সোমবার, ২৯ আগস্ট, ২০১৬ ০০:০০ টা

নামাজ মানুষকে অশ্লীল ও মন্দ কাজ থেকে বিরত রাখে

মাওলানা মুহম্মাদ সাহেব আলী

নামাজ ইসলামের দ্বিতীয় রোকন। ইমানের পরেই নামাজের স্থান। নামাজ ইবাদতের অপরিহার্য অংশ। বিনা কারণে নামাজ ছেড়ে দিলে মহাপাপের ভাগিদার হতে হবে। নামাজ অস্বীকার করা মারাত্মক অপরাধ। নামাজ মানুষের দেহ মনকে সব ধরনের পঙ্কিলতা থেকে মুক্ত রাখে। এ সম্পর্কে মহান আল্লাহর ঘোষণা— নিশ্চয়ই নামাজ মানুষকে অশ্লীল ও মন্দ কাজ থেকে ফিরিয়ে রাখে। নামাজে বান্দার মানসিক পরিশুদ্ধি ঘটে এবং দেহ মনে প্রশান্তি লাভ হয়।

ইসলাম নামের ইমারত পাঁচটি স্তম্ভের ওপর স্থাপিত, এর মধ্যে অন্যতম প্রধান স্তম্ভ হলো নামাজ। নামাজ আদায়ে অবহেলা প্রকারান্তরে ইসলামের ইমারতকে দুর্বল বা বিনষ্ট করার শামিল। রসুল সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন নামাজ ধর্মের খুঁটি। যে ব্যক্তি তা কায়েম করল সে তার দীনকে প্রতিষ্ঠা করল। নামাজ আদায়ে শুদ্ধতার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে রসুল সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাদিসে। নামাজের আগে দেহ মনের পবিত্রতা নিশ্চিত করতে হবে। হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুলুল্লাহ (সা.) বলেন : ‘সেজদা করার সময় তোমরা মুখমণ্ডল (কপাল) নাক এবং উভয় হাত জমিনে রাখবে। কারণ আল্লাহপাক আমাকে সাতটি অঙ্গ দিয়ে সেজদা করার নির্দেশ দিয়েছেন। ললাট ও নাক, উভয় হাতের তালু, দু’হাটু ও উভয় পায়ের অগ্রভাগ। সেজদারত অবস্থায় বস্ত্র ও চুল ঠিকঠাক করতে বারণ করেছেন। যে লোক দেহের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে তার প্রাপ্য না দিয়ে নামাজ পড়ে, তাকে সেই অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলো নামাজের পুরো সময়ে অভিশাপ দিতে থাকে।’— বোখারি ও মুসলিম। বোখারিতে বর্ণিত আছে, হজরত হুযায়ফা ইবনে ইয়ামান (রা.) এক লোককে রুকু-সেজদা সঠিকভাবে না করে নামাজ পড়তে দেখে বললেন, ‘তুমি নামাজ পড়নি, এরূপ নামাজ পড়া অবস্থায় তোমার মৃত্যু হলে তা হতো উম্মতে মুহাম্মদীর বাইরে!’ আবু দাউদের বর্ণনা মতে তিনি বললেন : ‘কতদিন ধরে এভাবে নামাজ পড়ছ? সে বলল : চল্লিশ বছর যাবৎ।’ তিনি মন্তব্য করলেন, ‘চল্লিশ বছর ধরে তুমি কোনো নামাজই পড়নি। এ অবস্থায় তোমার মৃত্যু হলে তুমি অমুসলিম হিসেবে মারা যেতে।’ শুদ্ধভাবে নামাজ আদায়ের বিষয়টি কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা উপরোক্ত হাদিসে স্পষ্ট করা হয়েছে। আল্লাহ আমাদের সবাইকে শুদ্ধভাবে নামাজ আদায়ের তাওফিক দান করুন।

     লেখক : ইসলামী গবেষক

সর্বশেষ খবর