প্রশ্নপত্র ফাঁস এক জাতীয় লজ্জার নাম। প্রতি বছরই এ লজ্জায় পড়তে হচ্ছে জাতিকে। প্রশ্নপত্র ফাঁসের কারণে মেধাবী না হয়েও উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভর্তি পরীক্ষায় অনেক সময় ঠাঁই পাচ্ছে নকলবাজরা। এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫-প্রাপ্তির লড়াইয়ে প্রশ্নপত্র ফাঁসের সুবাদে অযোগ্যরাও অবলীলায় উতরে যাচ্ছে, যা স্বাভাবিকভাবে হওয়া সম্ভব নয়। চাকরির ক্ষেত্রেও অযোগ্যরা যোগ্য হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে প্রশ্নপত্র ফাঁসের বদৌলতে। বাংলাদেশ প্রতিদিনের ফের সক্রিয় ‘প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্র’ শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশের সরকারি মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজগুলোয় এমবিবিএস শিক্ষার্থী ভর্তিকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ অনলাইনে ফের সক্রিয় হয়ে উঠেছে ‘প্রশ্ন ফাঁসকারী চক্র’। ভর্তিচ্ছু কোমলমতি শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের জিম্মি করে এসব চক্রের সদস্যরা মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। প্রশ্নফাঁস বন্ধে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ এবং গত ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে মেডিকেল কোচিং বন্ধ করলেও প্রতারক চক্র ফেসবুক, টুইটারসহ অন্যান্য যোগাযোগমাধ্যমে ‘সরব প্রচারণা’ চালিয়ে যাচ্ছে। তারা টাকার বিনিময়ে মেডিকেল অ্যাডমিশনসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে। বিনিময়ে অনলাইন মানি ট্রান্সফার ও বিকাশের মাধ্যমে হাতিয়ে নিচ্ছে মোটা অঙ্কের টাকা। কখনো কখনো প্রশ্ন ফাঁসের কথা বলে ভর্তিচ্ছুদের মূল মার্কশিট ও সনদপত্র আটকে রাখছে। পরে তাদের জিম্মি করে টাকা হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে। প্রতারক চক্র বিভিন্ন ফেসবুক আইডি থেকে মোবাইল ফোন নম্বর পোস্ট করে তাদের সঙ্গে যোগাযোগের আহ্বান জানাচ্ছে। বলা হচ্ছে পরীক্ষার আগের দিন ফেসবুকেই মেডিকেলের প্রশ্ন সরবরাহ করা হবে। সরবরাহকৃত প্রশ্ন পরীক্ষার সময় দেওয়া প্রশ্নের সঙ্গে মিললেই দিতে হবে ৪ লাখ টাকা। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নফাঁস সম্পর্কে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করলেও প্রশ্নপত্র ফাঁসের প্রস্তাব যারা দিচ্ছে তাদের কেন পাকড়াও করা হচ্ছে না তা একটি প্রশ্নের বিষয়। প্রতারক চক্র তাদের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য যে মোবাইল ফোনের নম্বর ফেসবুকে পোস্ট করেছে, সে নম্বর কার নামে নিবন্ধন করা তা অনায়াসেই জানা সম্ভব। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এ ব্যাপারে সক্রিয় হবে এবং অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা হবে আমরা এমনটিই দেখতে চাই।