বুধবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

বন্ধ হোক ইভ টিজিং

সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তুলুন

ইভ টিজিং ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। বখাটে নামের উত্ত্যক্তকারীদের দ্বারা প্রতিদিনই নিগৃহীত হচ্ছে কোনো না কোনো নারী। বিশেষত স্কুল-কলেজের ছাত্রী এবং কর্মজীবী তরুণীরা উত্ত্যক্তকারীদের টার্গেটে পরিণত হয়েছে। গত এক মাসে দুজন স্কুলছাত্রী হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছে বখাটে নামের মানুষ শকুনদের হাতে। গত রবিবার মাদারীপুরের কালকিনিতে স্কুলে যাওয়ার পথে নিতু মণ্ডল নামের এক স্কুলছাত্রীকে খুন করেছে একই গ্রামের বখাটে যুবক মিলন মণ্ডল। ২৪ আগস্ট ওবায়দুল নামের এক বখাটের ছুরিকাঘাতে আহত হয়ে রিশা নামের এক কিশোরী চার দিন পর ঢাকা মেডিকেলে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করে। বখাটেদের উৎপাতে প্রতি বছরই বিপুলসংখ্যক স্কুলছাত্রী ও তরুণী আত্মহননের পথ বেছে নিতে বাধ্য হচ্ছে। বাংলাদেশে দুই যুগেরও বেশি সময় ধরে সরকার ও বিরোধী দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন নারীরা। স্বরাষ্ট্র, পররাষ্ট্র, কৃষিমন্ত্রী পদেও অধিষ্ঠিত হচ্ছেন তারা। এ মুহূর্তে স্পিকার পদেও রয়েছেন একজন নারী। দেশের প্রধান রপ্তানি পণ্য তৈরি পোশাকের সঙ্গে যুক্ত ৪০ লাখেরও বেশি শ্রমিকের সিংহভাগই নারী। নারীর ক্ষমতায়নে বাংলাদেশের সাফল্য বিশ্বজুড়ে প্রশংসার দৃষ্টিতে দেখা হলেও আলোর নিচে রয়েছে অন্ধকার। বিশ্বে যেসব দেশে বাল্যবিয়ের হার বেশি বাংলাদেশ তার তিনটি দেশের একটি। বাল্যবিয়ের আধিক্যের পেছনে বখাটেদের উৎপাত অনেকাংশে দায়ী। বাবা-মায়েরা মানসম্মান বাঁচাতে তাদের কন্যাসন্তানদের অল্প বয়সে বিয়ে দিতে বাধ্য হচ্ছেন। বাংলাদেশে উত্ত্যক্তের যেসব ঘটনা ঘটে গড়ে তার ১ শতাংশ আইন প্রয়োগকারীদের নজরে আসে। তার পরও বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০১৫ সালে সারা দেশে উত্ত্যক্তের শিকার হয়েছে ৩৬২ জন নারী ও শিশু। এর মধ্যে তাত্ক্ষণিক প্রতিকার না পেয়ে ক্ষোভে, অপমানে আত্মহননের পথ বেছে নিয়েছে ২২ জন। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত উত্ত্যক্তের শিকার হয়েছে ১৮১ জন, এর মধ্যে আত্মহত্যা করেছে ৫ জন। উত্ত্যক্তকারীদের দাপট থামাতে সোমবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ইভ টিজিং প্রতিরোধে করণীয় শীর্ষক বৈঠকে শিক্ষামন্ত্রী সামাজিক প্রতিরোধের তাগিদ দিয়েছেন। আমাদের মত, ইভ জিটিং বন্ধে এটাই হতে পারে সর্বোত্তম পথ। এই প্রতিরোধ গড়ে তুলতে সব সামাজিক শক্তিকে এগিয়ে আসতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর