বুধবার, ৩১ আগস্ট, ২০১৬ ০০:০০ টা

মীর কাসেমের চূড়ান্ত রায়

জামায়াতের হরতাল আহ্বান ধৃষ্টতার শামিল

প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের আপিল বেঞ্চ একাত্তরের আলবদর নেতা মীর কাসেম আলীর রিভিউ আবেদন নাকচ করে দিয়েছে। এর ফলে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল ও অন্য সব আদালতে মীর কাশেম আলীকে দেওয়া ফাঁসির রায় বহাল থাকছে। ফাঁসি এড়াতে জামায়াতের এই শীর্ষ নেতা রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা ভিক্ষা চাইতে পারবেন। গত মঙ্গলবার সকাল ৯টা এক মিনিটে প্রধান বিচারপতি রিভিউ পিটিশন ইজ ডিসমিস এই ঘোষণার মাধ্যমে মীর কাসেম আলীর বিচারের চূড়ান্ত রায় জানিয়ে বিচার প্রার্থী ও দেশবাসীর উৎকণ্ঠার অবসান ঘটান। আপিল আদালতের অন্য চার বিচারপতি হলেন বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী, বিচারপতি মির্যা হোসাইন হায়দার ও বিচারপতি মো. বজলুর রহমান। স্মর্তব্য, ২০১৪ সালের ২ নভেম্বর মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ মীর কাসেম আলীর বিরুদ্ধে আনীত ১৪টি অভিযোগের ৮টি সম্পূর্ণভাবে এবং ২টি আংশিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় মৃত্যুদণ্ডাদেশে দণ্ডিত করেন। এ রায়ের বিরুদ্ধে মীর কাসেমের পক্ষ থেকে আপিল করা হলে গত ৮ মার্চ ফাঁসির দণ্ড বহাল রেখে সংক্ষিপ্ত রায় দেওয়া হয় এবং ৬ জুন পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করা হয়। আপিল বিভাগের এই রায়ের বিরুদ্ধে গত ১৯ জুন রিভিউ আবেদন করেন মীর কাসেম। এতে ১৪টি যুক্তি তুলে ধরে তিনি নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন। রিভিউ আবেদন প্রত্যাখ্যাত হওয়ায় এখন মৃত্যুদণ্ড এড়ানোর একটাই মাত্র পথ খালি থাকল। মীর কাসেম রাষ্ট্রপতির কাছে অপরাধের জন্য ক্ষমা চেয়ে অনুকম্পা পেলে কেবল সে ক্ষেত্রেই তিনি ফাঁসিতে ঝোলার পরিণতি থেকে রক্ষা পাবেন। ক্ষমা না চাইলে যে কোনো সময় ফাঁসি কার্যকর করা যাবে। মীর কাসেম আলীর চূড়ান্ত রায়কে স্বাগত জানিয়েছে দেশের মানুষ। তবে তার দল জামায়াতে ইসলামী আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে বুধবার সারা দেশে হরতাল ডেকেছে। মুখে বিচার ব্যবস্থার প্রতি আস্থার কথা জানালেও আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে হরতাল আহ্বানের মাধ্যমে তারা যে ধৃষ্টতার পরিচয় দিয়েছে তা শুধু অশোভনীয় নয়, ধৃষ্টতারও শামিল। এটি শুধু বিচার ব্যবস্থা নয়, গণতন্ত্র ও আইনের শাসনের প্রতি হুমকিরও নামান্তর। যা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া উচিত নয়।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর