মঙ্গলবার, ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

জামাতে নামাজ পড়া উত্তম

মাওলানা মুহম্মাদ আশরাফ আলী

মসজিদে জামাতের সঙ্গে নামাজ আদায় উত্তম এবং এজন্য বাড়তি সওয়াব পাওয়া যায়। নামাজের আজান শোনা গেলে নামাজের জন্য মসজিদে হাজির হওয়ার তাগিদ দেওয়া হয়েছে রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বিভিন্ন হাদিসে। মসজিদ ধারেকাছে থাকলে বাড়িতে বসে ফরজ নামাজ আদায় না করে জামাতে নামাজ পড়ার জন্য হাদিসে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। অবশ্য বাড়িতে বসে নফল ইবাদত করাও উত্তম।

সহি মুসলিমে বর্ণিত আছে, এক দৃষ্টিহীন লোক নবী (সা.)-এর দরবারে এসে বললেন, ইয়া রসুলুল্লাহ! আমার এমন কেউ নেই, যে আমাকে মসজিদে পৌঁছে দেবে এবং তিনি ঘরে বসে নামাজ পড়ার জন্য নবীজির কাছে আরজ পেশ করলেন। তিনি তাকে অনুমতি দিলেন। অতঃপর অন্ধ লোকটি চলে যেতে শুরু করলে রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে ডেকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘তুমি কি আজান শুনতে পাও?’ তিনি বললেন, জি হ্যাঁ, শুনতে পাই। রসুল (সা.) বললেন, তাহলে জওয়াব দেবে অর্থাৎ মসজিদে উপস্থিত হবে।

আবু দাউদের বর্ণনামতে, আমর ইবনে উম্মে মাকতুম (রা.) রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দরবারে এসে বললেন, হে আল্লাহর রসুল! মদিনায় নানা রকম হিংস্র প্রাণী রয়েছে। আমি দৃষ্টিশক্তিহীন। আমার বাড়িও অনেক দূরে। আমাকে মসজিদে নিয়ে যাওয়ার মতো কেউ নেই। অতএব, আমি কি বাড়িতে নামাজ পড়তে পারি? তিনি জানতে চাইলেন, তুমি কি আজানের আহ্বান শুনতে পাও? তিনি জবাব দিলেন, হ্যাঁ, শুনতে পাই। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তাহলে তুমি সাড়া দেবে অর্থাৎ মসজিদে যাবে। তোমাকে নিষ্কৃতি দেওয়ার কোনো পথ নেই।

এ হাদিসের মাধ্যমে এটাই প্রতীয়মান হয়, অসুবিধা থাকা সত্ত্বেও যেহেতু রসুল (সা.) একজন দৃষ্টিশক্তিহীন ব্যক্তিকে বাড়িতে বসে নামাজ পড়ার অনুমতি দেননি। অতএব বিনা ওজরে একজন দৃষ্টিশক্তিসম্পন্ন সুস্থ ব্যক্তির জন্য জামাতে শামিল না হওয়া কীভাবে গ্রহণযোগ্য হবে? এজন্য যখন হজরত ইবনে আব্বাস (রা.)-কে জিজ্ঞাসা করা হলো, এক লোক সারা দিন রোজা রাখে এবং সারা রাত নামাজ পড়ে, কিন্তু ফরজ নামাজের জামাতে শামিল হয় না, তার কী ফয়সালা? তিনি বললেন, এ অবস্থায় মারা গেলে সে দোজখে যাবে। তিরমিজি।

আল্লাহ আমাদের সবাইকে জামাতের সঙ্গে নামাজ আদায়ের তাওফিক দান করুন।

লেখক : ইসলামী গবেষক।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর