মঙ্গলবার, ২৩ আগস্ট, ২০১৬ ০০:০০ টা

ঝড়বৃষ্টির ক্ষয়ক্ষতি

কৃষি পুনর্বাসনের উদ্যোগ নিন

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের প্রভাবে গত রবিবার সারা দেশে ঘূর্ণিঝড়, বজ্রপাত ও ট্রলারডুবিতে ১৫ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। টানা বৃষ্টিপাতে চট্টগ্রাম, খুলনাসহ উপকূলীয় বিভিন্ন জনপদে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। দেশের দক্ষিণাঞ্চলের বিপুলসংখ্যক মাছের ঘের ভেসে যাওয়ায় কয়েকশ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন মাছ চাষিরা। ঘূর্ণিঝড় ও টানা বৃষ্টিপাতে সবজি ও তরিতরকারির খামার তছনছ হয়ে যাওয়ায় অচিরেই বাজারে তার বিরূপ প্রতিক্রিয়া পড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বাংলাদেশ দুর্যোগপ্রবণ আবহাওয়ার দেশ। অতিবৃষ্টি, বন্যা, ঘূর্ণিঝড় এ দেশের মানুষের দৈনন্দিন জীবনযাপনেরই অনুষঙ্গ। এ বছর বন্যার ছোবলের পাশাপাশি টর্নেডো-ঘূর্ণিঝড় ও অতিবৃষ্টিপাত জনজীবন বিপর্যস্ত করে তুলেছে।  প্রবল বৃষ্টিপাতের কাছে খুলনা ও চট্টগ্রামের নাগরিক জীবন জিম্মি হয়ে পড়েছিল অসহায়ভাবে। একই দিন টর্নেডোর আঘাতে ফরিদপুর, মুন্সীগঞ্জ, নওগাঁ ও টাঙ্গাইলে সহস্রাধিক ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ধ্বংস হয়েছে শত শত গাছপালা। বৈরী আবহাওয়ায় দেশের যোগাযোগব্যবস্থাও বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিল ভয়াবহভাবে। পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া ও শিমুলিয়া-কাওড়াকান্দি রুটের ফেরি চলাচল এবং চট্টগ্রাম-রাঙামাটি সড়ক যোগাযোগ পাহাড় ধসে বন্ধ হয়ে পড়ায় হাজার হাজার মানুষ চরম দুর্ভোগের শিকার হয়। দেশের কৃষি অর্থনীতির জন্য বড় ধরনের বিপর্যয় সৃষ্টি করেছে রবিবারের ঝড়বৃষ্টি-দুর্যোগের ঘটনা। দ্রুত কৃষি পুনর্বাসনের উদ্যোগ না নিলে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের কোমর সোজা করে দাঁড়াতে যেমন কষ্ট হবে তেমন শাক-সবজির অধিক মূল্যে ভোক্তাদের ভোগান্তি বাড়বে। রবিবারের দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত সবজি ও মাছ চাষিদের পুনর্বাসনে সহজ শর্তে ঋণদানের উদ্যোগ নিতে হবে। ক্ষতিগ্রস্ত ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট মেরামতেরও উদ্যোগ নিতে হবে। বাংলাদেশ প্রাকৃতিক দুর্যোগের দেশ— এ বাস্তবতা কাটিয়ে ওঠার কোনো উপায় নেই। তবে দুর্যোগ যাতে সহনীয় মাত্রায় হাজির হয় তা নিশ্চিত করতে নদ-নদী-জলাশয়ের পানি ধারণক্ষমতা বাড়াতে হবে। এটি সম্ভব হলে অতিবৃষ্টিজনিত জলাবদ্ধতা কিংবা উজান থেকে আসা ঢলে প্রতি বছর যে বন্যা হয় তার

প্রকোপ অনেকাংশে হ্রাস করা সম্ভব হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর