শুক্রবার, ৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

কোরআন সংকলন শুরু হয়েছিল যেভাবে

কোরআন সংকলন শুরু হয়েছিল যেভাবে

কোরআন সংকলনে প্রথম খলিফা হজরত আবু বকরের (রা.) অবদান অনন্য। হজরত ওমর (রা.) এ ব্যাপারে তাকে উদ্বুদ্ধ করেন। তিনি হাফেজদের নিয়ে একটি কমিটি গঠন করেন। তারা সর্বপ্রথম গ্রন্থাকারে পবিত্র কোরআন সংকলন করেন। মৃত্যুর আগে আবু বকর কোরআনের এই কপিটি তার উত্তরসূরি ওমর ইবনুল খাত্তাবকে দিয়ে যান। ওমরের শাসনকালে এটি তার কাছেই রক্ষিত ছিল। ওমর কোরআনটি তার মেয়ে ও মোহাম্মদ (সা.)-এর স্ত্রী হাফসা বিনতে ওমরকে দিয়ে যান। পরবর্তী খলিফা ওসমান ইবনে আফফান এই কোরআনের আরও প্রতিলিপি তৈরি করিয়ে তা খিলাফতের বিভিন্ন স্থানে প্রেরণ করেছিলেন।

রিদ্দার যুদ্ধে বিদ্রোহ দমন করার পর আবু বকর বিজয় অভিযান শুরু করেন। এ সময় বাইজেন্টাইন ও সাসানীয় সাম্রাজ্যের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু হয়। এসব অভিযান সফল হয়েছিল। পরবর্তী খলিফারাও এই অভিযান চালু রাখেন। অভিযানের ধারাবাহিকতায় কয়েক দশকে মুসলিম সাম্রাজ্য ইতিহাসের সর্ববৃহৎ সাম্রাজ্যের অন্যতম হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। ইরাকের মাধ্যমে অভিযান শুরু করা হয়েছিল। এটি ছিল পারস্য সাম্রাজ্যের সবচেয়ে ধনী প্রদেশ। হজরত আবু বকর (আ.) সবচেয়ে দক্ষ সেনাপতি খালিদ বিন ওয়ালিদকে সাসানীয় সাম্রাজ্যের বিরুদ্ধে প্রেরণ করেছিলেন। উত্তর-পূর্বদিকে পারস্য সাম্রাজ্য এবং উত্তর-পশ্চিমদিকে বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্যকে আক্রমণ করা হয়েছিল। এসব অভিযানের তিনটি উদ্দেশ্য ছিল বলে গণ্য করা হয় : ১. আরব এবং এই দুই সাম্রাজ্যের মধ্যবর্তী স্থানে বেশ কিছু আরব যাযাবর গোত্রের বসবাস ছিল, যারা এই দুই সাম্রাজ্যের মিত্র হিসেবে কাজ করত। আবু বকরের আশা ছিল যে, তারা ইসলাম গ্রহণ করবে এবং তাদের আরব ভাইদের সঙ্গে একতাবদ্ধ হবে। ২. পারস্য ও রোমানদের কর ব্যবস্থা ছিল অন্যায্য প্রকৃতির। তাই এসব অঞ্চলের বাসিন্দারা মুসলিমদের অধীনে থাকতে পছন্দ করবে বলে বিশ্বাস করা হতো। ৩. দুটি বৃহৎ সাম্রাজ্যের মধ্যবর্তী স্থানে থাকার ফলে আরব নিরাপদ ছিল না।

তাই ইরাক ও সিরিয়া আক্রমণ করে সীমান্ত অঞ্চল থেকে প্রতিপক্ষ হটিয়ে দেওয়ার জন্য আবু বকর অগ্রসর হন। উত্তর-পূর্ব আরবের একজন গোত্রপ্রধান মুসান্না ইবনে হারিসা ইরাকের পারস্য শহরগুলোতে আক্রমণ করেন। এসব অভিযান সফল হয় এবং এ থেকে অনেক যুদ্ধলব্ধ সম্পদ অর্জিত হয়। মুসান্না ইবনে হারিসা মদিনায় গিয়ে খলিফা আবু বকরকে তার সাফল্যের ব্যাপারে জানান। তাকে তার লোকদের নেতা নিয়োগ দেওয়া হয়।

এরপর তিনি ইরাকের আরও ভিতরে প্রবেশ করেন। তার হালকা অশ্বারোহী বাহিনীর দ্রুত চলাচলের সুযোগ নিয়ে তিনি মরুভূমির নিকটবর্তী যে কোনো শহরে আক্রমণ করে দ্রুত মরুভূমিতে আত্মগোপনে চলে যেতে পারতেন। সাসানীয় বাহিনীর পক্ষে তার পিছু নেওয়া সম্ভব ছিল না।  মুসান্নার কার্যক্রম আবু বকরকে সীমানা সম্প্রসারণে প্রভাবিত করে।     —শা’জাহান

সর্বশেষ খবর