সরকারের সব উন্নয়ন কাজের লক্ষ্য থাকে দেশের মালিক মোক্তার জনগণের জন্য কল্যাণ নিশ্চিত করা। কাউকে ক্ষতিগ্রস্ত করা সরকার সংশ্লিষ্ট কোনো প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে আশা করা হয় না। কুড়িল পূর্বাচল লিঙ্ক রোডের দুই পাশের ১০০ ফুট খাল খননের নামে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের কার্যক্রমে এলাকাবাসী যেভাবে অকল্যাণের আশঙ্কায় আশঙ্কিত হয়ে উঠেছেন তা সত্যিকার অর্থেই অনাকাঙ্ক্ষিত এবং দুর্ভাগ্যজনক। এ খাল খননের জন্য যে ৩০০ বিঘা জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে সে জমির মালিকদের ন্যায্য ক্ষতিপূরণ থেকে বঞ্চিত করার চেষ্টা করছে রাজউকের একটি চক্র এমন অভিযোগই উঠেছে ভুক্তভোগীদের পক্ষ থেকে। তাদের অভিযোগ, ভূমি অধিগ্রহণ আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে নিজেদের মনগড়া সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে ভূমি মালিকদের ওপর। এর ফলে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো বর্তমান বাজার দরের চেয়ে ১০ ভাগের ১ ভাগ ক্ষতিপূরণ পাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। যা নিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত ভূমি মালিকদের মধ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। তাদের অভিযোগ, ১৫ বছর আগে সম্পন্ন হওয়া সিটি জরিপ অনুযায়ী জমির শ্রেণি নির্ধারণ করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার সিদ্ধান্ত অযৌক্তিক শুধু নয়, অমানবিক। তখন লিঙ্ক রোডের দুই পাশের অধিকাংশ জমি ছিল নাল কিংবা বোরো শ্রেণির। কিন্তু বর্তমানে সেসব জমি ভরাট করে বহুতল কিংবা হাইরাইজ ঘরবাড়ি নির্মাণ করে বসবাস করছেন বাড়ি মালিকরা। সেখানে অসংখ্য গাছপালাও লাগিয়েছেন তারা। কিছু জমি ভরাট করে অনেকে বাড়ি নির্মাণের প্রস্তুতি নিচ্ছেন বা কেউ প্লট বিক্রি করে দিয়েছেন। অথচ এসব জমিকে একটি চক্র নিচু কিংবা নাল জমি দেখিয়ে ক্ষতিপূরণের দর নির্ধারণের চেষ্টা করছেন। জোয়ারসাহারার এ এলাকার জমি অধিগ্রহণের মচ্ছব চলছে সেই ব্রিটিশ আমল থেকে। রেললাইন, ক্যান্টনমেন্ট, ঢাকা ময়মনসিংহ সড়ক, বিমানবন্দর, নিকুঞ্জ, পূর্বাচল এবং ৩০০ ফুট রাস্তা নির্মাণে শত শত মানুষ জমি হারিয়েছেন। ন্যায্যমূল্য না পেয়ে সর্বস্বান্ত হয়েছেন। লিঙ্ক রোডের পার্শ্ববর্তী খাল খননের নামে যাদের জমি অধিগ্রহণ করা হচ্ছে, তারা ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হলে তা একটি বড় আঘাত বলে বিবেচিত হবে। নগরায়নের নামে মানুষকে ভূমিহীন করার বদনামের ভাগিদার হবেন সরকার। এ অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্নাম এড়াতে
অধিগ্রহণকৃত জমির মালিকরা যাতে বর্তমান দামে ক্ষতিপূরণ পায় তা নিশ্চিত করা সরকারের কর্তব্য বলে বিবেচিত হওয়া উচিত। মানবিক কারণেই সরকারকে এ বিষয়ে উদ্যোগী হতে হবে।