শনিবার, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

বিশ্বজনীন সমস্যা সন্ত্রাস

এ আপদকে ঠেকাতে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে

সন্ত্রাস একটি বিশ্বজনীন সমস্যা। দুনিয়ার সব দেশ এবং জাতি এই নোংরা দৈত্যের কাছ থেকে আসা চ্যালেঞ্জের শিকার। বিশ্ব শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্যও হুমকি হয়ে দেখা দিয়েছে এ আপদটি। সন্ত্রাস যেহেতু একটি বিশ্বজনীন সমস্যা সেহেতু এই অপশক্তির মূলোৎপাটনে দুনিয়ার সব দেশ ও জাতির ঐকমত্যের বিষয়টি গুরুত্বের দাবিদার। এ প্রেক্ষাপটেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে ভাষণদানকালে সন্ত্রাসী ও জঙ্গিদের অর্থ এবং অস্ত্র জোগান ও নৈতিক সমর্থন না দেওয়ার জন্য বিশ্বনেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। বলেছেন সন্ত্রাসের মূলোৎপাটনে বিশ্বনেতাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। দুনিয়ার যে সব জাতি সন্ত্রাসের ভয়াবহ শিকার বাংলাদেশ তার মধ্যে একটি। একাত্তরে বাংলাদেশের স্বাধীনতা নস্যাৎ করতে দখলদার পাকিস্তানি বাহিনী এবং তাদের ভাড়াটিয়া তাঁবেদাররা জঘন্য সন্ত্রাসের আশ্রয় নেয়। লাখ লাখ মানুষের হত্যাকাণ্ড ও হাজার হাজার নারীর সম্ভ্রমহানি ছিল সন্ত্রাসের এক জঘন্য রূপ। স্বাধীনতার পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে সপরিবারে হত্যা করা হয়। এটিও ছিল দেশি-বিদেশি অপশক্তির পরিকল্পিত সন্ত্রাসের এক উদাহরণ। মানবতার শত্রু জঙ্গিবাদীদের পরিকল্পিত সন্ত্রাসে রমনার বটমূল রক্তে রঞ্জিত হয়েছে। উৎসবী মানুষের নববর্ষ পালনের উৎসবকে মুহূর্তে শোক ও আর্তনাদে রূপান্তরিত করেছে জঙ্গি নামের বক-ধার্মিকরা। বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ের গ্রেনেড হামলাও ছিল সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের উদাহরণ। যার সঙ্গে সে সময়কার সরকারের প্রত্যক্ষ সম্পর্কের বিষয়টিও স্পষ্ট হয়ে পড়েছিল। স্বভাবতই সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমনে দুনিয়ার যে কোনো জাতির মতোই বাংলাদেশ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এই নোংরা দৈত্য ১৬ কোটি মানুষের অগ্রগতিকে থামিয়ে দেওয়ার যে অপচেষ্টা চালাচ্ছে তা প্রতিহত করতে পুরো জাতিই ঐক্যবদ্ধ। সন্ত্রাসীরা তাদের অপকর্মের স্বার্থে ধর্ম-গোত্র-বর্ণকে ব্যবহার করলেও তাদের পরিচয় একটাই তারা সন্ত্রাসী। মানবতার এই শত্রুদের পরাজিত করতে হলে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদীদের সে দৃষ্টিতেই দেখতে হবে। প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘে এ বিষয়টিই তুলে ধরেছেন প্রশংসনীয়ভাবে। জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে তিনি বিশ্বনেতাদের ঐক্যবদ্ধ থাকার যে ডাক দিয়েছেন তা এ সময়ের সবচেয়ে সাহসী উচ্চারণ। মানবজাতির অস্তিত্বের স্বার্থেই এ ক্ষেত্রে বিশ্বসমাজকে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হতে হবে।

সর্বশেষ খবর