রবিবার, ৭ আগস্ট, ২০১৬ ০০:০০ টা

দক্ষিণাঞ্চলেও বন্যার ছোবল

দুর্গতদের পাশে দাঁড়াতে হবে

দেশের উত্তরাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও দক্ষিণাঞ্চলে অবনতি ঘটেছে। দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় পানিবন্দী হয়ে পড়েছে লাখ লাখ মানুষ। বরিশাল, বরগুনা, শরীয়তপুরের বিভিন্ন নদীতে যেভাবে পানি বাড়ছে তাতে আশঙ্কা করা হচ্ছে, বন্যার ছোবল আরও বিস্তীর্ণ এলাকায় ছড়িয়ে পড়তে পারে। সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীতে পানির উচ্চতা কমলেও হাজার হাজার মানুষ এখনো পানিবন্দী। জেলার বিভিন্ন উপজেলায় পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয়েছে নদীভাঙন। ফরিদপুরে পানি কমলেও বেড়েছে দুর্ভোগ। লাখো মানুষ এখনো পানিবন্দী। বন্যা উপদ্রুত এলাকায় খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির সংকটও দেখা দিয়েছে। চারদিকে পানি আর পানির মধ্যেও বিশুদ্ধ পানির অভাবে পানিবাহিত রোগবালাইয়ে ভুগছে সাধারণ মানুষ। বন্যাকবলিত এলাকার রাস্তাঘাট ডুবে যাওয়ায় ত্রাণ পাঠানো কিংবা স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা দুই-ই কঠিন হয়ে দাঁড়াচ্ছে। বেশির ভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্যায় ডুবে যাওয়ায় শিক্ষার্থীদের পক্ষে স্কুলে যাওয়া অসম্ভব হয়ে পড়েছে। বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ। ভাটির এই দেশে বন্যা আঘাত হানবে এটি একটি স্বাভাবিক ঘটনা। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে মাঝারি ধরনের বৃষ্টিতেই নদ-নদীর পানি ধারণ ক্ষমতা হ্রাস পাওয়ার কারণে বন্যা ছোবল হানার সুযোগ পাচ্ছে। বন্যার অভিশাপ থেকে রক্ষা পেতে হলে নদ-নদীর পানি ধারণ ক্ষমতা বাড়াতে হবে। এটি সম্ভব হলে বন্যার হাত থেকে রেহাই যেমন পাওয়া যাবে তেমনি নদ-নদীতে নাব্য থাকায় নৌপথে পণ্য ও যাত্রী পরিবহনের সুবিধা পাওয়া যাবে। নদ-নদীতে মাছের চাষ সাধারণ মানুষের আমিষ চাহিদা পূরণে সহায়ক হবে। এ বিষয়গুলো মনে রাখার পাশাপাশি লাখ লাখ বন্যাপীড়িত মানুষের এ মুহূর্তের সমস্যার সমাধানে তাদের পাশে দাঁড়াতে হবে। বন্যা উপদ্রুত এলাকায় ত্রাণ কাজ চললেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। দুর্গত মানুষের ত্রাণে সরকারের পাশাপাশি সমাজের অবস্থাসম্পন্নদেরও সহায়তার হাত বাড়াতে হবে। তাদের জন্য খাবার, বিশুদ্ধ পানি এবং ওষুধপত্র পৌঁছানোকে মানবিক কর্তব্য বলে ভাবতে হবে। বন্যাদুর্গত মানুষের কল্যাণে বেসরকারি সংস্থাগুলোকেও সক্রিয় হতে হবে। তারা যে সত্যিকারভাবেই মানুষের কল্যাণে নিবেদিত তা প্রমাণে এটিই প্রকৃষ্ট সময়।  রাজনৈতিক দলগুলোকেও বন্যা ত্রাণে এগিয়ে আসতে হবে মানবিক চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে।

সর্বশেষ খবর