরও। জঙ্গিরা যে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় আস্তানা গেড়েছে কল্যাণপুরে জঙ্গি ঘাঁটির আবিষ্কার তারই প্রমাণ। এর আগেও রাজধানীতে বিভিন্ন জঙ্গি আস্তানায় অভিযান চালানো হয়েছে। বস্তি এলাকা শুধু নয় অভিজাত এলাকায়ও জঙ্গি আস্তানা বাড়তি উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে। আমরা আশা করব জননিরাপত্তার স্বার্থে রাজধানীতে যেসব জঙ্গি আস্তানা গড়ে উঠেছে সেগুলো গুঁড়িয়ে দিতে সর্বাত্মক চেষ্টা চালানো হবে। জঙ্গিবাদের হোতাদের আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে নেওয়া হবে কার্যকর ব্যবস্থা। মানবতাবিরোধী এই চক্রের হুমকি মোকাবিলায় জনসচেতনতা গড়ে তোলার কোনো বিকল্প নেই এবং এ ব্যাপারে যথাযথ উদ্যোগ নেওয়া দরকার। বর্ণচোরা এই সন্ত্রাসীরা ধর্মকে তাদের অপকর্মের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে। এ অপকৌশল নস্যাৎ করতে বকধার্মিকদের আসল চেহারা জনগণের কাছে উন্মোচন করতে আলেম সমাজকে কাজে লাগাতে হবে। জঙ্গি নামের ঘৃণ্য পিশাচরা যাতে কোথাও ঠাঁই না পায় তা নিশ্চিত করতে সবাইকেই সতর্ক থাকতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর