বৃহস্পতিবার, ১৮ আগস্ট, ২০১৬ ০০:০০ টা

পায়রায় রেল নেটওয়ার্ক

দক্ষিণাঞ্চলের উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে

দেশের তৃতীয় সামুদ্রিক বন্দর পায়রাকে রেলওয়ে নেটওয়ার্কের আওতায় আনার উদ্যোগ নিঃসন্দেহে এক আশাজাগানিয়া খবর। এর ফলে পায়রাসহ দক্ষিণাঞ্চলের এক বিরাট অংশে যাত্রী ও পণ্য পরিবহনের সুযোগ সৃষ্টি হবে। রেল যোগাযোগের কারণে সংশ্লিষ্ট এলাকার আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রেও অনুভূত হবে অগ্রগতির ছোঁয়া। বাংলাদেশ ভূখণ্ডে রেল যোগাযোগ স্থাপিত হয়েছিল সেই ব্রিটিশ শাসনামলে। এ মুহূর্তে দেশের সাতটি বিভাগের মধ্যে একমাত্র বরিশাল বিভাগই রেল যোগাযোগের বাইরে। এ বিচ্ছিন্নতার অবসানেই ফরিদপুরের ভাঙ্গা থেকে বরিশাল হয়ে পটুয়াখালীর পায়রা সমুদ্রবন্দর পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ভাঙ্গা থেকে বরিশাল পর্যন্ত ১০০ কিলোমিটার রেললাইন স্থাপন করা হবে। রেলপথের পুরো কাজ তদারকি ও বাস্তবায়ন করবে রেলপথ মন্ত্রণালয়। পরবর্তীতে এই রেলপথ পায়রা সমুদ্রবন্দর পর্যন্ত সম্প্রসারণ করা হবে। এ রেলপথ নির্মাণে প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ৯ হাজার ৯৯০ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকারের নিজস্ব অর্থায়ন ১ হাজার ৯৯৮ কোটি এবং বিদেশি প্রকল্প সাহায্য থেকে ৭ হাজার ৯৯২ কোটি টাকা পাওয়া যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বে রেলপথটি নির্মাণের প্রস্তাব করা হয়েছে এবং এর বাস্তবায়নকাল ধরা হয়েছে ২০১৭ সালের জুলাই থেকে ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত। ২০১৪ সালের ২৩ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রেলপথ মন্ত্রণালয় পরিদর্শনকালে ভাঙ্গা থেকে বরিশাল পর্যন্ত রেললাইন নির্মাণ করে পায়রা সমুদ্রবন্দরের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনের নির্দেশনা দেন। নির্মীয়মান পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে রেলপথ নির্মাণের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। পদ্মা সেতুর মাধ্যমে ঢাকা থেকে বরিশালের দূরত্ব কমে দাঁড়াবে প্রায় ১৮৫ কিলোমিটার এবং ভ্রমণের সময় লাগবে মাত্র ৪ ঘণ্টা। এ রেললাইন নির্মিত হলে খুলনা, যশোর, বেনাপোল, দর্শনা, মংলা পোর্টের সঙ্গে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ সব এলাকায় নিবিড় রেল যোগাযোগ গড়ে উঠবে। উন্নয়নের ক্ষেত্রে পিছিয়ে থাকা দক্ষিণাঞ্চলের জন্য রেল যোগাযোগ আশীর্বাদ হিসেবে বিবেচিত হবে। দক্ষিণাঞ্চলে দুটি সামুদ্রিক বন্দরের সুবিধা থাকায় সন্নিহিত এলাকাগুলোতে বিদেশি বিনিয়োগ উত্সাহিত হবে। দেশের সব অঞ্চলের সুষম উন্নয়নেও এ কর্মকৌশল অবদান রাখবে বলেও আশা করা হচ্ছে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর