সোমবার, ১ আগস্ট, ২০১৬ ০০:০০ টা

বাউল আখড়ায় হামলা

অপরাধীদের আইনের আওতায় আনুন

চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদায় গোবিন্দপুরে বাউল আস্তানায় আবারও হামলা চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। শুক্রবার রাতে সংঘবদ্ধ দুর্বৃত্তরা বাউলদের আখড়ায় চড়াও হয় এবং দুই বাউলকে মারধর করে তাদের চুল কেটে দেয়। এক বাউলের স্ত্রীকে ঘরের মধ্যে হাত-পা-চোখ বেঁধে ফেলে রাখে তারা। তারপর আখড়ার দুটি ঘর পুড়িয়ে দেয়। এর আগে একই জেলার জীবননগর উপজেলার একতারপুরে গত ১৬ জুলাই বাউল আখড়ায় হামলা চালিয়ে তিন বাউলকে কুপিয়ে জখম করে দুর্বৃত্তরা। ঠিক তার দুই সপ্তাহ পর দামুড়হুদায় আরেক বাউল আখড়ায় হামলার ঘটনা বাউলদের মধ্যে নিরাপত্তাহীনতার সৃষ্টি করেছে। বাউলদের অভিযোগ দুর্বৃত্তরা তাদের গলায় ছুরি ধরে জবাই করারও হুমকি দেয়। চুয়াডাঙ্গায় পর পর দুটি বাউল আখড়ায় দুর্বৃত্তদের হামলার সঙ্গে জঙ্গিবাদের সম্পর্ক রয়েছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। জঙ্গিবাদীরা ধর্মীয় উগ্রপন্থায় বিশ্বাসী এবং বাউলদের কার্যকলাপকে তারা বিদ্বেষের চোখে দেখে। স্মর্তব্য, দামুড়হুদায় গত শুক্রবার বাউলদের যে আখড়ায় দুর্বৃত্তরা হামলা চালিয়েছে সেটির স্বত্বাধিকারী জুলমত শাহ নামের এক বাউল। ছয় বছর আগে তিনি তিন বিঘা জমির ওপর ওই আখড়াটি গড়ে তোলেন তার গুরু চুয়াডাঙ্গার দরবেশ হোসেন আলী শাহের নামে। প্রতিবছর বৈশাখ, আষাঢ় ও ফাল্গুন মাসে তারা আখড়ায় ওরসের আয়োজন করেন এবং তাতে শত শত বাউল যোগ দেন। গোবিন্দপুরের বাউল আখড়ায় দুুর্বৃত্তদের হামলা ও অগ্নিসংযোগ ধারে কাছের বিভিন্ন গ্রামে ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে। এলাকাবাসীর কাছে বাউলরা ছিলেন প্রিয়জনের মতো। সংঘাত হানাহানি ও জাগতিক লোভ-লালসার বাইরে অবস্থান করাকে যে বাউলরা কাম্য মনে করে তাদের ওপর দুর্বৃত্তদের হামলা চুয়াডাঙ্গা জুড়ে উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। দামুড়হুদা থানার পুলিশ বলেছে তারা দুর্বৃত্তদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনার চেষ্টা করছে। আমরা আশা করব পুলিশের এ প্রতিশ্রুতি কথার কথা হয়ে থাকবে না। শত শত বছর ধরে বাউল সম্প্রদায়ের সদস্যরা নিরাপদে জীবনযাপন করলেও হঠাৎ কোনো অশুভ শক্তির জন্য তারা হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে, তা খুঁজে বের করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সাধ্যমতো চেষ্টা করবে এমনটিই কাঙ্ক্ষিত। বাউলদের নিরাপত্তায় বাড়তি নজর দেওয়ার বিষয়টি প্রাসঙ্গিকতার দাবিদার।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর