মঙ্গলবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

রানা-রুমন প্রসঙ্গ

আইন নিজ গতিতে চলবে এমনটিই কাম্য

টাঙ্গাইল-৩ আসনের সরকারদলীয় মহাক্ষমতাধর সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান রানা অবশেষে আত্মসমর্পণ করেছেন। বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদকারী মুক্তিযোদ্ধা ও আওয়ামী লীগ নেতা ফারুক হত্যার আসামি এই ক্ষমতাদর্পী নেতা দীর্ঘদিন পলাতক ছিলেন। রবিবার টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত প্রথম জেলা ও দায়রা জজ আদালতে হাজির হয়ে তিনি জামিন প্রার্থনা করলে বিজ্ঞ আদালত সে আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেয়। একই দিন সাতক্ষীরায় পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছেন এক মহিলা সংসদ সদস্যের কীর্তিমান পুত্র রাশেদ সরোয়ার রুমন। মা ক্ষমতাসীন দলের সংসদ সদস্য— এ পরিচয়ের সুবাদে তিনি সাতক্ষীরাকে যা ইচ্ছে তাই করার অভয়ারণ্যে পরিণত করেছিলেন। চাঁদাবাজি ও দখলবাজির মাধ্যমে সরকারি দলের মুখে কলঙ্ক লাগানোর যে অর্বাচীন কর্মকাণ্ডে তিনি লিপ্ত ছিলেন তা সাতক্ষীরার জনমনে তো বটেই ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীদের মধ্যেও দেখা দেয় ক্ষোভ। বাংলাদেশ প্রতিদিনে গত শনিবার তার অপকর্মের একাধিক চিত্র তুলে ধরা হলে সাতক্ষীরা থেকে যশোরে পালিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি নেওয়ার মুখে ধরা পড়েন তিনি। টাঙ্গাইলের খান পরিবার ধরাকে সরা জ্ঞানের যে অপচর্চা শুরু করেছিল তার নেতৃত্বে ছিলেন আমানুর রহমান রানা। বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদকারী প্রবীণ মুক্তিযোদ্ধা ও আওয়ামী লীগ নেতা ফারুক আহমেদকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয় ক্ষমতাদর্পী সংসদ সদস্যের বারণ উপেক্ষা করে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী হতে চাওয়ায়। ২০১৩ সালের ১৮ জানুয়ারি নিজের একটি প্রতিষ্ঠানে সংসদ সদস্য রানা ফারুক আহমেদকে ডেকে আনেন এবং তাকে সাধারণ সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা না করার অনুরোধ করেন। এ অনুরোধে সায় না দেওয়ায় তাকে সেখানেই গুলি করে হত্যা করা হয়। পরে লাশ ফেলে রাখা হয় নিহত আওয়ামী লীগ নেতার বাড়ির কাছে। গ্রেফতার দুই ব্যক্তির জবানবন্দিতে এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে এমপি রানার জড়িত থাকার বিষয়টি ফাঁস হয়ে যায়। হত্যাকাণ্ডে রানার পরিবারের অন্য সদস্যদের জড়িত থাকার বিষয়টিও স্পষ্ট হয়। অপরাধীর পরিচয় একটাই, সে অপরাধী। দীর্ঘ দুই বছর ধরে খুনের মামলার আসামি সংসদ সদস্য রানা ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকায় তা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও বড় মাপে সরকারের সুনামের জন্য বিড়ম্বনা সৃষ্টি করছিল। একইভাবে সাতক্ষীরার এমপিপুত্র রুমনের অপতত্পরতাও জনমনে নানা প্রশ্নের বিস্তার ঘটায়। একই দিন দুই ক্ষমতাদর্পীর আইনের আওতায় আনার ঘটনা এ সম্পর্কিত বিতর্কের অবসান ঘটাবে বলে আশা করা যায়। আইন তার নিজ গতিতে চলবে এমনটিও কাম্য।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর