মঙ্গলবার, ৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

১০ টাকা কেজিতে চাল

দরিদ্রজনদের কল্যাণে প্রশংসীয় উদ্যোগ

অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসা মানুষের মৌলিক অধিকারের অন্তর্গত। ক্ষুধামুক্ত দেশ গঠন ছিল মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম অঙ্গীকার। এ অঙ্গীকার পূরণে দেশ যে অনেকখানি এগিয়েছে সন্দেহ নেই। স্বাধীনতার পর জনসংখ্যা দ্বিগুণের কিছু বেশি বাড়লেও খাদ্য উৎপাদন বেড়েছে অন্তত তিন গুণ। যে দেশের সিংহভাগ মানুষ অর্ধাহারে-অনাহারে কাটাত, মঙ্গা-দুর্ভিক্ষ ছিল যে দেশের সাথী সে দেশ এখন সীমিত পর্যায়ে হলেও চাল রপ্তানি করছে। দেশের মানুষের খাদ্য চাহিদা পূরণে বিশেষত সমাজের অভাবী মানুষের মুখে অন্ন তুলে দিতে সরকার বছরের পাঁচ মাস ৫০ লাখ পরিবারকে ১০ টাকা কেজি দরে প্রতি মাসে ৩০ কেজি করে চাল সরবরাহের প্রকল্প হাতে নিয়েছে। আগামীকাল প্রধানমন্ত্রী আনুষ্ঠানিকভাবে এ কর্মসূচির উদ্বোধন করবেন। কর্মসূচি অনুযায়ী বছরের যে পাঁচ মাস সাধারণত চালের দাম তুলনামূলকভাবে বেশি থাকে সেই পাঁচ মাস অর্থাৎ মার্চ, এপ্রিল এবং সেপ্টেম্বর, অক্টোবর ও নভেম্বরে কম দামে চাল বিতরণ করা হবে। প্রতিটি উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তার নেতৃত্বে একটি কমিটি হতদরিদ্র পরিবার চিহ্নিত করে তাদের কার্ড দেওয়ার ব্যবস্থা করবে। এ কর্মসূচিতে সাড়ে ৭ লাখ টন চাল বিতরণ করা হবে এবং এ বাবদ সরকার ২ হাজার ১৩৭ কোটি টাকা ভর্তুকি দেবে। স্মর্তব্য, চলতি বছর বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত সোয়া লাখ পরিবারকে চলতি মাস থেকে তিন মাস বিনামূল্যে চাল দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রতিটি পরিবার মাসে ২০ কেজি করে চাল পাবে। তাত্পর্যপূর্ণ এ দুই সিদ্ধান্ত নেওয়ার পাশাপাশি টিআর ও কাবিখা কর্মসূচি চালের বদলে টাকা দিয়ে বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এলোমেলো করে দে মা লুটে পুটে খাই— প্রবচনের সার্থক উদাহরণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল এ কর্মসূচি দুটি। পদ্ধতি পাল্টানোর পাশাপাশি চুরির পথ বন্ধ হলে তা নিঃসন্দেহে কাজের কাজ বলে বিবেচিত হবে। কম দামে চাল বিতরণ কর্মসূচি দরিদ্রদের কতটা কল্যাণ বয়ে আনবে তা সঠিকভাবে তালিকা প্রণয়ন এবং বিতরণের ওপর অনেকাংশে নির্ভরশীল। সরকার এসব খাতে কোটি কোটি টাকা ব্যয় করলেও সংশ্লিষ্ট প্রকল্পগুলোর দুর্নীতির কারণে তার সুফল ঘরে তুলতে ব্যর্থ হয়। আমরা আশা করব ভর্তুকি মূল্যে চাল বিতরণের যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে তার বাস্তবায়নে কঠোর সতর্কতা অবলম্বন করা হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর