রবিবার, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

অপচিকিৎসায় রোগীর মৃত্যু

ওয়ার্ডবয় চিকিৎসক হয় কীভাবে খোঁজ নিন

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ওয়ার্ডবয়ের ইনজেকশন পুশে মারা গেছেন এক তরুণ রোগী। ওয়ার্ডবয়ের কাজ কোনোভাবেই রোগীকে ইনজেকশন দেওয়া নয়। ঢাকা মেডিকেল কলেজের মতো দেশের শীর্ষস্থানীয় হাসপাতাল ও চিকিৎসা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তা কল্পনা করাও কঠিন। শত সীমাবদ্ধতার মধ্যেও চিকিৎসার ক্ষেত্রে আস্থার প্রতীক বলে ভাবা হতো এ প্রতিষ্ঠানটিকে। বলা হতো ঢাকা মেডিকেলে কোনো রোগী নেওয়া হলে তাদের প্রত্যাখ্যাত হতে হয় না। তবে দীর্ঘদিন ধরে তাদের নামেও ছড়িয়ে পড়েছে ভিন্ন ধরনের দুর্নাম। দেশের এই শীর্ষস্থানীয় হাসপাতালটি সুইপার, দারোয়ান, ওয়ার্ডবয়সহ চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের কাছে জিম্মি এমন অভিযোগ ওপেন সিক্রেট বলে বিবেচিত। গত শুক্রবার এ হাসপাতালে ওয়ার্ডবয়ের ইনজেকশন পুশে চিকিৎসারত এক তরুণের মৃত্যুর পর তাদের দৌরাত্ম্যের বিষয়টি সামনে এসেছে। গত রবিবার কেরানীগঞ্জে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় আহত হয় বিপ্লব মণ্ডল নামের এক তরুণ। তাকে ভর্তি করা হয় ঢামেক হাসপাতালে। এ হাসপাতালের ২০০ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। বিপ্লবের অভিভাবকদের বরাত দিয়ে বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে— শনিবার রোগীকে রিলিজ দেওয়ার কথা বলেছিলেন চিকিৎসকরা। এ অবস্থায় শুক্রবার বিকালে ওয়ার্ডবয় সুমন এসে বলে কাল তো আপনারা চলে যাবেন, আজ একটি ইনজেকশন দিতে হবে। সে ইনজেকশন পুশের পাঁচ মিনিটের মধ্যেই বিপ্লবের মৃত্যু হয়। বিপ্লবের বাবার অভিযোগ, তার ছেলেকে ওয়ার্ডবয় মেরে ফেলেছে। মৃত্যুর জন্য ভুল চিকিৎসাকে দায়ী করেছেন তিনি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ স্বীকার করেছেন ইনজেকশন দেওয়ার এখতিয়ার ওয়ার্ডবয়ের নেই। তদন্ত করে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও বলেছেন তারা। ইতিমধ্যে ওয়ার্ডবয় সুমনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। হাসপাতালে ওয়ার্ডবয়ের চিকিৎসক বা নার্স সাজার ঘটনা দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে অহরহ ঘটছে এমন অভিযোগও প্রবল। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মতো ঐতিহ্যমণ্ডিত প্রতিষ্ঠানও যে তা থেকে ব্যতিক্রম নয়, একজন তরুণ রোগী জীবন দিয়ে সে সত্যটি উদঘাটিত করলেন।  আমরা আশা করব নিজেদের সুনামের স্বার্থেই ঢাকা মেডিকেল কর্তৃপক্ষ এ ঘটনার দায় নির্ণয় করে দোষীদের বিরুদ্ধে যথাযথ পদক্ষেপ নেবেন। ওয়ার্ডবয়কে যিনি বা যারা চিকিৎসক সাজার সুযোগ দিয়েছেন তাদের শাস্তিও নিশ্চিত করা হবে।

সর্বশেষ খবর