মঙ্গলবার, ১৬ আগস্ট, ২০১৬ ০০:০০ টা

বিমানবন্দরের অব্যবস্থা

সুনাম পুনর্গঠনের উদ্যোগ নিন

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর তার ‘আন্তর্জাতিক’ তকমার প্রতি যে সুবিচার করতে পারছে না তা একটি প্রতিষ্ঠিত সত্যি। এ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের মানি চেঞ্জারগুলোর গ্রাহক পাকড়াওয়ের হালচাল কোনো কোনো ক্ষেত্রে গুলিস্তানের হকারদেরও হার মানায়। বিমানবন্দরে বিভিন্ন এয়ারলাইনসের বোর্ডিং কার্ড দেওয়ার কম্পিউটার হুটহাট করে যখন-তখন নষ্ট হয়ে যায়। উড়োজাহাজ থেকে মালামাল লোড-আনলোডের পর্যাপ্ত উপকরণ না থাকায় যাত্রীদের ভোগান্তির শেষ থাকে না। মালামালসহ যাত্রীদের দেখামাত্র ট্যাক্সিচালকদের হাঁকডাক চলে আসছে বছরের পর বছর ধরে। যা দেখে বিদেশিরা প্রতিনিয়ত বিব্রতকর অবস্থায় পড়ছেন। আশপাশের অনেক দেশের বিজনেস ও ফার্স্ট ক্লাসের জন্য ইমিগ্রেশনে আলাদা লাইন থাকলেও শাহজালালে তা অনুপস্থিত। বিদেশ থেকে ফেরার পথে বিজনেস ক্লাসের যাত্রীরা আলাদা লাইনের সুযোগ পেতেন সার্ক দেশের নাগরিকদের সঙ্গে। সেখান থেকেও কিছু দিন আগে বিজনেস ক্লাস মুছে দেওয়া হয়েছে। রানওয়েতেও সমস্যার যেন শেষ নেই। এলোপাতাড়িভাবে পড়ে থাকে কার্গোর মালামাল। ফলে বোর্ডিং ব্রিজ থেকে আসা-যাওয়ার পথে ফ্লাইটগুলো বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছে। শাহজালালে প্রবাসী কর্মজীবীদের হয়রানির শিকার হতে হয় নানা অজুহাতে। অধিকাংশ শ্রমিক আসা-যাওয়ার পথে ইমিগ্রেশন কার্ড পূরণ করতে পারেন না। প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয় শ্রমিকদের সহায়তা দেওয়ার প্রতিশ্রুতির ফুলঝুরি ছড়ালেও অগ্রগতি কার্যত শূন্য। ছোটখাটো ভুলের অজুহাতে মধ্যপ্রাচ্যগামী এয়ারলাইনসগুলো শ্রমিকদের বৈধ টিকিট থাকার পরও বোর্ডিং কার্ডের সময় ঝামেলা করে। আন্তর্জাতিক এভিয়েশন আইন অনুযায়ী উড়োজাহাজ থেকে একজন যাত্রী বিমানবন্দরে নামার পৌনে এক ঘণ্টার মধ্যে তার লাগেজ হাতে পৌঁছানোর কথা থাকলেও এ আইনের কোনো অনুসরণ নেই দেশের বৃহত্তম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে। যাত্রীদের অনেকে লাগেজ না পেয়ে শেষ পর্যন্ত আশা ছেড়ে দেন এমন নজির অসংখ্য। শাহজালাল বিমানবন্দর দেশের ১৬ কোটি মানুষের সুনামের জন্য বিড়ম্বনা সৃষ্টি করছে নানা অব্যবস্থাপনার কারণে।  সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার উদ্যোগ থাকলেও তা সফল হতে পারছে না ঘাপটি মেরে থাকা কায়েমী স্বার্থবাদীদের কারণে। দেশের বৃহত্তম বিমানবন্দরের সুনাম পুনর্গঠনে এসব কুচক্রীকে নিরস্ত করার উদ্যোগ নিতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর