শনিবার, ১০ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

নিরক্ষরতা দূরীকরণ

সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিরক্ষরতা দূরীকরণের ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেছেন, এ ব্যাপারে জনগণকেও এগিয়ে আসতে হবে। প্রত্যেকে নিজ নিজ এলাকায় সাক্ষরতা বাড়ানোর কাজ করলে দেশে এক শতাংশ লোকও নিরক্ষর থাকবে না। বৃহস্পতিবার ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে সাক্ষরতা দিবসের অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান বাস্তবতার প্রেক্ষাপটে তাত্পর্যের দাবিদার। স্বাধীনতার পর দেশ যে সব ক্ষেত্রে চোখে পড়ার মতো অগ্রগতি অর্জিত হয়েছে, নিরক্ষরতা দূরীকরণ তার মধ্যে অন্যতম। ব্যাপক অর্থে বলা যায়, অন্য সব ক্ষেত্রের অগ্রগতির পেছনে এ সাফল্য নিয়ামক হিসেবে কাজ করেছে। স্বাধীনতার প্রাক্কালে বাংলাদেশে সাক্ষরতার হার ছিল ১৭ শতাংশের কম। গত ৪৫ বছরে এ হার চার গুণেরও বেশি উন্নীত করা সম্ভব হয়েছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্যানুযায়ী দেশে সাক্ষরতার হার ৬৩ দশমিক ৬ শতাংশ। বুধবার প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান জানিয়েছেন, সাক্ষরতার হার ৭১ শতাংশ। বৃহস্পতিবার ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনের সভায় প্রধানমন্ত্রী সাক্ষরতার হার ৭১ শতাংশে উন্নীত হওয়ার তথ্যকে সমর্থন করেছেন। পরিসংখ্যানগত দুর্বলতার জন্য দেশে সাক্ষরজ্ঞান সম্পন্ন নাগরিকদের সঠিক সংখ্যা নিরূপণ করা আদতেই কঠিন। এ বিষয়ে বিভিন্ন সূত্রের তথ্য-উপাত্তে পার্থক্য থাকলেও স্বীকার করতেই হবে সাক্ষরতাই শুধু নয়, উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রেও দেশ যেভাবে এগুচ্ছে তা আশাজাগানিয়া। এ সাফল্যকে স্বীকার করেও বলতে হবে দেশের অন্তত ২৯ শতাংশ মানুষ এখনো নিরক্ষর। সোজা কথায় দেশের ৪ কোটি ৬৫ লাখ মানুষ নিরক্ষরতার অভিশাপে ভুগছে। দুনিয়ায় যেসব দেশে নিরক্ষর মানুষের সংখ্যা বেশি তার ১০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান। স্বাধীনতার ৪৫ বছরে এ ক্ষেত্রে তাত্পর্যপূর্ণ সাফল্য অর্জিত হলেও এখনো প্রায় ৩০ শতাংশ মানুষের নিরক্ষর থাকা জাতীয় লজ্জারই ঘটনা। এ বাস্তবতায় নিরক্ষরতা দূরীকরণে দেশবাসীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার বিষয়টি প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে। শিক্ষিত নাগরিকদের সবাই ধারে-কাছের বঞ্চিতজনদের মধ্যে সাক্ষরতার আলো পৌঁছে দিলে এক বছরের মধ্যেই দেশকে নিরক্ষরতার অভিশাপ থেকে মুক্ত করা সম্ভব। আমরা আশা করব, প্রধানমন্ত্রীর দিক-নির্দেশনা বাস্তবায়নে এ ক্ষেত্রে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলারও উদ্যোগ নেওয়া হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর