সোমবার, ৩ অক্টোবর, ২০১৬ ০০:০০ টা

কনটেইনার ও জাহাজ জট

ধর্মঘটের প্রবণতা এড়াতে হবে

চট্টগ্রাম বন্দরে প্রাইমমুভার ও ট্রেইলার ধর্মঘটের অবসান হলেও কনটেইনার ও জাহাজ জটের ধকল রয়েই গেছে। এ ধকল কাটাতে আরও বেশ কয়েক দিন সময় লাগবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। গত শনিবার দেশের এই বৃহত্তম সামুদ্রিক বন্দরে ৪০ হাজারেরও বেশি কনটেইনারের জট ছিল। বহির্নোঙরে ছিল ১৬টি কনটেইনার জাহাজ। কয়েক দিনের ধর্মঘটে চট্টগ্রাম বন্দরে আমদানিকৃত পণ্যের বিপুল পরিমাণ কনটেইনার আটকা পড়ে। পণ্যবাহী এসব কনটেইনারের মধ্যে গার্মেন্টসহ বিভিন্ন শিল্পকারখানার কাঁচামাল ছাড়াও বিপুল পরিমাণ পচনশীল খাদ্যপণ্যও রয়েছে। প্রাইমমুভার ও ট্রেইলার ধর্মঘট অবসানের পর শুক্রবার দুপুর থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় ৩ হাজার কনটেইনার বন্দর থেকে ডেলিভারি নিলেও ওই সময়ে প্রায় সমসংখ্যক কনটেইনার বন্দরে খালাস হওয়ায় জটের খুব একটা হেরফের হয়নি। বন্দর কর্তৃপক্ষ কনটেইনার জট নিরসনের চেষ্টা চালাচ্ছেন এবং তাদের আশা কয়েক দিনের মধ্যেই বন্দরে স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরে আসবে। কথায় কথায় ধর্মঘটে নামা বন্দর এবং ব্যবসা-বাণিজ্য সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংগঠনের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। কিছুদিন আগে লাইটার জাহাজ ধর্মঘটে দেশের আমদানি-রপ্তানিতে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছিল। প্রাইমমুভার ও ট্রেইলার ধর্মঘটে চট্টগ্রাম বন্দরে যে কনটেইনার ও জাহাজ জট সৃষ্টি হয়েছে তাতে ব্যবসায়ীদের বেশি ভাড়া গুনতে হবে। পাঁচ দিনের ধর্মঘট শেষ পর্যন্ত শুক্রবার প্রত্যাহার হলেও এর ফলে যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা প্রকারান্তরে ভোক্তাদের পকেট থেকেই আদায় করা হবে। দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য নির্বিঘ্ন রাখতে ধর্মঘট বিলাসিতার অবসান ঘটাতে হবে। যেসব কারণে ধর্মঘটের পথ বেছে নেওয়া হয় তা নিরসনে আগেভাগে উদ্যোগ নিতে হবে। প্রাইমমুভার ও ট্রেইলারে অতিরিক্ত পণ্য বহনের অজুহাতে সড়ক বিভাগের বাধা সৃষ্টির প্রতিবাদে ধর্মঘট ডাকা হয়েছিল। অতিরিক্ত পণ্য বহন যে সড়কের ওপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি করে এ বিষয়ে দ্বিমত প্রকাশের অবকাশ নেই। যৌক্তিক কারণ ছাড়া নিছক হয়রানির জন্য প্রাইমমুভার ও ট্রেইলার চলাচলে বাধা সৃষ্টি যেমন বাঞ্ছনীয় নয়, তেমন যানবাহনে মাত্রাতিরিক্ত পণ্য বহনও কাম্য হওয়া উচিত নয়। এ বিষয়ে সব পক্ষ শুভবুদ্ধির পরিচয় দিলে অর্থাৎ নিয়ম মেনে চলার চেষ্টা করলে অনাকাঙ্ক্ষিত সংকট এড়ানো সম্ভব। সে দিকেই সবার দৃষ্টি থাকা উচিত।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর