বৃহস্পতিবার, ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

কোরআন পাঠের অসীম ফজিলত

মাওলানা মুহম্মাদ সাহেব আলী

কোরআন পাঠের অসীম ফজিলত

কোরআন পাঠের মাধ্যমে আল্লাহর নির্দেশিত পথে জীবনযাপনে মানুষ উদ্বুদ্ধ হয়। কোনটি সঠিক আর কোনটি মিথ্যা সে বিষয়টি মানুষের উপলব্ধিতে আসে। হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) হতে বর্ণিত— রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন মানুষের অন্তরেও মরিচা পড়ে যায়, যেমন লোহাতে পানি লাগার কারণে মরিচা পড়ে। জিজ্ঞাসা করা হলো ইয়া রসুলুল্লাহ, তা পরিষ্কার করার উপায় কী? তিনি বললেন, মৃত্যুকে বেশি বেশি স্মরণ করা এবং কোরআনপাকের তেলাওয়াত করা (বায়হাকি, শুয়াব)।

মানুষ যখন ভুল পথে চলে, আল্লাহ এবং তার রসুলের নির্দেশিত পথ থেকে সরে এসে গুনাহে লিপ্ত হয় তখন তার মনে মরিচা পড়ে। এই মরিচা দূর করার সর্বশ্রেষ্ঠ উপায় হলো, মৃত্যুর কথা বেশি বেশি স্মরণ করা। মৃত্যুর কথা মানুষ যখন বেশি বেশি স্মরণ করে তখন দুনিয়ার ওপর তার মোহ কেটে যায়। তার অন্তরে আল্লাহর ভয় জাগ্রত হয়। এই ভয় তার মনের মরিচাকে দূর করে। সে আল্লাহ ও তার রসুলের নির্দেশিত পথে চলার জন্য উন্মুখ হয়। একইভাবে কোরআন পাঠের মাধ্যমে সে নিজেকে সুধরে নেওয়ার পথ খুঁজে পায়। মনের আয়না পরিষ্কার হলে তার সামনে আখিরাতের চিত্র স্পষ্ট হয়। দুনিয়ার জীবনের জন্য আখিরাতের জীবন নষ্ট করা যে মহা বোকামি সে বিষয়টি তার উপলব্ধি হয়। হজরত আবুজর গিফারি (রা.) থেকে বর্ণিত— তিনি বলেন, আমি রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে আরজ করলাম আমাকে কিছু নসিহত করুন। হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তাকওয়া অবলম্বন কর। কারণ তা সব নেক আমলের মূল। আমি আরজ করলাম আরও কিছু নসিহত করুন। হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন কোরআন তেলাওয়াতের এহতেমাম কর। কারণ তা দুনিয়াতে তোমার জন্য নূর ও আখিরাতে সঞ্চিত ধন ভাণ্ডার। (ইবনে হিব্বান)।

উপরোক্ত হাদিসে স্পষ্ট করা হয়েছে তাকওয়া অবলম্বন ও কোরআন তেলাওয়াতের গুরুত্ব কতটুকু। তাকওয়া ও পরহেজগারি বান্দাকে পাপমুক্ত থাকার শক্তি জোগায়। যার মধ্যে এই সদ গুণের সৃষ্টি হয়, পাপ তার ধারেকাছে ভিড়তে পারে না। একই সঙ্গে কোরআন তেলাওয়াত দুনিয়ার জীবনে পাপমুক্ত জীবনযাপনের যেমন পথনির্দেশ করে তেমনি আখিরাতের জীবনের জন্য সঞ্চয় সৃষ্টি করে, যার বদৌলতে জান্নাত লাভ নিশ্চিত হয়।

  লেখক : ইসলামী গবেষক

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর