রবিবার, ২৮ আগস্ট, ২০১৬ ০০:০০ টা

নিষ্পাপ হওয়ার সুযোগ সৃষ্টি করে হজ

মাওলানা মুহম্মাদ সাহেব আলী

হিজরি সনের শাওয়াল, জিলকদ এবং জিলহজ— এ তিন মাসকে হজের মাস বলা হয়। এর মধ্যে জিলহজ মাসকে বলা হয় পুরোদস্তুর হজের মৌসুম। প্রতি বছরের মতো এ বছরও সারা পৃথিবী থেকে লাখ লাখ মুসলমান মহান আল্লাহর দরবারে হাজিরা দেওয়ার জন্য মক্কা অভিমুখে ছুটে যাচ্ছেন। হজ টাকা থাকলেই আদায় করা যায় না। মহান আল্লাহ যাদের ডাকেন তারাই শুধু ওই বছর খানায়ে কাবা জিয়ারতের সুযোগ লাভ করেন। প্রিয় নবী হজরত ইব্রাহিম (আ.)-এর ডাক আল্লাহতায়ালা যাদের কানে পৌঁছে দিয়েছেন তারা জীবনের যে কোনো পর্যায়ে হজ করার সুযোগ পান। হজ করার জন্য আল্লাহর রহমতের প্রয়োজন হয়। পুত্র ইসমাঈল (আ.)-কে সঙ্গে নিয়ে হজরত ইব্রাহিম (আ.) যখন খানায়ে কাবা পুনর্নির্মাণ করেন, তখন আল্লাহতায়ালা হজরত ইব্রাহিম (আ.)-কে বললেন, ‘এবং মানুষের কাছে আপনি হজের ঘোষণা দিন, তারা আপনার কাছে আসবে পদব্রজে ও সর্বপ্রকার ক্ষীণকায় উটের পিঠে, তারা আসবে দূরদূরান্তের পথ অতিক্রম করে’ (সূরা হজ-২২:২৭)।

হজযাত্রীরা আল্লাহর মেহমান। তাদের প্রতি রয়েছে মহান সৃষ্টিকর্তার বিশেষ রহমত। যার হজ আল্লাহতায়ালা কবুল করেন তিনি দুধের শিশুর মতো নিষ্পাপ তথা বেগুনাহ হয়ে বাড়িতে ফিরে আসেন। রসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি আল্লাহতায়ালার সন্তুষ্টি লাভের জন্য হজ করল এবং হজের সময় কোনো অশ্লীল কাজ বা কথা বলল না এবং কোনো গুনাহের কাজ করল না সে যেন মায়ের উদর থেকে ভূমিষ্ঠ হওয়ার দিনের মতো নিষ্পাপ হয়ে ফিরে এলো। (বুখারি, মুসলিম)

রসুলুল্লাহ (সা.) আরও বলেন, হজে মাবরুরের সওয়াব হলো একমাত্র জান্নাত (বুখারি ও মুসলিম)। প্রতিটি মানুষের জন্য জান্নাত একটি কাঙ্ক্ষিত বিষয়। একবার জান্নাতে যারা যাবে তাতে তারা অনন্তকাল থাকবে। জান্নাতের সুখ-শান্তির সঙ্গে অন্য কোনো সুখ-শান্তির তুলনা করা যায় না।। জান্নাত সম্পর্কে রসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, জান্নাতের সামান্যটুকু জায়গা সারা দুনিয়া এবং এর মধ্যে যা কিছু আছে তার চেয়েও উত্তম। (বুখারি, মুসলিম)

হজ পালনের মাধ্যমে বান্দা গুনাহ থেকে পরিত্রাণের সুযোগ পায়। যে কারণে রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাজীদের প্রতি সম্মান দেখাতে নির্দেশ দিয়েছেন। বলেছেন, যখন তুমি কোনো হাজী সাহেবের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবে, তখন তুমি তাকে সালাম ও মুসাফাহা করবে এবং তার বাড়িতে প্রবেশের আগে তাকে তোমার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করার অনুরোধ করবে। কেননা তিনি তো ক্ষমাপ্রাপ্ত। (আহমদ, মিশকাত)

হাজীদের প্রতি আল্লাহর যে বিশেষ কৃপা রয়েছে তা অর্জন করতে হলে শুদ্ধভাবে হজ পালনে উদ্যোগী হতে হবে। হজ সমাপনের পর বাদবাকি জীবনও আল্লাহ ও রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নির্দেশিত পথে কাটানোর শপথে আবদ্ধ হতে হবে।

লেখক :  ইসলামী গবেষক।

সর্বশেষ খবর