বুধবার, ২৭ জুলাই, ২০১৬ ০০:০০ টা

পানিবন্দীর সংখ্যা বাড়ছে

দুর্গতদের পাশে দাঁড়াতে হবে

বন্যা পরিস্থিতির অবনতি ঘটছে এবং ইতিমধ্যেই পানিবন্দী হয়ে পড়েছে উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন উপদ্রুত এলাকার অন্তত ১০ লাখ মানুষ। টানা বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে আসা ঢলে নদ-নদীতে যেভাবে পানি বাড়ছে তাতে আশঙ্কা করা হচ্ছে বন্যার ছোবল আরও বিস্তীর্ণ এলাকায় ছড়িয়ে পড়তে পারে। বেশকিছু এলাকার বন্যা নিরোধ বাঁধ ভেঙে পড়েছে পানির চাপে। বন্যা উপদ্রুত এলাকায় খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির সংকটও দেখা দিয়েছে। চারদিকে পানি আর পানির মধ্যেও বিশুদ্ধ পানির অভাবে পানিবাহিত রোগবালাইয়ে ভুগছে সাধারণ মানুষ। বন্যাকবলিত এলাকার রাস্তাঘাট ডুবে যাওয়ায় তাদের জন্য ত্রাণ পাঠানো কিংবা স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা দুই-ই কঠিন হয়ে দাঁড়াচ্ছে। শিক্ষার্থীদের পক্ষে স্কুলে যাওয়া দূরের কথা ঘরের বাইরে যাওয়াও অনিরাপদ হয়ে উঠেছে। বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ। ভাটির দেশ। স্বভাবতই এ দেশে বন্যা প্রতিবছর আঘাত হানবে এটি একটি স্বাভাবিক ঘটনা। চলতি বছর অতিবৃষ্টি কিংবা উজান থেকে আসা ঢলের পরিমাণ মাত্রাতিরিক্ত না হলেও বন্যা ছোবল হেনেছে নদ-নদীর পানি ধারণক্ষমতা হ্রাস পাওয়ার কারণে। বন্যার অভিশাপ থেকে রক্ষা পেতে হলে নদ-নদীর পানি ধারণক্ষমতা বাড়াতে হবে। এটি সম্ভব হলে বন্যার হাত থেকে যেমন অনেকাংশে রেহাই পাওয়া যাবে তেমনি নদ-নদীতে নাব্য থাকায় নৌপথে পণ্য ও যাত্রী পরিবহনের সুবিধা পাওয়া যাবে। নদ-নদীতে মাছের চাষ দেশবাসীর আমিষ চাহিদা পূরণে সহায়ক হবে। এ বিষয়গুলো মনে রাখার পাশাপাশি লাখ লাখ বন্যাপীড়িত মানুষের এ মুহূর্তে সমস্যার সমাধানে তাদের পাশে দাঁড়াতে হবে। বন্যা উপদ্রুত এলাকায় ত্রাণ কাজ এখনো শুরু হয়নি বললেই চলে। দুর্গত মানুষের পাশে শুধু সরকার নয়, সমাজের অবস্থাসম্পন্নদেরও সহায়তার হাত বাড়াতে হবে। তাদের জন্য খাবার, বিশুদ্ধ পানি এবং ওষুধপত্র পৌঁছানোর ব্যবস্থা করতে হবে। পানিবন্দী মানুষকে নিরাপদ এলাকায় সরিয়ে নিতেও নিতে হবে উদ্যোগ। বন্যাদুর্গত মানুষের কল্যাণে বেসরকারি সংস্থাগুলোকেও সক্রিয় হতে হবে। তারা যে সত্যিকারভাবেই মানুষের কল্যাণে নিবেদিত তা প্রমাণে এটিই প্রকৃষ্ট সময়।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর