রবিবার, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

শান্তির ধর্ম ইসলাম

মহিউস সুন্নাহ আল্লামা মাহমূদুল হাসান

রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের যুগে যেসব অন্যায় অপরাধ ছিল সে ব্যাপারে তিনি দুটি উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলেন, প্রথমত, সমাজ থেকে এসব অপরাধ দূর করা। দ্বিতীয়ত, যাতে সমাজে এমন অপরাধ আর সংঘটিত না হয় সে জন্য পরিকল্পিত ব্যবস্থা গ্রহণ। এ দুটি কাজের জন্য তিনি একটি শক্তিশালী জামাত তৈরি করেছিলেন। সে জামাতকে বলা হয় সাহাবাদের জামাত। তারা সর্বগুণে গুণান্বিত ছিলেন। পবিত্র কোরআনে তাদের সম্পর্কে বলা হয়েছে— মুহাম্মদ আল্লাহর রসুল; তার সহচরগণ কাফিরদের প্রতি কঠোর এবং নিজেদের মাঝে পরস্পরের প্রতি সহানুভূতিশীল; আল্লাহর অনুগ্রহ ও সন্তুষ্টি কামনায় তুমি তাদের রুকু সেজদায় অবনত দেখবে। তাদের মুখমণ্ডলে সেজদার চিহ্ন থাকবে; তাওরাতে তাদের বর্ণনা এরূপই এবং ইঞ্জিলেও। তাদের দৃষ্টান্ত একটি চারাগাছ, যা হতে নির্গত হয় কিশলয়, অতঃপর তা শক্ত ও পুষ্ট হয় এবং পরে কাণ্ডের ওপর দাঁড়ায় দৃঢ়ভাবে যা চাষির জন্য আনন্দদায়ক। এভাবে আল্লাহ মুমিনদের সমৃদ্ধি দ্বারা কাফেরদের অন্তর্জ্বালা সৃষ্টি করেন। যারা ইমান আনে ও সৎকর্ম করে আল্লাহ তাদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ক্ষমা ও মহা পুরস্কারের। [সূরা ফাতাহ : ২৯]।

রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহাবাদের কয়েকটি দলে ভাগ করেছিলেন। একদলকে দেশের সীমান্ত পাহারার দায়িত্ব দিয়েছিলেন, একদলকে ইসলামের দাওয়াতের কাজে নিযুক্ত করেছিলেন। অপর দলকে কাফেরদের মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত করেছিলেন।

ইসলাম হলো শান্তির ধর্ম। এই ধর্মে কাউকে অনর্থক আঘাত করা নিষেধ। ইসলামের শিক্ষা হলো, অমুসলিম যেই হোক তাকে আদর-আপ্যায়ন করে, সুন্দরভাবে বুঝিয়ে দীনের পথে আনতে হবে। এক যুদ্ধের ময়দানে হজরত খালিদ বিন ওয়ালিদ (রা.) যখন দুশমনের বুকের ওপর উঠে তলোয়ার চালাবেন তখনই ওই কাফের মুখে কালিমা পড়ে নিল। হজরত খালিদ (রা.) কালিমা পড়ার পরও তাকে হত্যা করে ফেলেছিলেন। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ ঘটনা শুনে মারাত্মক কষ্ট পেয়ে হজরত খালিদ (রা.)-কে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, হে খালিদ কালিমা পড়ার পরও তুমি তাকে কেন হত্যা করেছিলে? হজরত খালিদ (রা.) উত্তর দিলেন, সে তলোয়ারের ভয়ে এবং চাপের মুখে কালিমা পড়েছিল। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, সে ভয়ে পড়ুক বা অন্য কোনো কারণে পড়ুক তার মুখ দিয়ে তো কালিমা বের হয়েছিল। তুমি তো তার অন্তর ফেড়ে দেখনি যে, সে কী কারণে কালিমা পড়ছিল। হে খালিদ তুমি এ কাজটা মোটেই ঠিক করনি। ইসলামের বিধান হলো, গরু, ছাগল ইত্যাদি জবাই করার সময় চাকু ধার দিতে হবে প্রাণীর চোখের আড়ালে। যাতে প্রাণী তা দেখে এবং তার আওয়াজ শুনে অন্তরে কষ্ট না পায়। ইসলাম যেখানে জানোয়ারকে কষ্ট দিয়ে জবাই করা হারাম করেছে সেখানে একজন নিরপরাধ মানুষকে কখনো কষ্ট দেওয়ার অনুমতি থাকতে পারে?   যারা ইসলামকে কলুষিত করার জন্য জিহাদের অপব্যাখ্যা করে, তারা নিজেরাও গুমরাহ, অন্যকেও গুমরাহির পথে নিয়ে যেতে চায়।

লেখক :  খতিব, গুলশান সেন্ট্রাল জামে মসজিদ।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর