শনিবার, ১ অক্টোবর, ২০১৬ ০০:০০ টা

কূটনৈতিক পল্লীর নিরাপত্তা

মাদানী এভিনিউ দখলমুক্ত করুন

কূটনৈতিক পল্লী বা ডিপ্লোমেটিক জোনের নিরাপত্তার বিষয়টি দুনিয়ার সব দেশেই বিশেষ গুরুত্বের চোখে দেখা হয়। বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও তার ব্যত্যয় হওয়ার কথা নয়। বিশেষ করে গুলশানে জঙ্গি হামলার পর বিষয়টি আরও বেশি প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে। এ ঘটনার পর গুলশানের কূটনৈতিক পল্লী এবং সংলগ্ন এলাকায় নানামুখী নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কিন্তু কূটনৈতিক পল্লীর অন্তর্ভুক্ত মাদানী এভিনিউর অবস্থা তথৈবচ। রাজধানীর অভিজাত এলাকা বারিধারার এ সড়কটি শুরু থেকে অভিজাত্য হারিয়েছে দখলদারদের দাপটে। কূটনৈতিক পল্লীর এ গুরুত্বপূর্ণ সড়কটির হতশ্রী অবস্থা দেখলে বিদেশিদের যে কারও বাংলাদেশ সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা সৃষ্টি হওয়ারই কথা। একশ ফুট ব্যাসার্ধের এ সড়কটির ফুটপাথ, মাঝের আইল্যান্ড এমনকি মূল সড়কের এক বড় অংশ অবৈধ দখলদারদের দখলে। রাস্তার বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে বসানো হয়েছে দোকানপাট। কোথাও কোথাও হকার্স মার্কেট বসিয়ে কায়েম করা হয়েছে দখলদারিত্ব। পুরো সড়কে এক হাজারেরও বেশি দোকানপাট বসেছে অবৈধভাবে। এসব দোকান থেকে প্রতি মাসে আদায় করা হয় প্রায় ৩০ লাখ টাকা চাঁদা। এলাকার মাস্তান নামের সমাজবিরোধীদের আয়ের প্রধান উৎস হয়ে দাঁড়িয়েছে এসব দোকান থেকে আদায়কৃত চাঁদা। মাস্তান নামধারীদের গায়ে ক্ষমতাসীন দলের সাইনবোর্ড থাকায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর সদস্যরা এ ব্যাপারে নিশ্চুপ। তারা চাঁদার একাংশ বখরা হিসেবে পেয়ে নির্বিকার থাকেন এমন অভিযোগও প্রবল। কূটনৈতিক পল্লীর মাদানী এভিনিউয়ের হতশ্রী অবস্থা এ এলাকার নিরাপত্তার জন্য হুমকি সৃষ্টি করছে। বেরাইদসহ পূর্বাচল ও রূপগঞ্জের সঙ্গে সহজ যোগাযোগের জন্য এ রাস্তাটি নির্মাণের পরিকল্পনা নেওয়া হলেও নির্মাণকাজ কয়েক বছর ফেলে রাখায় সড়কটি এখন দখলদারদের উদ্দেশ্য পূরণে ব্যবহৃত হচ্ছে। এটি আসলে সড়ক কিনা তা উপলব্ধি করাও কঠিন। কূটনৈতিক পল্লীর নিরাপত্তার স্বার্থে মাদানী এভিনিউর অপদখল বন্ধে অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। এ ব্যাপারে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনসহ সংশ্লিষ্টরা সক্রিয় হবেন—আমরা এমনটিই দেখতে চাই।

সর্বশেষ খবর