রবিবার, ২১ আগস্ট, ২০১৬ ০০:০০ টা

মাহরাম পুরুষের সঙ্গে নারীকে হজে যেতে হবে

মাওলানা মুহাম্মদ আশরাফ আলী

হজ সামর্থ্যবান সব মুমিনের জন্য ফরজ। মুমিন বলতে এ ক্ষেত্রে পুরুষ ও নারী নির্বিশেষে সবার কথা বলা হয়েছে। তবে নারী একা হজ পালন করতে পারবেন না। তাকে মাহরাম পুরুষের সঙ্গে যেতে হবে। মাহরাম বলতে বোঝায় সেসব পুরুষকে যাদের সঙ্গে দেখা দেওয়া জায়েজ। যেমন স্বামী, বাবা, আপন ভাই, আপন চাচা-মামা, পুত্র ইত্যাদি। বর্তমানে অনেক নারী মাহরাম ছাড়াই হজব্রত পালন করেন। শরীয়তের দৃষ্টিতে এটি জায়েজ নয়। বুখারি ও মুসলিম শরিফের হাদিসে উল্লেখ করা হয়েছে, রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসালাম বলেছেন, কোনো নারী যেন এক দিন ও এক রাতের পথ মাহরামের সঙ্গে ছাড়া ভ্রমণ না করে। দূরবর্তী স্থানের সাধারণ ভ্রমণেও যেহেতু নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনায় এনে মাহরাম পুরুষের সঙ্গে ভ্রমণের তাগিদ দেওয়া হয়েছে সেহেতু হজের সফরেও নারীর সঙ্গে মাহরাম পুরুষ থাকা জরুরি। বুখারি শরিফের হাদিসে এ বিষয়টি স্পষ্ট করা হয়েছে। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বর্ণনা করেন, একদা নবী করিম (সা.) ঘোষণা করলেন, কোনো নারী স্বীয় মাহরামকে সঙ্গে না নিয়ে সফরে বের হবে না এবং কোনো নারীর সন্নিকটে কোনো পর পুরুষ আসতে পারবে না, যদি তার সঙ্গে ওই স্ত্রী লোকটির কোনো মাহরাম না থাকে। এ ঘোষণা শুনে এক ব্যক্তি আরজ করল, ইয়া রসুলুল্লাহ, অমুক জেহাদের জন্য সংগৃহীত সৈন্যদলে যোগদানের জন্য আমি প্রস্তুত হয়েছি, এমতাবস্থায় আমার স্ত্রী হজে যাওয়ার ইচ্ছা করেছে। হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসালাম বললেন, তুমি স্ত্রীর সঙ্গে হজে গমন কর। উপরোক্ত হাদিসে স্পষ্ট করা হয়েছে নারীদের হজে মাহরাম থাকতে হবে। এক্ষেত্রে উপেক্ষার কোনো সুযোগ নেই। হজ ফরজ ইবাদত। সেহেতু হজ পালনের জন্য স্বামীর অনুমতি নেওয়ার বাধ্যবাধকতা নেই। মাহরাম অর্থাৎ বাবা, আপন ভাই, পুত্র সঙ্গে থাকলে স্বামীর অনুমতি ছাড়াই হজে যাওয়া যাবে। তবে স্বামীর সঙ্গে আলোচনা করে তাকে সম্মত করে হজে যাওয়াই উত্তম। স্বামীর মৃত্যুর ইদ্দত অথবা তালাকের ইদ্দত পালনকালে নারীরা হজে যেতে পারবেন না। তবে সন্তানসম্ভবা অবস্থায় নারীরা হজ করতে পারবেন। হজের ইহরাম বাঁধার সময় নারীর মাসিক শুরু হলে গোসল করে ইহরাম বাঁধবেন। এ সময় তাওয়াফ ছাড়া হজের অন্যসব আরকান পালন করা যাবে।  মাসিক শেষ হলে গোসল করে তাওয়াফ করতে হবে। এতে  তাওয়াফ বিলম্বিত হলে গোনাহ হবে না।

লেখক : ইসলামী গবেষক।

সর্বশেষ খবর