শিরোনাম
রবিবার, ২৮ আগস্ট, ২০১৬ ০০:০০ টা

চাকরিতে বিদেশিদের আধিপত্য

উপেক্ষিত হচ্ছেন বাংলাদেশিরা

বাংলাদেশে মানসম্মত চাকরির বাজারে বিদেশিদের আধিপত্য বাড়ছে। কি পরিমাণ বিদেশি বাংলাদেশে কর্মরত তার সঠিক পরিসংখ্যান না থাকলেও এ সংখ্যা ১০ লাখ কিংবা তার কাছাকাছি বলে অনুমান করা হয়। বিশ্বায়নের যুগে কোনো দেশের চাহিদার বিপরীতে বিদেশি কর্মী নিয়োগ অস্বাভাবিক কিছু নয়। কিন্তু দেশে পর্যাপ্ত দক্ষ কর্মী থাকা সত্ত্বেও বিদেশি কর্মী নিয়োগের প্রবণতা নিঃসন্দেহে উদ্বেগজনক ঘটনা। বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে তৈরি পোশাক ও বস্ত্র খাত, বেসরকারি বিদ্যুেকন্দ্র, আন্তর্জাতিক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান, মোবাইল ফোন, বহুজাতিক তেল-গ্যাস কোম্পানি, মিডিয়া রিসার্চ প্রতিষ্ঠান ও বিজ্ঞাপনী সংস্থাসহ বিভিন্ন বহুজাতিক কোম্পানিতে প্রায় ১০ লাখ বিদেশি কর্মরত। সরকারি হিসাবে দেশে বৈধভাবে অবস্থানরত বিদেশির সংখ্যা এক লাখ ১১ হাজার ৫৭৫ জন। যার মধ্যে ২০ হাজার ৬৫৬ জন ভারতীয়ও আছেন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বাংলাদেশে ২০ হাজার ভারতীয়র চাকরির কথা বলা হলেও প্রকৃত সংখ্যা অনেক বেশি। বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সিপিডির এক গবেষণায় বলা হয়েছে, ভারতে পঞ্চম রেমিট্যান্স প্রদানকারী দেশ হলো বাংলাদেশ। এ দেশে প্রায় পাঁচ লাখ ভারতীয় কাজ করেন। তারা তাদের দেশে এক বছরে ৩ দশমিক ৭৬ বিলিয়ন ডলার পাঠিয়েছেন, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকার সমান। অনেক ক্ষেত্রে যোগ্য বাংলাদেশি থাকার পরও নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে বিদেশিদের। এমনকি বাংলাদেশি কর্মী ছাঁটাই করে বিদেশিদের নিয়োগ দেওয়ার ঘটনাও সম্প্রতি ঘটিয়েছে কয়েকটি মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানি। টেলিকম খাতের কোম্পানি হুয়াইতে এক যুগের বেশি সময় কাজ করার পরও ছাঁটাই হতে হয়েছে অর্ধশতাধিক বাংলাদেশিকে। তাদের বদলে বিদেশিদের নতুন নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তাজ্জব করার বিষয় হলো যথাযথ অনুমোদন ছাড়া ভ্রমণ ভিসায় বাংলাদেশে এসেও চাকরিতে যোগ দিচ্ছেন বিদেশিরা। এমনকি বাংলাদেশি অনেক কোম্পানিও বিদেশি কর্মকর্তা নিয়োগ করলে কোম্পানির সম্মান বাড়বে— এমন ধারণায় নিছক প্রশাসনিক দায়িত্বেও বিদেশিদের নিয়োগ দিচ্ছেন। বাংলাদেশের চাকরির বাজারে বিদেশিদের আধিপত্য নিঃসন্দেহে উদ্বেগজনক। বিদেশিদের পকেটে বছরে ৩০ হাজার কোটি চলে যাওয়াও একটি অনাকাঙ্ক্ষিত বিষয়। জাতীয় স্বার্থে সরকার এ বিষয়ে কড়া দৃষ্টি দেবে— আমরা এমনটিই দেখতে চাই।

সর্বশেষ খবর