রবিবার, ২৮ আগস্ট, ২০১৬ ০০:০০ টা

মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও এরশাদ প্রসঙ্গ

সুনীল শুভ রায়

মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও এরশাদ প্রসঙ্গ

বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েই বলতে চাই, ২৩ আগস্ট ’১৬ তারিখে বাংলাদেশ প্রতিদিন পত্রিকার খোলা কলামে- ‘শ্রদ্ধেয়া ডা. মিলনের মা’ শিরোনামের নিবন্ধের প্রথম অনুচ্ছেদের মধ্যে আপনি কিছু অসত্য কথা বলেছেন। আপনার বক্তব্যটি এমন যে, ডা. মিলনের মা- আইনবিদ ড. কামাল হোসেনের জাতীয় ঐক্য প্রচেষ্টার অনুষ্ঠানে বক্তব্য প্রদানকালে জি এম কাদের সাহেবকে মুক্তিযোদ্ধা বলেছেন। আপনি লিখেছেন, ‘তিনি কোনো মুক্তিযোদ্ধা নন, মুক্তিযুদ্ধের আশপাশেও ছিলেন না। তার ভাই হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ছিলেন পাকিস্তানে।

মুক্তিযুদ্ধের প্রতি সহানুভূতিশীলদের শাস্তি দেওয়া ছিল তার কাজ। হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের শাসনামলে আপনার প্রাণের ধন ডা. মিলন নিহত হয়েছেন। ভাই হিসেবে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের কাজের দায় নিশ্চয় জনাব জি এম কাদের নেবেন না। কিন্তু জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান হিসেবে তাকে অবশ্যই কিছু দায়-দায়িত্ব নিতে হবে।’

জনাব কাদের সিদ্দিকীর এই বক্তব্যের সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কিছু আলোচনার অবতারণা করতে হচ্ছে। হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ সব সময় বলে আসছেন, ‘আমার জীবনের সবচেয়ে বড় দুঃখ, আমি মাত্র এক মাস সময়ের জন্য মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করতে পারিনি। কারণ মুক্তিযুদ্ধ শুরু হওয়ার এক মাস আগে আমাকে করাচিতে বদলি করা হয়েছিল। সেখানে কাজে যোগদানের পর স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হয় এবং সব বাঙালি সেনা অফিসার, জওয়ানদের বন্দী করা হয়।’ কাদের সিদ্দিকী নিশ্চয় অবগত আছেন যে, তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তানি সশস্ত্র বাহিনীর কোনো বাঙালি সদস্যমুক্ত ছিলেন না।

হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ তাদের মধ্যেই তো একজন। যিনি নিজে বন্দী থাকেন, তিনি কীভাবে মুক্তিযুদ্ধের সহানুভূতিশীলদের শাস্তি দিতে পারেন? আপনি সাক্ষ্য, প্রমাণ এবং বাস্তবতাবিবর্জিত কথা বলবেন, তা তো মেনে নেওয়া যায় না।

হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ একাই শুধু পাকিস্তান থেকে স্বাধীন বাংলাদেশে ফিরে আসেননি, তার সঙ্গে আটকেপড়া আরও বাঙালি সেনা অফিসার, সৈনিক এবং বেসামরিক নাগরিক দেশে ফিরে এসেছেন।

তাদের মধ্যে কোনো একজন কী বলেছিলেন, এরশাদ সাহেব মুক্তিযুদ্ধের সহানুভূতিশীলদের শাস্তি দিয়েছেন। এ ধরনের অবাস্তব কথাটি আপনি কীভাবে বললেন? তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তানে আটকেপড়া বাঙালিদের অবস্থা সম্পর্কে আপনিও প্রত্যক্ষদর্শী নন—আমিও নই। আপনি কোনো কথা জানলে বা শুনলে তার তথ্য-প্রমাণ নিয়ে কথা বলবেন—সেই সঙ্গে বাস্তব মিলিয়ে দেখবেন, আপনার কাছে এটাই তো আশা করব।

আপনি বঙ্গবীর উপাধিতে ভূষিত। জাতির জনকের প্রতি আপনি কতটা শ্রদ্ধাশীল তা বলার অপেক্ষা রাখে না। তার জন্য আপনি আমার কাছে নমস্বঃ। সেই জাতির জনক কীভাবে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে মূল্যায়ন করেছেন সে কথা আপনাকে স্মরণ করতে হবে। পোপের চেয়ে বড় ক্যাথলিক যেমন কেউ হয় না— বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের চেয়েও বড় স্বাধীনতা সংগ্রামী এ দেশে আর কেউ হতে পারে না। যার নির্দেশে এ দেশের মানুষ মুক্তির জন্য জীবনপণ যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছে। তিনি কী পাকিস্তানে আটকেপড়া বাঙালি সৈনিকদের সম্পর্কে জানতেন না! যদি তার কাছে কোনো রিপোর্ট বা তথ্য থাকত তাহলে কী তিনি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে ভারতে এনডিসি কোর্স করতে পাঠাতেন? একাধিকবার প্রমোশন দিতেন?

বঙ্গবীর আপনি বাংলাদেশের শাসন ক্ষমতার ইতিহাস জানেন। যারা এ দেশে ক্ষমতায় এসেছেন কিংবা দেশ পরিচালনা করেছেন—মুক্তিযুদ্ধের প্রতি সহানুভূতিশীলতার প্রশ্নে তাদের ভূমিকা সম্পর্কে আপনি অজ্ঞাত নন। বুকে হাত দিয়ে বলুন, এ দেশে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নে কে বেশি কাজ করেছেন? হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ক্ষমতায় এসে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নে যত কাজ করেছেন, এ দেশের ইতিহাসে আর কোনো রাষ্ট্রনায়ক কী তার সিকি ভাগ কাজও করতে পেরেছেন?  আপনাকে আরও একটি কথা স্মরণ করিয়ে দিতে চাই যে, আপনি রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের কাছ থেকে একটি বড় পুরস্কার পেয়েছেন। তা হলো আপনি তার কাছ থেকে এ দেশের সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ সন্তান হিসেবে ভূষিত হয়েছেন। হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ বলেছিলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধারা এ দেশের সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ সন্তান।’ এ কথা শুধু ব্যক্তি এরশাদের নয়—একজন রাষ্ট্রপতি এরশাদের কথা।

আপনি একজন খেতাবধারী মুক্তিযোদ্ধা রাষ্ট্রপতিকেও দেখেছেন। ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নে’ তার অবদানের কথা একটু স্মরণ করুন। স্বাধীনতাবিরোধী বিষবৃক্ষ এ দেশে যে শাখা-প্রশাখা বিস্তার করেছে—সেই বৃক্ষের বীজ কে রোপণ করেছেন? তার প্রতিষ্ঠিত দলের সঙ্গে এখন আপনার সবচেয়ে বেশি দহরম-মহরম। তাদের সঙ্গে জোট করার জন্য এক পা দিয়ে রেখেছেন। আরেক পা দিতে পারছেন না, শুধু চক্ষু লজ্জার কারণে। যেহেতু সেখানে জামায়াত রয়েছে। আপনার শর্ত—বিএনপি জোটে জামায়াতের নামটা না থাকলেই আপনি দলবল নিয়ে জেনারেল জিয়ার প্রতিষ্ঠিত দলের সঙ্গে তরী ভেড়াতে পারবেন। আসল কথাটা হচ্ছে এই যে, বিএনপি জোটের সঙ্গে জামায়াতের নাম থাকলেই বা কী আর না থাকলেই বা কী। তাদের আত্মার বন্ধন কখনোই ছিন্ন হবে না।

১৯৯১ সালের জাতীয় নির্বাচনের কথা আমরা জানি। তখন প্রকাশ্যভাবে জামায়াতের সঙ্গে বিএনপির কোনো জোট ছিল না। কিন্তু ভিতরে ভিতরে আত্মার সম্পর্কটা ঠিকই ছিল। যে কারণে, ওই নির্বাচনে জামায়াত ১৮টি আসনে জয়ী হয়েছে। তারপর বিএনপি আবার দুটি মহিলা আসন উপহার দিয়েছে। সেই সুবাদে জামায়াতের সমর্থন নিয়ে বিএনপি সরকার গঠন করেছে। সেই আত্মার সম্পর্কের প্রমাণ হিসেবে আরও দেখা যেতে পারে যে, ওই নির্বাচনে জামায়াত যেখানে জিতেছে, সেখানে বিএনপির জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে। আর বিএনপি যেখানে জিতেছে সেখানে জামায়াতের কোনো ভোটই ছিল না। তবে এই বন্ধন এটাই যে প্রথম তাও নয়। জেনারেল জিয়া যখন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক জেনারেল এম এ জি ওসমানীর বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন, তখন জামায়াত প্রকাশ্যে জেনারেল জিয়ার পক্ষে নেমেছিল। এটা ছিল তাদের ‘গিভ অ্যান্ড টেক’-এর ব্যাপার। কারণ, জিয়াউর রহমান জামায়াতকে রাজনীতিতে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন- তার সুবাদে তিনি জামায়াতের সমর্থন লাভ করেছেন। সুতরাং জামায়াত-বিএনপির প্রেম তো পুরনো প্রেম। নাম কেটে দিয়ে কি এই সম্পর্ক ছিন্ন করা যাবে? রাজনীতির খাতায় জামায়াতের নাম থাক বা না থাক, এই বস্তু বিএনপির সঙ্গেই থাকবে এবং তাদের সঙ্গে নিয়েই বিএনপি আগামীতে নির্বাচন করবে। কাদের সিদ্দিকীও তার বেনিফিট ভোট করতে পারবেন।

আমি ব্যক্তিগতভাবে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের সঙ্গে আপনার সম্পর্কের বিষয়ে অবগত। আপনি অতীতে তার সম্পর্কে যেসব মন্তব্য, প্রশংসা করেছেন—তার কিছু কিছু আমার মনে পড়ে। আপনি অনেকবার সাবেক রাষ্ট্রপতি এরশাদকে আপনার মায়ের সঙ্গে দেখা করাতে টাঙ্গাইলের বাড়িতে নিয়ে গেছেন।

আপনার মা এরশাদ সাহেবকে পুত্রের মতো দেখতেন। শুনেছি তিনি বলতেন, এরশাদ আমার আরেকটি ছেলে। আপনার শ্রদ্ধেয়া মরহুম মাতা যাকে এত ভালো জানতেন তার গায়ে একটা মিথ্যা কালির ছিঁটা দিয়ে দিলেন?

আমি প্রাদেশিক ব্যবস্থা বাস্তবায়ন জাতীয় সমন্বয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ঢাকায় দুবার সেমিনারের আয়োজন করেছিলাম। সেখানে আপনি সম্মানিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য রেখেছেন। অনেকবার সাবেক রাষ্ট্রপতি এরশাদের দেওয়া ইফতার পার্টিতে এবং তার বাসায় আপনাকে দেখেছি। বিভিন্ন সময় আপনার মুখে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের যত প্রশংসা শুনেছি অন্য কোনো দলের কোনো নেতার মুখে এতটা শোনা যায়নি। একবার আপনি তাকে আপনার দলের সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। সাবেক রাষ্ট্রপতি এরশাদ আপনার আমন্ত্রণ রক্ষা করতে সম্মতও ছিলেন। কিন্তু অনিবার্য কারণে ওই সম্মেলনে উপস্থিত হওয়া তার সম্ভব হয়নি। তাই তিনি একটি শুভেচ্ছাপত্র পাঠিয়েছিলেন। আপনি সম্মেলনে সেই শুভেচ্ছাপত্রটি নিজে পাঠ করে শুনিয়েছেন। পরবর্তীতে আমাদের সেমিনারে বক্তব্য প্রদানকালে বলেছিলেন, ‘আমার জীবনে যত চিঠি পেয়েছি তার মধ্যে শ্রেষ্ঠ চিঠিটি হচ্ছে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের লেখা একটি চিঠি।’ এরকমই তো দেখেছি আপনাদের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক। তার মধ্যে কী হয়ে গেল যে, আপনি এমন একটি অসত্য কথা লিখে ফেললেন?

বঙ্গবীর আপনি লিখেছেন, জিএম কাদের মুক্তিযুদ্ধের আপসেও ছিলেন না। তার মানে কি তিনি মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষ শক্তি নন? এ দেশের ৯২ ভাগ মানুষ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছে। যুদ্ধের সময় আমি অষ্টম শ্রেণির ছাত্র। সংসারে আমি আর মা। আমার বাবা নেই, ভাইও নেই, বোন নেই। যুদ্ধ শুরু হলে আমার এলাকার দুই বড় ভাই ইসমাইল ও শামসুল, যারা যুদ্ধে অংশ নিয়েছেন—তারা আমাদের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিলেন। অপারেশন করে এসে আবার আমাদের বাড়িতে থাকতেন। আমি হাতে অস্ত্র নিয়ে যুদ্ধ করতে পারিনি। তবে তাদের খাবারটা আমাকে গোছাতে হতো। খবরাখবর এনে দিতাম। কিছুদিনের মধ্যে এ খবরটা রাজাকার অনুসারীদের কাছে পৌঁছে গেল। একদিন ভোরবেলা তারা আমাদের বাড়ি ঘেরাও করে ফেলে। ভাগ্যক্রমে মুক্তিযোদ্ধা দুজন তখন বাগানের ভিতরে ছিলেন এবং টের পেয়ে কচুরিপানা ভরা পুকুরে ডুব দিয়ে প্রাণে রক্ষা পেলেন। এদিকে আমিও বেঁচে গেলাম। তারপর মা আর আমাকে নিয়ে বাড়িতে থাকতে চাইলেন না। মে মাসের শেষের দিকে পালিয়ে ভারতের বনগাঁয়ে পৌঁছলাম এবং সেখান থেকে শরণার্থী শিবিরে। ওখানে বসে কাঁচা হাতে মুক্তিযুদ্ধের গল্প, কবিতা, গান লিখতাম। লিখে আমার মায়ের একটা টিনের বাক্স ছিল- তার মধ্যে সযত্নে রাখতাম। ১৬ ডিসেম্বরে বিজয়ের খবর শুনে আর শরণার্থী হয়ে থাকতে চাইলাম না। মাটির  টানে ছুটলাম দেশে। এসে শুনলাম আমাদের বাড়িতে আশ্রয় নেওয়া একজন যোদ্ধা শহীদ হয়েছেন। সাত্তার নামের একজন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আমাকে বললেন, ইসমাইলের কাছে তোমার ভূমিকার কথা আমি শুনেছি। আমার কাছ থেকে মুক্তিযোদ্ধার একটা সার্টিফিকেট নিয়ে রেখ। আমি বললাম, আমি তো আপনাদের মতো হাতে অস্ত্র নিয়ে যুদ্ধ করিনি। তাহলে সার্টিফিকেট নেব কেন। পরে অবশ্য দেখেছি যুদ্ধের সময় যারা টু-থ্রিতে পড়েছে তাদেরও এখন কারও কারও মুক্তিযোদ্ধার সার্টিফিকেট আছে। যখন লেখালেখিকে পেশা হিসেবে নিয়েছি তখন ‘রক্ত কথা বলে নামে’ মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক একটা বইও লিখেছি। এটাই হচ্ছে আমার মুক্তিযুদ্ধ। তাই আমিও নিজেকে মুক্তিযোদ্ধা মনে করি। ডা. মিলনের মা যদি জি এম কাদেরকে মুক্তিযোদ্ধা বলে থাকেন, তাহলে তিনি ভুল বলেননি। আমাকে যদি কেউ মুক্তিযোদ্ধা বলেন, তাহলেও তিনি ভুল বলবেন না। আমরা সবাই অস্ত্র হাতে যুদ্ধ করতে পারিনি। আমরা যে যার অবস্থান থেকে মুক্তিযুদ্ধকে সমর্থন ও সহযোগিতা করেছি। আমাদের শ্রেষ্ঠ সন্তান শহীদ বুদ্ধিজীবীরা অস্ত্র হাতে নিয়ে যুদ্ধ করতে করতে শহীদ হননি। তাদের প্রায় সবাইকে ঢাকা থেকে ধরে নিয়ে হত্যা করা হয়েছে। যদি বেঁচে থাকতেন তাহলে কি বলা যেত যে, এরা মুক্তিযুদ্ধের আশপাশেও ছিলেন না?

পরিশেষে, আরও একটি কথা—বঙ্গবীর লিখেছেন, ‘হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের ভাই হিসেবে তার কাজের দায় জি এম কাদের নেবেন না। কিন্তু জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান হিসেবে তাকে অবশ্যই কিছু দায়-দায়িত্ব নিতে হবে।’ ঠিক কথা, হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের কাজের দায়-দায়িত্ব ভাই হিসেবে শুধু জি এম কাদের কেন—তার পার্টির প্রত্যেক নেতা-কর্মী আনন্দচিত্তে গ্রহণ করবেন। কারণ, সাবেক রাষ্ট্রপতি এরশাদের নীতি, আদর্শ, উন্নয়ন, সমৃদ্ধি আর সংস্কারের দায়-দায়িত্ব নিয়েই তো জাতীয় পার্টি টিকে আছে।

মুক্তিযুদ্ধের প্রতি সহানুভূতি দেশপ্রেমিক প্রতিটি নাগরিকের জন্য চেতনার একটি সংবেদনশীল জায়গা। সেখানে ছোট্ট একটি শব্দ দিয়েও আঘাত করলে সে আঘাত কখনো ছোট আঘাত হয় না। সেই কাজটিই কাদের সিদ্দিকী সাহেব করে ফেলেছেন। সেটাকে বিনা চ্যালেঞ্জে ছেড়ে দেওয়া যায় না বলেই এই আলোচনার অবতারণা করতে হলো।

লেখক : সাংবাদিক ও কলামিস্ট

সর্বশেষ খবর