বৃহস্পতিবার, ৪ আগস্ট, ২০১৬ ০০:০০ টা

সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ ইসলামের জন্য ক্ষতিকর

হাফেজ মোহাম্মদ ওমর ফারুক

ইসলাম কোনোভাবেই জঙ্গিবাদ সমর্থন করে না। যারা জঙ্গিবাদ তথা সন্ত্রাসী কাজে জড়িত তারা না বুঝেই এটাকে দীনের কাজ মনে করছে। জঙ্গিবাদের কারণে বিশ্বের মানুষ এখন ইসলামের নাম শুনতে ভয় পায়। অমুসলমানরা ইসলাম গ্রহণ তো দূরের কথা বরং ইসলাম সম্পর্কে ঘৃণা করতে শিখছে। সাধারণ মানুষ দাড়ি-টুপিওয়ালা আলেম ও আমলদার লোকদের দেখলে ভয় পাচ্ছে। তাদের গাড়িতে উঠাতে ও কোথাও প্রবেশ করতে দেখলে দ্বিধায় পড়ে যাচ্ছে। এমনকি মসজিদগুলোতেও চেকিংয়ের মাধ্যমে নামাজিদের প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে। এর ফলে মসজিদে নামাজির সংখ্যা কমে যাচ্ছে। অনেকেই দাড়ি-টুপি রাখা পরিহার করছে। তাহলে এর দ্বারা ইসলামের কি কোনো লাভ হচ্ছে?  জঙ্গিদের বলব, ইসলামর ক্ষতি করে মানুষকে পশুর মতো হত্যা করে এবং আপনারা নিজেরা নিজেদের জীবনকে ধ্বংস করে দিয়ে কীভাবে জান্নাতে যেতে চান? জান্নাত কি এতই সোজা? বাংলাদেশ তথা বিশ্বের কোনো সর্বজনমান্য আলেম জঙ্গিবাদের সঙ্গে একমত হতে পারেননি। কিছু উদ্ভট নামধারী আলেম যাদের ইলমের সঙ্গে সম্পর্ক নেই, যারা ইহুদি, নাসারা ও মুশরিকদের দালাল, তারা তাদের টাকা খেয়ে এবং তাদের ইন্ধনে আপনাদের মন-মস্তিষ্ককে ঘুরিয়ে আপনাদের দ্বারা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করাচ্ছে। তাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে ইসলাম ও মুসলমানদের সারা পৃথিবী থেকে ধ্বংস করে দেওয়া। তাই তো কোরআনে ইরশাদ হচ্ছে— সেই সব জালেমদের ওপর আল্লাহর লা’নত, যারা আল্লাহর সরল জীবন-ব্যবস্থায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে এবং তাকে জটিল ও বক্র করে তুলতে চেষ্টা করে, আর তারাই তো আখেরাত অস্বীকারকারী। (সূরা হুদ-১৮-১৯) এই জন্য সরকারের ওপর দায়িত্ব হয়ে গেছে যে, এসব লোকের বিরুদ্ধে জিহাদ ঘোষণা করা। কারণ মহান আল্লাহ বলেন, আর তোমরা তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ কর, যে পর্যন্ত ফিতনা ও বিপর্যয়ের অবসান না হয় এবং দীন শুধু আল্লাহর জন্যই হয়ে যায়। অতঃপর তারা যদি বিরত হয়, তাহলে জালিমদের ছাড়া (কারোর ওপর) কোনো কঠোরতা নেই। (সূরা বাকারা-১৯৩) আর এই কাজটা এখনই করা উচিত, কেননা, কোরআনের অন্য স্থানে আল্লাহ পাক সতর্ক করে বলেছেন, তোমরা যদি এ দায়িত্ব পালন না কর তাহলে পৃথিবীতে বড় ধরনের ফিতনা ও বিপর্যয় দেখা দিবে। (সূরা আনফাল-৭৩) মূলত আল্লাহর বাণীকে বিজয় ও সমুন্নত করার চেষ্টাকেই জিহাদ বলে। কেননা মহানবী (সা.) বলেছেন, যে আল্লাহর বাণীকে বিজয় ও সমুন্নত করার জন্য লড়াই করবে, সে আল্লাহর পথের মুজাহিদ। (বুখারি) কিন্তু যারা জঙ্গিবাদের নামে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করছে, তারা আল্লাহর বাণীকে বিজয় ও সমুন্নত করার চেষ্টা করছে না। বরং দীনকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। আজ জঙ্গিবাদের কারণে সারা বিশ্বে ইসলামের বিপর্যয় দেখা দিচ্ছে। কেননা রসুল (সা.) কখনো গোপনে জিহাদ করেননি, গোপনে দাওয়াত দিয়েছেন, প্রকাশ্যে জিহাদ করেছেন। আর আক্রমণের মাঝখানেও কেউ যদি আত্মসমর্পণ করতেন তাহলে রসুল (সা.) তাকে নিরাপত্তা দিতেন। আল্লাহতায়ালা আমাদের প্রিয় মাতৃভূমিকে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদমুক্ত রাখুন। আমিন।

সর্বশেষ খবর