রবিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

নারীর বিনিময়ে ইয়াবা

অপরাধীদের দমনে ব্যবস্থা নিন

ইয়াবার আগ্রাসন দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বেশ কয়েকটি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। বিশেষত বাংলাদেশ ও ফিলিপাইন এ আগ্রাসনের নির্মম শিকার। ইয়াবা পাচারকারীরা নারী পাচারের সঙ্গেও জড়িত এমন একটি চাঞ্চল্যকর প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে বাংলাদেশ প্রতিদিনে। এতে বলা হয়েছে, দুর্ধর্ষ মাদক ব্যবসায়ীরা পর্যটকবেশে ভ্রমণের নামে নারীদের নিয়ে কক্সবাজার, টেকনাফ কিংবা সেন্ট মার্টিন দ্বীপে যাচ্ছে, ফেরার সময় তাদের বিনিময়ে নিয়ে আসছে ইয়াবা। গত দুই মাসে শুধু ঢাকার কয়েকটি ইয়াবা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে অন্তত ২০ জন তরুণী পাচার হয়েছে। পাচারের পর মিয়ানমারে এসব তরুণীর ভাগ্যে কী জুটছে সে সম্পর্কে কিছুই আর জানা যাচ্ছে না। ঢাকার বনশ্রীর ডাকসাইটে এক ইয়াবা ব্যবসায়ী অতিসম্প্রতি দুই অভিজাত তরুণীকে পাচারের চেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার পর ‘দিচ্ছি নারী, আনছি ইয়াবা’ কাহিনী ফাঁস হয়ে যায়। কুখ্যাত ওই মাদক ব্যবসায়ী রেন্ট-এ-কারের একটি প্রাইভেট কার নিয়ে কক্সবাজার থেকে ফেরার সময় নারায়ণগঞ্জের কাঁচপুরে ইকরা নামে এক তরুণী ও বিপুল পরিমাণ ইয়াবাসহ পুলিশের হাতে আটক হয়। তার কবল থেকে পালিয়ে ঢাকায় ফিরে আসা ‘ও’ লেভেলের এক ছাত্রীর বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, ইকরা ও তাকে জন্মদিনের অনুষ্ঠানের কথা বলে কক্সবাজারের টেকনাফে নিয়ে যাওয়া হয়। তাদের দুজনকে মিয়ানমারের একটি স্পিডবোটে রোহিঙ্গাদের হাতে তুলে দেওয়ার পাঁয়তারা করা হয়। এ সময় এক ছেলেবন্ধুর সহায়তায় তারা টেকনাফ থেকে পালিয়ে কক্সবাজার ফিরে আসেন। কিন্তু মাদক ব্যবসায়ী ও তার সহযোগীরা কক্সবাজারে ধাওয়া করে ইকরা চৌধুরীকে তুলে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে গেলেও ‘ও’ লেভেলের ছাত্রী ঢাকায় ফিরতে সক্ষম হন। পরবর্তীতে ইকরাকে নিয়ে মাদক ব্যবসায়ীরা ইয়াবা পাচারের চেষ্টা করলে ইকরার দেওয়া তথ্যানুযায়ী পুলিশ তাদের বহনকারী গাড়ি আটক করে এবং গাড়ির এসি বনেট খুলে ৪ হাজার ৬০০ পিস ইয়াবা উদ্ধার করে। ইয়াবা ব্যবসার বিরুদ্ধে দৃশ্যত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সক্রিয় হলেও তাদের একাংশের অসৎ মানসিকতার কারণে মাদক আগ্রাসন থামানো কঠিন হয়ে পড়েছে। মাদক ব্যবসায় ব্যাপক সংখ্যক ধনাঢ্য পরিবারের বখে যাওয়া নারী সন্তানের জড়িত হওয়া এবং মিয়ানমারে নারী পাচার করে ইয়াবা আমদানির ঘটনা নিঃসন্দেহে উদ্বেগজনক।  মাদক পাচার রোধে এ পাপ ব্যবসার সঙ্গে যারাই জড়িত থাকুক তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আঘাত হানতে হবে। মাদকের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলাও জরুরি।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর