সোমবার, ৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা
ইতিহাস

ইবনে বতুতা

ইবনে বতুতা রাজধানী স্থাপনের আট বছর পর দিল্লিতে এসেছিলেন। তার দৃষ্টিতে দিল্লি ছিল এ সময় সম্পদশালী ও ঘনবসতিপূর্ণ। অতএব অনুমান করা যায় যে, আট বছর আগের দিল্লি সম্পর্কে তিনি যা লিপিবদ্ধ করেছিলেন তার উৎস ছিল বাজারের প্রচলিত গল্পকাহিনী। ইবনে বতুতার এ স্ববিরোধী বর্ণনার পশ্চাতে সুলতানের প্রতি তার ব্যক্তিগত আক্রোশ থাকা অস্বাভাবিক নয়। ইসামীও সম্ভবত সুলতানের প্রতি ব্যক্তিগত বিদ্বেষবশত দিল্লি ধ্বংসের কথা উল্লেখ করেছেন। কারণ সুলতানের নির্দেশে তিনি তার আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে দিল্লি থেকে দৌলতাবাদে গমন করেছিলেন। পথে তাদের সবাইকেই বিশেষ দুঃখকষ্ট সহ্য করতে হয়েছিল। বারানিও দিল্লিকে জনমানবশূন্য ছিল বলে উল্লেখ করেছেন। ‘নগরের কোনো প্রাসাদ কিংবা শহরতলিতে একটি কুকুর বা বিড়ালও অবশিষ্ট ছিল না’— বারানির এরূপ অতিশয়োক্তিও যুক্তিযুক্ত নয়। এ সময়কার ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, দিল্লি মরুভূমিতে পরিণত হয়নি; কিংবা রাজধানীর মর্যাদাও হারায়নি। সুলতান যে সাধারণ প্রজাবর্গ অথবা হিন্দুদের রাজধানী ত্যাগ করতে আদেশ দেননি, তা ১৩২৭ ও ১৩২৮ খ্রিস্টাব্দের দুটি সংস্কৃত অনুশীলনলিপি হতে জানা যায়। দ্বিতীয়ত, বাহরাম আইবা কিশলু খান মুলতানে বিদ্রোহ ঘোষণা করলে ১৩২৯ খ্রিস্টাব্দে তার বিরুদ্ধে যুদ্ধাভিযানের জন্য তিনি দিল্লিতে একটি শক্তিশালী সৈন্যবাহিনী গঠন করেন। যদি দ্বাররক্ষীরা পর্যন্ত দিল্লি ত্যাগ করে যেত তাহলে এ শূন্য নগরী থেকে বিরাট সৈন্যবাহিনী সংগ্রহ করা সুলতানের পক্ষে কিছুতেই সম্ভব হতো না। দৌলতাবাদে মুসলমান জনসংখ্যার অংশবিশেষ স্থানান্তরিত করার পরও দিল্লি সাম্রাজ্যের প্রধান রাজধানী ছিল এবং এটি কখনো মরুভূমিতে পরিণত হয়নি।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর