রবিবার, ২ অক্টোবর, ২০১৬ ০০:০০ টা

জিঞ্জিরা ও ধোলাইখাল বিপ্লব

শিল্পায়নে বাংলাদেশকে পথ দেখাতে পারে

ক্ষুদ্র ও হালকা শিল্পে এক নীরব বিপ্লব সংঘটিত হয়েছে বাংলাদেশে। শিল্পায়নে জিঞ্জিরা ও ধোলাইখাল ইতিমধ্যে ব্রান্ড নাম হয়ে উঠেছে ভোক্তাদের কাছে। বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রতিবেদনে এ নীরব বিপ্লবের যে তথ্য-উপাত্ত তুলে ধরা হয়েছে তা আশাজাগানিয়া। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিয়েছে পুরান ঢাকার ধোলাইখাল। এখানে ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় পাঁচ হাজার খুচরা যন্ত্রাংশের কারখানা রয়েছে। লাইনার, পিস্টন, বিয়ারিং থেকে শুরু করে দেশি-বিদেশি মোটর পার্টস, গাড়ির ব্রেকড্রাম, ইঞ্জিন, কার্টিজ, সকেট, জগ, জাম্পার, স্প্রিং, হ্যামার, ম্যাকেল জয়েন্ট, বল জয়েন্টসহ নানা সামগ্রী তৈরি হচ্ছে ধোলাইখালের ছোট্ট ছোট্ট কারখানায়। এখানে তৈরি যন্ত্রাংশ ভারত, পাকিস্তান, নেপাল, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুরসহ বেশ কিছু দেশেও রপ্তানি হচ্ছে। ইতিমধ্যে ধোলাইখাল পরিণত হয়েছে মিনি মোটর ইন্ডাস্ট্রিয়াল জোনে। এখানকার উদ্যোক্তারা বিভিন্ন সরকারি-আধাসরকারি প্রতিষ্ঠানে সাব-কন্ট্রাক্টের মাধ্যমে যন্ত্র ও যন্ত্রাংশ সরবরাহ করে বিদেশনির্ভরতা কমিয়ে এনেছেন। রেলওয়ে, জুট মিলস করপোরেশন, টেক্সটাইলস মিলস করপোরেশন, সিভিল এভিয়েশন, বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশন, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর, বন্দর ও সমুদ্র পরিবহন কর্তৃপক্ষ, অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ, সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ, তিতাস, বাখরাবাদ ও জালালাবাদ গ্যাস কোম্পানি, চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে নিয়মিতভাবে যন্ত্র ও যন্ত্রাংশ সরবরাহ করা হচ্ছে এখান থেকে। ধোলাইখালের পাশাপাশি বাংলাদেশকে ক্ষুদ্র যন্ত্রাংশ তৈরিতে সক্ষমতা এনে দিয়েছে ‘জিঞ্জিরা বিপ্লব’। এই নীরব বিপ্লবের নায়কদের পুঁথিগত জ্ঞানের অভাব থাকলেও কারিগরি জ্ঞান গর্ব করার মতো। তারা তাদের সে জ্ঞান দিয়ে উৎপাদন করছেন নানা ধরনের ক্ষুদ্র যন্ত্রণাংশ। কোটি কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হচ্ছে এসব কারিগরের কৃতিত্বে। তাদের সাফল্য এতটাই মহীরুহ আকার ধারণ করেছে যে, এখন চীন, ভারতের মতো শিল্পোন্নত দেশগুলোর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাংলাদেশি যন্ত্রপাতি বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে।  জিঞ্জিরা ও ধোলাইখালভিত্তিক শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোতে বছরে প্রায় ২৫ হাজার কোটি টাকার পণ্য উৎপাদিত হচ্ছে। দেশকে শিল্পক্ষেত্রে এগিয়ে নিতে হলে ধোলাইখাল ও জিঞ্জিরার অভিজ্ঞ উদ্যোক্তা ও শ্রমিকদের কাজে লাগাতে হবে। শিল্পায়নের বিকাশে স্বল্প সুদে ঋণসহ অন্যান্য সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে।

সর্বশেষ খবর