শিরোনাম
শনিবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

চামড়ার দামে ধস

পাচারের আশঙ্কা ঠেকাতে হবে

এ বছরের ঈদুল আজহায় চামড়ার দামে ধস নেমেছে। গত বছরের চেয়েও এবার ৩০ শতাংশ কম দামে চামড়া কিনছেন ট্যানারি মালিকরা। গত বছরও ট্যানারি মালিকরা সিন্ডিকেট করে চামড়ার দামে ধস নামিয়েছিলেন। এ বছর দাম আরও কম হওয়ায় পর পর দুই বছর মৌসুমি ব্যবসায়ীরা লোকসানের সম্মুখীন হচ্ছেন। চামড়ার দাম কম হওয়ায় তার একাংশ ভারতে পাচার হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি সৃষ্টি হয়েছে। বৈদেশিক মুদ্রার অন্যতম উৎস গবাদি পশুর চামড়া বিদেশে পাচার হয়ে গেলে তা একটি উদ্বেগজনক ঘটনা বলে বিবেচিত হবে। কোরবানির চামড়ার এক দেড় অংশ এতিমখানায় দান করা হয়। এ দানের ওপর দেশের এতিমখানাগুলো অনেকাংশে নির্ভরশীল। দাম পড়ে যাওয়ায় তারা যে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে তা সহজে অনুমেয়। ট্যানারি মালিকরা চলতি বছর আড়তদারদের পাওনা টাকা সময়মতো পরিশোধ না করায় তারা চামড়া কেনার ক্ষেত্রে সংরক্ষণমূলক অবস্থান নেয়। গতবারের চেয়ে ১০ শতাংশ কম দামে চামড়া কেনার সিদ্ধান্ত নেন আড়তদাররা। লবণের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় তারও প্রতিক্রিয়া পড়েছে চামড়ার বাজারে। চামড়া সংরক্ষণে লবণের ব্যাপক ব্যবহার রয়েছে। এ বছর ঈদুল আজহার প্রাক্কালে হঠাৎ করে লবণের দাম বৃদ্ধি করা হয়। বিদেশ থেকে লবণ আমদানির সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও তা ঈদের আগে আমদানি করা সম্ভব না হওয়ায় বাজারে সংকট থেকেই যায়। চামড়া যেহেতু দেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ রপ্তানি পণ্য সেহেতু এর সংরক্ষণ এবং ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করার জন্য আগেভাগে পদক্ষেপ নেওয়া উচিত ছিল। তা না হওয়ায় বাজারে নানামুখী সংকট সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষত পর পর দুই বছর মৌসুমি ব্যবসায়ীরা লোকসানের শিকার হওয়ায় আগামী বছরও ন্যায্য দাম থেকে বঞ্চিত হবে সাধারণ মানুষ। আমরা আশা করব, চলমান সংকটে দেশ থেকে কাঁচা চামড়া যাতে ভারতে পাচার না হয়ে যায় সেদিকে লক্ষ্য রাখা হবে। ভবিষ্যতে ঈদুল আজহার চামড়ার বাজার নিয়ন্ত্রণে ট্যানারি মালিকরা যাতে কারসাজির আশ্রয় নিতে না পারে সে বিষয়েও সতর্কতা অবলম্বন করা হবে। চামড়া সংরক্ষণে দেশে পর্যাপ্ত লবণ উৎপাদন নতুবা বিদেশ থেকে সময়মতো আমদানির ব্যবস্থা নেওয়া হবে এমনটিও কাঙ্ক্ষিত।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর