মঙ্গলবার, ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

স্বাস্থ্য খাতের চালচিত্র

লুটেরাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন

স্বাস্থ্যসেবা বা চিকিৎসা মানুষের অন্যতম অধিকার। স্বাধীনতা সংগ্রামের অন্যতম লক্ষ্য ছিল অন্ন, বস্ত্র, শিক্ষা, বাসস্থান ও চিকিৎসার মতো মানবাধিকারগুলো নিশ্চিত করা। স্বাধীনতার পর গত ৪৫ বছরে চারদিকের সীমাবদ্ধতার মধ্যেও প্রতিটি সরকার স্বাস্থ্যসেবা বা চিকিৎসা খাতকে এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছে। এ বিষয়ে জাতীয় বাজেটে বিপুল অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, দুর্নীতি ও লুটপাটের কারণে এ খাতের কাঙ্ক্ষিত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সাধারণ মানুষ। বাংলাদেশ প্রতিদিনের শীর্ষ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সরকারি খাতের চিকিৎসাসেবার মানোন্নয়নে বর্তমান সরকার নানাবিধ উদ্যোগ নিলেও স্বাস্থ্য খাতে অনিয়ম-দুর্নীতির পুরনো চিত্র বদলাচ্ছে না। কোনো কোনো ক্ষেত্রে তা আগের চেয়ে বেড়েছে বলে টিআইবির প্রতিবেদনেও তুলে ধরা হয়েছে। ঐতিহ্যবাহী ঢাকা মেডিকেল কলেজ, মিটফোর্ড, সোহরাওয়ার্দী, পঙ্গু হাসপাতাল, জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটসহ রাজধানীর সব সরকারি হাসপাতালেই অনিয়ম-দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনার একই রকম চিত্র বিদ্যমান। স্বাস্থ্য সেক্টরে বদলি, পদোন্নতি, পদায়ন থেকে শুরু করে সব ক্ষেত্রেই দুর্নীতি ওপেন সিক্রেট হয়ে দাঁড়িয়েছে। সবচেয়ে বেশি হরিলুট চলছে কেনাকাটা আর নিয়োগের ক্ষেত্রে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও এর আওতাভুক্ত অধিদফতরগুলোর বিভিন্ন ইউনিটে কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগকে ঘিরে হাজার হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার বাণিজ্য চলে খোলামেলাভাবেই। হাসপাতালের সরঞ্জামসহ বিভিন্ন কেনাকাটার ক্ষেত্রে সাগর চুরির ঘটনাও ঘটছে। সম্প্রতি ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের বিভিন্ন আইটেমের চিকিৎসা সরঞ্জাম ও ওষুধপত্র কেনার ক্ষেত্রে যে লুটপাট হয়েছে তা চমকে দেওয়ার মতো। ১০-১২ হাজার টাকা দামের অটোস্কোপ মেশিন ৩ লাখ ৭০ হাজার; ১৫ হাজার টাকার ব্লাড ওয়ার্মার মেশিন ৯ লাখ ৩২ হাজার; ২ কোটি ৮০ লাখ টাকার এমআরআই মেশিন ৯ কোটি ৯৫ লাখ ৫০ হাজার টাকায় কিনে সংশ্লিষ্ট ক্রয় কমিটি প্রমাণ করেছে চৌর্যবৃত্তির ক্ষেত্রে তারা শিরোপা পাওয়ারই যোগ্য। স্বাস্থ্য খাতে অনিয়ন্ত্রিত দুর্নীতি এ খাতের উন্নয়নে সরকারের গৃহীত সব পদক্ষেপ পণ্ড করে দিচ্ছে। জনমনে সৃষ্টি করছে ক্ষোভ। এ অবস্থার অবসানে সরকারকে অবশ্যই কড়া হতে হবে। দুর্নীতি ও অসততার প্রতিভূদের বিরুদ্ধে নিতে হবে কড়া পদক্ষেপ।

সর্বশেষ খবর